কলকাতা যেমন রসগোল্লা, জয়নগরের মোয়া, জনাই এর মনোহরা, শক্তিগড়ের ল্যাংচা তেমনভাবেই বিখ্যাত বাঁকুড়ার বেলিয়াতোড়ের মেচা। আর সেই মেচা-ই সম্প্রতিকালে ইন্ডিজেনাস শিল্পকর্মের হিসাবে জিওগ্রাফিক্যাল আইডেন্টিফিকেশন ট্যাগ পেতে চলেছে। তবে একটি ‘যদি’ এখনও লেগে আছে। এখানে বলে রাখা শ্রেয়, ওয়েস্ট বেঙ্গল ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব জুরিডিক্যাল সায়েন্সে জিআই তকমার আবেদন জানিয়েছেন বেলিয়াতোড় এর মেচা ব্যবসায়ীরা। সেই আবেদনের ভিত্তিতে শুরু হয় মাপকাঠিতে মেচাকে রেখে চুলচেরা খুঁটিনাটি পুঙ্খানুপুঙ্খ নজরদারি। এমন দুটি ধাপ ডিঙিয়ে এই সন্দেশ এখন তৃতীয় তথা শেষ ধাপে। তৃতীয় ধাপ পাশ করলেই মিলবে জি আই স্বীকৃতি।
বাঁকুড়া দুর্গাপুর রাজ্য সড়কের পাশে ছোট্ট জনপদ বেলিয়াতোড়। বেলিয়াতোড় এই জন্ম হয়েছিল জগত বিখ্যাত ভাস্কর্য শিল্পী যামিনী রায়ের। এছাড়াও বেলিয়াতোড় একটা অন্য পরিচয় রয়েছে, তা তা হল মেচা সন্দেশের জন্মভূমি। এখানেই প্রায় কুড়িটি পরিবার এই মেচা সন্দেশ তৈরির কাজে ব্যস্ত থাকেন সারা বছর। এলাকার মেচামহল, আসল মেচা, আদি মেচা, নব মেচা মহল সহ প্রায় ৩০ টি দোকানে এই বিখ্যাত মিষ্টি পাওয়া যায়। তবে মেচার জনক কে, সেটা সঠিকভাবে জানা না গেলেও মেচার ইতিহাস যে প্রায় দু’শো বছর পুরাতন তা এক কথায় স্বীকার করে নিয়েছেন প্রত্যেকেই। এই মিষ্টি এখন পর্যটকদের হাত ধরে বাঁকুড়া, পশ্চিমবঙ্গ, ভারতের গণ্ডি পেরিয়ে বিমান পাড়ি দিয়েছে সুদূর আমেরিকায়।
মেচা সন্দেশের জিআই মেচা কমিটির সম্পাদক প্রশান্ত মোদক জানান ‘অনেকদিন ধরেই আমরা মেচার সন্দেশের জিআই ট্যাগের জন্য আবেদন জানিয়েছি। ইতিমধ্যেই কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। দুই ধাপ প্রসেস এগিয়েছে এবং আরও একধাপ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে সন্দেশ জিআই তকমা পেয়ে যাবে। জিআই তকমা পেলে বাইরে মোচা সন্দেশ পাঠাতে অনেকটাই সুবিধা হবে আমাদের। একইসঙ্গে বেলিয়াতোড়ে কর্মসংস্থানও বাড়বে।’