ফের আদালতে তিরস্কারের মুখে পড়তে দেখা গেল পুরুলিয়ার ঝালদার-১ ব্লকের বিডিও-কে। ২০২৩-এর পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিডিওদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল আগেও। আবারও সেই একই পরিস্থিতি। প্রার্থী ছাড়াই গণনা, পুনর্গণনায় অতিরিক্ত ব্যালট উঠে আসা নিয়ে প্রশ্ন তোলে আদালত। আর এই প্রসঙ্গেই বিডিও-কে বিচারপতি অমৃতা সিনহার প্রশ্ন, ‘ওখানে কি ছেলেখেলা চলছিল?’ প্রসঙ্গত, পঞ্চায়েত ভোটের মামলায় এদিন আদালতে রিপোর্ট জমা দেন পুরুলিয়ার ঝালদা-১ ব্লকের বিডিও। পঞ্চায়েত প্রার্থী তৃণমূলের রাজেশ মণ্ডলের কাছে হেরে যান কংগ্রেস প্রার্থী তেজেন্দ্রনাথ মাহাতো। এরপরই একাধিক প্রশ্ন তুলে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেন কংগ্রেস প্রার্থী।
মামলাকারীর বক্তব্য, প্রথমে ১৬২টা ব্যালট পেপার বাতিল হয়েছিল। ওখানে পুনর্গণনা হয়। সেই সময় ১৬২র বদলে ৩১৯টি ব্যালট পেপার বাতিল হয়। মামলাকারী অভিযোগ করেন, প্রার্থীর উপস্থিতি ছাড়াই গণনা করেছেন রিটার্নিং অফিসার। এরপরই আদালত জানতে চায়, এমন কেন করা হয়েছে তা নিয়ে। একইসঙ্গে বিচারপতি সিনহার প্রশ্ন, হঠাৎ করে পুনর্গণনায় অতিরিক্ত ৩১৯ ব্যালট-ই বাতিল করা হয় কেন সেই প্রসঙ্গেও।এরই রেশ ধরে বিচারপতি সিনহা ভর্ৎসনার সুরে বলেন,‘এটা কি খেলা চলছিল? ছেলেখেলা নাকি? বিডিও চোখ বন্ধ রেখেছিলেন নাকি?’ একইসঙ্গে বিডিওকে প্রশ্ন করেন, নতুন করে গণনার সময় তিনি কোথা থেকে পেলেন? কার নির্দেশে তড়িঘড়ি এই পুনর্গণনা হল? এদিকে আদালত সূত্রের খবর, বিডিওর বক্তব্য ছিল, কিছু একটা ভুল হয়ে থাকতে পারে প্রথমে। বিডিও-র এই উত্তর শুনে বিরক্তি প্রকাশ করে বিচারপতি অমৃতা সিনহার ফের প্রশ্ন, ‘বারবার ভুল হলে নির্বাচনের কী দরকার?’ এ নিয়ে কমিশনের কাছেও রিপোর্ট তলব করে আদালত।
এদিকে মামলাকারীর অভিযোগ, শুধু প্রার্থীর উপস্থিতি ছাড়াই গণনা নয়, সহকারী রিটার্নিং অফিসারও গণনাকেন্দ্রে ছিলেন না। সকালে পুনর্গণনার সময় দু’জন বাইরের লোককে নিয়ে গণনা শুরু করেন বিডিও। শুরুতে ১২৭টি ব্যালট বাতিল হয়। প্রিসাইডিং অফিসারের সই না থাকার জন্য তা বাতিল হয়। পরে তা বেড়ে ৩১৯ হয়। ফলে প্রথমে কংগ্রেস প্রার্থী জয়ী হলেও পরে হেরে যান তিনি। এদিনের শুনানির পর বিচারপতি সিনহা জানান, এখানকার যাবতীয় ফুটেজ রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে থাকবে। ৭ অগাস্টের পর ফের এই মামলার শুনানি হবে।