সুকান্তর নেতৃত্বে এসপি অফিস ঘেরাও অভিযান শুরু হতেই রণক্ষেত্র বসিরহাট

বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের নেতৃত্বে বসিরহাট এসপি অফিস অভিযান ঘিরে রণক্ষেত্র পরিস্থিতি বসিরহাটে।মিছিল এসপি অফিসের সামনে পৌঁছতেই পুলিশি বাধার মুখে পড়তে হয় তাঁদের। প্রথম ব্যারিকেড ভেঙে ফেলতেই বিজেপি-র কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তি শুরু হয়। এরপর কিছুটা এগিয়ে পুলিশের দ্বিতীয় ব্যারিকেডও ভেঙে ফেলেন তাঁরা। এদিকে দ্বিতীয় ব্যারিকেড ভাঙার পর এগিয়ে আসেন মহিলা বিজেপি কর্মীরা। তাঁদের আটকায় মহিলা পুলিশ। কার্যত টেনে হিঁচড়ে টেনে নিয়ে যায় মহিলা পুলিশ। অপরদিকে, পুলিশের লাঠি কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন বিজেপি কর্মীরা। রাজ্য পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়ান সুকান্ত। এদিকে আবার  পুলিশের দিকে ইটের টুকরো ছুড়ে মারার অভিযোগ ওঠে বিজেপি কর্মীদের বিরুদ্ধে। পাল্টা পুলিশও লাঠিপেটা শুরু করে। ফাটানো হয় কাঁদানে গ্যাসের সেল। এ দিকে, দলের সমর্থকরা মার খেতেই ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন সুকান্ত জানান, ‘আমার কর্মীদের যে ভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার জন্য এসপি অফিসের সামনে ধরনায় বসব।’

প্রসঙ্গত, বসিরহাট পুলিশ সুপারের অফিস ঘেরাও কর্মসূচিতে পৌঁছতে প্রথম থেকেই কৌশলী পন্থা অবলম্বন করেন বালুরঘাটের বিজেপি সাংসদ সুকান্ত মজুমদার। তবে এদিন রাজপথ নয়, বসিরহাট পৌঁছতে এবার বিজেপির নেতাদের ভরসা রাখতে দেখা গেল রেলপথকেই। নিউটাউনের বাসভবন থেকে হাসনাবাদ লোকালে বসিরহাটের পথে রওনা দেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। এরপর বসিরহাট নেমে বাইকে চড়েন সুকান্ত। এদিকে আবার সন্দেশখালির পাশাপাশি ১৪৪ ধারা জারি রয়েছে বসিরহাটেও। সেই কারণে কোনও রাজনৈতিক দলকেই এলাকায় প্রবেশ করতে দিচ্ছে না স্থানীয় পুলিশ-প্রশাসন।

প্রসঙ্গত, বাম থেকে বিজেপি। এখনও অবধি সন্দেশখালিতে পৌঁছতে পারেনি কেউনি। বামেরা পুলিশি ব্যারিকেড ভেঙে নৌকা করে পৌঁছেতে গেলে তাদের আটকে ছিল পুলিশ। আর সোমবার তো বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী সহ প্রতিনিধি দলকে ফিরতে হয় মাঝ রাস্তা থেকে। তাই এবার নয়া পন্থা অবলম্বন করলেন বিজেপি-র রাজ্যসভাপতি সুকান্ত মজুমদার। ট্রেনে চড়েই বসিরহাটের উদ্দেশে রওনা দেন তিনি।

এদিকে সূত্রে খবর, সুকান্ত মজুমদার নিজের নিউটাউনের বাসভবন থেকে বেরিয়ে নয়া কৌশল অবলম্বন করে হৃদয়পুর স্টেশনে পৌঁছান মঙ্গলবার সকালে। এই প্রসঙ্গে সুকান্ত মজুমদার এও বলেন, ‘রাস্তায় পুলিশের পক্ষ থেকে বিভিন্ন জায়গায় ব্যারিকেড করা হয়েছে, আমরা গেলে সেখানে অশান্তি হবে সাধারণ মানুষের কষ্ট হবে। তাই সাধারণ মানুষের কষ্ট যাতে না হয় সেই কারণেই আমরা দলীয় কর্মী নেতাদের নিয়ে ট্রেনে করে বসিরহাট পৌঁছব।’ একইসঙ্গে তাঁর সংযোজন, ‘আমি কথা দিয়েছিলাম, বসিরহাট যাব। কথা রাখব।’  এদিকে সূত্রে খবর, হৃদয়পুর স্টেশনের দু’নম্বর প্ল্যাটফর্মে ট্রেন ধরার অপেক্ষায় এদিন দেখা যায় বিজেপি নেতা সুকান্ত মজুমদারকে। তাঁকে রাস্তায় আটকে দেওয়া হতে পারে, এই আশঙ্কা থেকেই হৃদয়পুর স্টেশন পৌঁছন সুকান্ত। এরপর হৃদয়পুর থেকে ট্রেনে চড়েন তিনি। লোকাল ট্রেনের ভিতরে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে বসিরহাটের পথে সুকান্ত। ট্রেনের ভিতর দাঁড়িয়ে বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি বললেন, ‘পুলিশ রাস্তায় আটকানোর সমস্ত রকম ব্যবস্থা করেছিল। আমাদের কর্মীরা খবর দিয়েছে দু’টো রাস্তাই আটকে রেখেছে। আমি কথা দিয়েছিলাম যে ভাবে হোক বসিরহাট পৌঁছবই।’ এরপর বাইকে চড়ে এসপি অফিসের সামনে যেতে চান বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।

এদিকে, বসিরহাটেও প্রশাসনের তরফে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। বসিরহাট জেলা পুলিশের অফিস চত্বর অর্থাৎ সংগ্রামপুর এলাকার ৫০০ মিটারের মধ্যে এই ১৪৪ ধারা বলবৎ থাকবে।  সকাল থেকে এলাকায় মাইকিং করা হয়। অবৈধ জমায়েত করলে পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

1 × 4 =