২২ শ্রাবণের অনুষ্ঠানে রাজ্যপালের মুখে শোনা গেল বাংলার হিংসা আর দুর্নীতির কথা, পাল্টা দিল তৃণমূলও

ফের রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের মুখে বাংলার হিংসা আর দুর্নীতির কথা। কবিগুরুর কবিতাকে হাতিয়ার করে সিভি আনন্দ বোসের দাবি, ‘চিত্ত এখন ভয়যুক্ত। রাজ্য সন্ত্রাস, দুর্নীতি, হিংসায় ভরে আছে।’ লজ্জায় তাঁর মাথা হেঁট হয়ে যাচ্ছে।’ তবে সিভি আনন্দ বোসকে পালটা দেন বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় ও শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুও। সব মিলিয়ে রাজ্য ও রাজ্যপালের সংঘাত আরও একবার প্রকাশ্যে।
মঙ্গলবার রাজভবনে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের তিরোধান দিবস অর্থাৎ ২২ শ্রাবণের অনুষ্ঠান ছিল। সেই অনুষ্ঠান থেকেই বাংলার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন রাজ্যপাল। বলেন,’কবিগুরু লিখেছিলেন চিত্ত যেথা ভয়শূন্য। কিন্তু বর্তমানে চিত্ত যেথা ভয়যুক্ত। রাজ্য সন্ত্রাস, দুর্নীতি, হিংসায় ভরে আছে।’ এরপরই তাঁর পরামর্শ,’গুরুদেবের নামে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করা উচিত।’ একসঙ্গে তাঁর সংযোজন,’এখন যা দেখছি, বাংলা আর আগেকার মতো নেই। অনেক দেরি হওয়ার আগে দুর্নীতি শেষ হয়ে যাক,মানুষ সেটাই চাইছে। এটা শেষ করতে মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে। এটাই শেষের শুরু, দুর্নীতি, হিংসার শেষের শুরু। রাজ্যে যা হচ্ছে তাতে লজ্জায় আমার মাথা হেঁট হয়ে যাচ্ছে।’
এদিন এমন বক্তব্য রাখার পরই শাসকদলের রোষের মুখে পড়েন রাজ্যপাল। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু থেকে শুরু করে রাজ্য বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়, তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ পর্যন্ত কেউই রাজ্যপালকে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু কটাক্ষের সুরে জানান,’রাজ্যপালকে বেশি হেঁট হতে বারণ করুন। চোখ থেকে সানগ্লাস খুলে পড়ে যাবে।’ বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য,’রাজ্যপালের বক্তব্যের সঙ্গে একমত নই। এমন কোনও পরিস্থিতি রাজ্যে তৈরি হয়নি। তিনি এসব কথা মণিপুরে গিয়ে বলুন। এসব কথা বলার পিছনে রাজ্যপালের কোনও উদ্দেশ্য আছে।’ একইসঙ্গে স্পিকার এও বলেন, ‘রাজ্যপালের আগে বাংলা শেখা দরকার। তিনি রবীন্দ্রনাথকে উদ্ধৃত করছেন। তাঁর কথার অন্তর্নিহিত অর্থটা তো বুঝতে হবে।’এদিকে তৃণমূলের রাজ্য মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন,’রাজ্যপাল বাংলার মাটিতে থাকার অধিকার হারিয়েছেন। তিনি বিজেপির দালাল। তিনি পরিকল্পিত ভাবে বাংলাকে ছোট করতে চাইছেন সকলের কাছে।’
২২ শ্রাবণ উপলক্ষে শিক্ষামন্ত্রী এদিন জোড়াসাঁকোতে যান। সেখানে রবীন্দ্রভারতীর উপাচার্য শুভ্রকমল মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর দেখা হয়েছে কি না, জানতে চাওয়া হলে ব্রাত্য পাল্টা প্রশ্ন করেন,’কে উপাচার্য,কোন উপাচার্য,আমি এমন নামে কোনও উপাচার্যকে চিনি না।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

11 + 12 =