বাঙালির দুর্গাপুজোর সঙ্গে পরতে পরতে জড়িয়ে ছিল বাটা কোম্পানির কথা। বিংশ শতাব্দীর ছয় থেকে সাতের দশকেও পুজো মানেই নতুন জুতো। এখনও মনে পড়ে মহালয়ার দিন দু’পাতা জুড়ে বের হতো বাটার জুতোর বিজ্ঞাপন। সেখানে টিক মেরে রাখতাম আমরা। কারণ, ‘পুজোয় চাই নতুন জুতো’। আর এই জুতো কিনতে পুজো না আসা পর্যন্ত বিরাট লাইন পড়তো বাটার দোকানে। সেই ছবিটা গত কয়েক বছর ধরে একটু হলেও ফিকে হয়েছে এটা মানতেই হবে। কারণ, কলকাতায় বেশ কয়েকটি জুতো কোম্পানি তাদের ব্যবসা শুরু করতে বাটাকে প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে পড়তে হয়। তবে বাটা কোম্পানি তাদের হৃত গৌরব ফিরিয়ে আনতে এবার তৎপর। এটাও ঠিক, ‘বাটা’ নামের একটা ‘ব্র্যাণ্ড–ভ্যালু’ এখনও মানুষের মনে এখনও অক্ষত। আর এই বাটা কোম্পানি তো আজকের নয়। এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে কত ইতিহাস, নানা উত্থান–পতনের কাহিনি। যার সঙ্গে জড়িয়ে মহেশতলা পৌরসভার অন্তর্গত ‘বাটানগর’-এরনামও।
ইতিহাস বলছে, ১৮৯৪ সালের ২৪শে অগাস্ট তৎকালীন চেকোস্লোভাকিয়ার ‘Ziln’ নামের ছোট্ট একটি গ্রামে Sir Tomas Bata, তাঁর ভাই Antonin Bata এবং বোন Anna Bata-কে নিয়ে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ‘The T.& A. Bata Shoe Company’। ১৯৩২ সালের মধ্যে এই কোম্পানি বিশ্বের মোট ১৪টি দেশে শাখা–প্রশাখা বিস্তার করে ফেলে। যদিও এই ১৯৩২ সালেই এক বিমান দুর্ঘটনায় Sir Tomas Bata-র জীবনাবসান হয়।
এদিকে এরই মাঝে ১৯২৮ সালে আমাদের দেশে ‘বাটা কোম্পানি’র প্রথম পদার্পণ ঘটে। এদিকে Wikipedia-র অবশ্য ভিন্নমত। তারা বলছে, বাটা প্রথম আমাদের ভারতে পা রাখে ১৯৩০–এর শেষদিকে। যাইহোক, ১৯৩১ বা ৩২ সাল নাগাদ ‘বাটা শ্যু কোম্পানি প্রাঃ লিঃ’ ভারতের মধ্যে প্রথম তাদের কারখানা চালু করে কলকাতা থেকে মাইল দশেক দূরে হুগলি জেলার কোন্নগর অঞ্চলে। একটা পরিতক্ত কারখানা আর তার সংলগ্ন খানিকটা জমি বছর পাঁচেকের জন্য লিজ নেওয়া হয়। তখন বাজারে চিনা এবং জাপানিদের তৈরি জুতোর খুব রমরমা। তবে এই সময় আমাদের দেশে এক বিরাট সংখ্যক মানুষ খালি পায়ে চলাচল করতেন। যার ফলে ধনুষ্টঙ্কার হয়ে মৃত্যু হত অনেকেরই। তাঁদের কথা মাথায় রেখে চামড়া ছাড়াও অল্প দামের কাপড় অর্থাৎ ক্যাম্বিস ও রবারের জুতো প্রস্তুত করা শুরু করে এই কারখানা। বাটার তৈরি এই প্লিমসল জুতো ছিল যেমন সস্তা তেমনই টেকসই। ‘মেড ইন ইন্ডিয়া’ লেখা বাটার সেই জুতো জাপানি জুতোকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেয়। আগে জুতার কোন নির্দিষ্ট দাম ছিল না। আমদানি শুল্কের উপর ভিত্তি করে জুতার দাম বাড়তো বা কমত। এখন বাটার জুতোতে মাপ ও দাম নির্দিষ্ট করে দেওয়া হল। ধীরে ধীরে বাটার তৈরি জুতোর চাহিদা আর তাদের কদর বাড়তে শুরু করে।এই জয়যাত্রায় শামিল হন অনেক মানুষ।এক বছরের মধ্যেই এখানকার কর্মী সংখ্যা গিয়ে দাঁড়ায় এক হাজারে।এর মধ্যে কোন্নগরের বাসিন্দা ছিলেন তিনশো জন।এর প্রভাব পড়ে স্থানীয় অর্থনীতিতে।দোকান বাজার ক্রমাগত বড় হতে থাকে।পাশাপাশি অন্য ব্যবসাগুলোরও শ্রীবৃদ্ধি ঘটে।দরিদ্র পরিবারগুলি সচ্ছলতার মুখ দেখ শুরু করে।
এদিকে বাটার এই সাফল্যে ইর্ষান্বিত হয়ে ওঠে ভারতীয় ডিস্ট্রিবিউটররা যারা এতদিন জাপানি জুতো আমদানি করে ব্যবসা করছিলেন। তারা নানা পন্থা অবলম্বন করে বাটার বিরুদ্ধে প্রচার শুরু করলো। সর্বপ্রথমে রটিয়ে দিল টমাস বাটার মৃত্যুর পর বাটা কোম্পানি একদম দেউলিয়া হয়ে গেছে। তারপর মানুষের ভাবাবেগকে উস্কে দিয়ে প্রচার চালানো হলো বাটা দেশের গরীব চর্মকারদের ভাত মারছে। বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় বড় বড় আকারে এসব ছাপা হতে লাগলো। পরাধীন ভারতবাসী পক্ষে এই সব খবরের সত্যতা তুল্যমূল্য বিচার করা সম্ভব ছিল না। যদিও এতকিছু করেও জাপানি জুতো শেষ রক্ষা করতে পারেনি। ১৯৪১ সালে পার্ল হারবার আক্রমণের পর এদেশে জাপানি শিপমেন্ট আশা সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। ফলে ভারতের বাজারে জাপানি জুতো নিশ্চিহ্ন হয়ে গেল। এরপর যে ঘটনাটি ঘটলো তা প্রতিরোধ করা একদমই সম্ভব হলো না। কোন্নগরে সে সময় ছিল ব্রাহ্মণ্যবাদী সমাজের কর্তৃত্ব। অন্যান্য শ্রেণির মানুষ এদের কর্তৃত্ব সর্বাংশে মেনে নিত। ব্রাহ্মণ্যবাদীরা জুতো প্রস্তুতে চামড়ার ব্যবহার মেনে নিতে পারলেন না। তারা বিক্ষোভ জানালো। সাধারণ মানুষের কোন ক্ষমতাই ছিল না তাদের বিরুদ্ধাচারণ করার। এই বিদ্বেষ ও বিক্ষোভ এক সময় প্রবল আকার ধারণ করে। ধর্মভীরু গ্রামবাসীরাও মুখে কুলুপ আঁটলেন। এতো প্রতিবন্ধকতাতেও বাটা শ্যু কোম্পানি তাদের পথচলা থামায়নি। কারণ, এগিয়ে চলাই ছিল তাদের জীবনের মূলমন্ত্র। ফলে উৎপাদন বন্ধ হয়নি। এদিকে ব্যবসা বাড়ার সাথে সাথে স্থান সংকুলান হচ্ছিল না। কিন্তু লিজ নেওয়া জায়গাটির পরিসর খুব বেশি না হওয়ায় কলকাতার ১২ মাইল দক্ষিণে ‘মীরপুর’ বলে একটা অঞ্চলে কারখানা তুলে আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এই মীরপুর অঞ্চলে তখন একটা অখ্যাত গণ্ডগ্রাম ছিল ‘নুঙ্গি’। যেখানে বার্ণ কোম্পানির ইটখোলা আর প্রচুর আখের খেত ছিল বলে শোনা যায়। এদিকে ততদিনে শিয়ালদা–বজবজ শাখার ট্রেন চলাচল শুরু হয়ে গেছে। এই প্রসঙ্গে বলে রাখা ভাল শিয়ালদা–বজবজ শাখার প্রথম রেল চলে ১৮৯০ সালের ১লা এপ্রিল। নুঙ্গি রেলস্টেশনের পাশ দিয়ে সে আমলে এক প্রসিদ্ধ রাস্তা ছিল ‘কসিমুদ্দিন রোড’। শোনা যায়, এই সমগ্র অঞ্চলটি জমিদার চট্টোপাধ্যায়–বন্দ্যোপাধ্যায়দের আওতার মধ্যে ছিল। এই বন্দ্যোপাধ্যায় বংশের অন্যতম জমিদার ছিলেন রামরাম বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর অন্যতম এক প্রিয় সহকারী ছিলেন ‘মহেশ’। এই মহেশের উপর জমিদার এতটাই প্রসন্ন ছিলেন যে তাঁর জমিদারির অন্তর্ভূক্ত ‘মহাদেব নগর’ মৌজার নামকরণ করেছিলেন ‘মহেশতলা’।
এরপর কলকাতা পোর্ট কমিশনের কাছ থেকে ১৯৩৪ সালে নুঙ্গির সেই বিশাল জঙ্গলাকীর্ণ পরিত্যক্ত প্রান্তর কিনে ২৮ শে অক্টোবর বাটানগরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপিত হয়। এর সঙ্গে সেদিন লেখা হয়ে গেল অন্য এক ইতিহাস, বাটা শ্যু কোম্পানির হার না মানার কাহিনী। ১৯৩৫ সালে বাঙ্গালিদের শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজোর ঠিক আগে কোন্নগরে বাটা তাদের কর্মীদের নিয়ে এক বিশাল কনফারেন্স আয়োজন করে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করে দেওয়া হল বাটানগরের কথা। আর পুজোর ছুটির মধ্যে সপ্তমী ও অষ্টমীর দিন দু’লক্ষ জুতোসহ যন্ত্রপাতি নিয়ে চলে যাওয়া হল বাটানগরে। এরপর সময়ের সাথে পা মিলিয়ে ধীরে ধীরে প্রসার লাভ করে বাটানগর শিল্পাঞ্চল।একে কেন্দ্র করে সমৃদ্ধ হয় আশপাশের জনজীবন।প্রয়োজনের তাগিদে গড়ে ওঠে বাটার নিজস্ব হাসপাতাল, স্কুল, খেলার মাঠ, স্টেডিয়াম, সিনেমা হল, ক্লাব ইত্যাদি। বাটানগরে একটা খুব পুরানো শিবমন্দিরও আছে। কথিত আছে, এই মন্দিরের শিবকে নাকি বলা হয় তারকেশ্বরের তারকনাথের বড়ভাই।
প্রশাসনিক রেকর্ড অনুযারী, একটা সময় পর্যন্ত ‘বাটানগর’ বজবজ থানারই এলাকাভুক্ত ছিল। ১৯৪১ সালের ১৫–এপ্রিল আলাদা করে মহেশতলা থানার অন্তর্ভুক্ত করা হয়। শোনা যায়, ১৯৪৩ সাল নাগাদ এক দুর্ভিক্ষ হয়েছিল, যে সময় ‘বাটা শ্যু কোম্পানি’ তার কর্মচারিদের জন্য আলাদাভাবে রেশন দেওয়ার ব্যবস্থাও শুরু করে। এরপর স্বাধীনোত্তর পর্বে ১৯৪৭–৪৮ সালের পর কোম্পানি’র কিছু উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন ঘটে। দেশভাগের পর পূর্ব পাকিস্তান থেকে ভিটে–মাটি হারিয়ে অনেক মানুষ এই অঞ্চলে চলে আসেন। অনেকেই এই কারখানায় যোগ দেন , আর একে ঘিরে গড়ে ওঠে বহু মানুষের জীবিকা। ব্যাপক উন্নতি হয় এলাকাটির। মহেশতলা অঞ্চলের আর্থ–সামাজিক উন্নতির পিছনে বাটা কোম্পানির অবদান সর্বজনবিদিত। ১৯৭৩ সালে ভারতীয় ‘বাটা শ্যু কোম্পানি প্রাইভেট লিমিটেড’-এর নতুন নাম হয় ‘বাটা ইণ্ডিয়া লিমিটেড’।
এই প্রসঙ্গে আরও একটা কথা না বললেই নয়। ছোটবেলায় আমরা সকলেই বোধহয় ‘জুতো আবিষ্কার’ কবিতাটা পড়ে এসেছি। সেই অনবদ্য কবিতার যিনি স্রষ্টা সেই কবিগুরু ‘রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর’ স্বয়ং এসেছিলেন এই বাটানগর কারখানা পরিদর্শনে। দিনটা ছিল ১৯৩৯ সালের ১০ই নভেম্বর। গুরুদেব তখন প্রায় অশীতিপর এবং নিতান্ত অসুস্থও। তথাপি তদানীন্তন চেক–প্রেসিডেন্ট Edvard Benes-এর সৌহার্দ্যপূর্ণ অনুরোধ রাখতে হুইল চেয়ারে বসে প্রায় ২ঘণ্টা ধরে তিনি সমগ্র বাটা কারখানার কাজকর্ম ঘুরে দেখেন এবং পরিদর্শকের খাতায় লিপিবদ্ধ করে যান তাঁর মূল্যবান মতামত।বিশ্বকবির মত মানুষের পদধূলিধন্য বাটানগরের চেহারা এখন আর আগের মত নেই। আগের বাটানগর যারা দেখেছেন, এখনকার বাটার সাথে তারা ঠিক মেলাতে পারেন না। পুরানো সিনেমা হলটা ছিল যা কয়েক বছর হ’ল উঠে গেছে। বন্ধ হয়েছে বহু পত্র–পত্রিকা, নাট্যগোষ্ঠী, ক্লাব। তবু বাটা নগরের প্রাণ ‘বাটা ইণ্ডিয়া লিমিটেড’ এখনও জীবিত আছে। আছে পুরানো স্কুল হাসপাতাল।
এবার বাটা কোম্পানির এই ঐতিহ্যকে মাথায় রেখে এক বড় পদক্ষেপ নিতে দেখা গেল জুতো প্রস্তুতকারক এই কোম্পানিকে। বাটানগরের কারখানায় লগ্নি করা হল ৩০ কোটি টাকা। আর এই লগ্নি ফের প্রমাণ করছে কোম্পানির উৎপাদন উৎকর্ষ এবং আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার প্রতি তাদের দায়বদ্ধতা। এই প্রসঙ্গে সংস্থার তরফ থেকে এও জানানো হয়েছে,
এই লগ্নির কেন্দ্রে আছে ফ্লোটজ এবং বাটা ইন্ডাস্ট্রিয়াল চটি ও জুতো তৈরি করার জন্য অত্যাধুনিক PUDIP (পলিইউরিথিন ডিরেক্ট ইনজেকশন প্রোসেস) এবং IM EVA মেশিন বসানোর মতো ঘটনা।এই পরবর্তী প্রজন্মের যন্ত্রগুলোতে রয়েছে রোবোটিক স্প্রেয়িং, স্বয়ংক্রিয় রাফনিং আর্মস এবং মোল্ড হ্যান্ডলিং প্রোসেস যা প্রোডাক্টের ধারাবাহিকতা, যথার্থতা এবং উৎপাদন দক্ষতার মান অনেকটাই বাড়িয়ে দেয়।
এই প্রসঙ্গে বাটা ইন্ডিয়া লিমিটেডের হেড – সাপ্লাই চেন ম্যানেজমেন্ট অঞ্জন কুণ্ডু জানান, ‘এই লগ্নি, উৎপাদন প্রক্রিয়ার আধুনিকীকরণের প্রতি এবং গুণমানের দিক থেকে শীর্ষে থাকার প্রতি আমাদের গভীর দায়বদ্ধতার প্রমাণ।’ এর পাশাপাশি তাঁর সংযোজন, ‘আমাদের রূপান্তরের যাত্রার অঙ্গ হিসাবে বাটানগরের গৌরব ফিরিয়ে আনতে আমরা বদ্ধপরিকর। গুণমান, উদ্ভাবন ও ক্রেতা অভিজ্ঞতার প্রতি দায়বদ্ধতা ওপর রয়েছে আমাদের তীক্ষ্ন নজরও। আর সেই কারণেই বাটানগরে উন্নত মেশিনে লগ্নি করে আমরা এটা নিশ্চিত করছি যে বাটা ভারতে চটি ও জুতো তৈরির মাপকাঠি হিসাবে নেতৃত্ব দানের জায়গাতেই থাকবে, নিজেকে বদলাতে থাকবে এবং মানুষের সেবা করতে থাকবে। এই সম্প্রসারণ কেবল আমাদের কাজকর্মকে শক্তিশালী করল তা নয়, ইন্ডাস্ট্রির জন্যে নতুন মাপকাঠিও বেঁধে দিল। আর এই কারখানা স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা প্রোটোকলের সর্বোচ্চ মান অনুযায়ী চলে, যাতে সার্বিক সেফটি ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম অনুযায়ী সমস্ত কর্মচারির জন্য সুরক্ষিত কাজের পরিবেশ নিশ্চিত করা যায়। বাটানগরের কারখানা কেবল পশ্চিমবঙ্গ নয়, গোটা ভারতের জন্যই শিল্পের রূপান্তরের এক প্রতীক।’
একইসঙ্গে তিনি এও জানান, গত এক বছরে প্রায় ১৩০ খানা নতুন স্টোর খোলা হয়েছে, যার ৫০ শতাংশের বেশি ছোট শহরে। এগুলোর মাধ্যমে ‘ভারত’-এ আন্তর্জাতিক স্টাইল ও স্বাচ্ছন্দ্যের প্রযুক্তি নিয়ে আসা হচ্ছে। ৫০০+ স্টোর সমেত বাটা ইন্ডিয়া তার ফ্র্যাঞ্চাইজ নেটওয়ার্ককেও দ্রুত সম্প্রসারিত করছে ছোট শহর এবং মহানগরগুলো জুড়ে, যাতে ফ্যাশন সকলের নাগালে আসে আর অনেককে উদ্যোগী হওয়ার সুযোগ দেওয়া যায়। বাটা তার বাটা চিলড্রেন্স প্রোগ্রামের মাধ্যমে বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়ার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি ভারত জুড়ে শিক্ষা, পরামর্শ এবং চটি বা জুতো পিছিয়ে পড়া শিশুদের নাগালের মধ্যে এনে তাদের ক্ষমতায়ন করা হচ্ছে। এই কাজ অন্তর্ভুক্তিমূলক বৃদ্ধি ও ইতিবাচক সামাজিক প্রভাবের প্রতি ব্র্যান্ডের চলতি দায়বদ্ধতার চিহ্ন। এরই মধ্যে দিয়ে গুণমান, সুস্থায়িতা ও উদ্ভাবনের উপর তীক্ষ্ণ নজর সমেত বাটা ইন্ডিয়া ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত হেরিটেজ ব্র্যান্ড বলতে যা বোঝায় তার সংজ্ঞা বদলে দিচ্ছে। ভারত থেকে ‘Shoe the World’ করার জন্য দৃপ্ত পদক্ষেপে এগিয়ে চলেছে।’
পাশাপাশি বাটার ইন্ডিয়া লিমিটেডের পাটানানগর ফ্যাক্টরির ম্যানুফ্যাকচারিং বিভাগের অধিকর্তা কুহরণ মুখোপাধ্যায় জানাতে ভোলেননি যে, দামের সঙ্গে বাটা ইন্ডিয়ার তাদের মানের কোনও রকমের বোঝাপড়া করতে রাজি নয়। বাটা ইন্ডিয়া দীর্ঘকাল ধরে তাদের মানের যে উচ্চতা ধরে রেখেছে তা একই জায়গায় রাখতে বদ্ধপরিকর। কুহরণবাবুর কথার মর্মার্থ করলে দাঁড়ায়, ‘সস্তার তিন অবস্থা’-র পথে কোনওভাবেই হাঁটতে চায় না বাটা ইন্ডিয়া লিমিটেড।