যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ভাস্কর গুপ্তকে সরিয়ে দিল রাজভবন। ভারপাপ্ত উপাচার্য হিসাবে দায়িত্বে ছিলেন তিনি। আগামী ৩১ মার্চ অর্থাৎ সোমবার চাকরির মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল ভাস্কর গুপ্তের। তবে সেই মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদ থেকে তাঁকে সরিয়ে দিলেন রাজ্যলাল সিভি আনন্দ বোস। এদিকে সূত্রে খবর, ইতিমধ্যে সেই চিঠি ভাস্কর গুপ্তের কাছে পৌঁছে গিয়েছে।
তবে চাকরির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই ভারপাপ্ত উপাচার্য পদ থেকে ভাস্কর গুপ্তকে কেন সরানো হল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। যদিও এই বিষয়ে কিছুই জানা নেই বলে জানিয়েছেন ভাস্কর গুপ্ত। ভাস্করবাবু এই প্রসঙ্গে জানান, ‘রাজ্যপাল বোসের অধিকার আছে সরিয়ে দিয়েছেন। যতদিন দায়িত্বে ছিলাম কাজ করেছি।’ তবে রাজ্যপালের এহেন সিদ্ধান্তের তীব্র কটাক্ষ করেছেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু।
শিক্ষামন্ত্রীর কথায়, অচলাবস্থা সৃষ্টির চেষ্টা চলছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে তালিকা দিয়েছিলেন নামের সেখান থেকে একজন স্থায়ী উপাচার্যকে যাদবপুর বিদ্যালয়ের জন্য নিয়োগ করতে পারতেন বলে এদিন সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী। হঠাত কেন এমন সিদ্ধান্ত রাজভবনের তরফে এখনও কিছু জানানো হয়নি।
তবে জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গত বছর অর্থাৎ ২০২৪ সালে এপ্রিল মাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যের যে দায়িত্ব দেওয়া ভাস্কর গুপ্তকে। আর তা প্রত্যাহার করে নেওয়া হচ্ছে। এমনকী এই সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি জারির সময় থেকেই এহেন নির্দেশিকা কার্যকর হবে বলেও এদিন জানানো হয়েছে। ফলে আজ শুক্রবার থেকেই উপাচার্যহীন হয়ে পড়ল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টারকেও পাঠানো হয়েছে বলে রাজভবন সূত্রে জানা যাচ্ছে।
এদিকে রাজভবনের এহেন সিদ্ধান্ত ঘিরে তীব্র চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে অচলবস্থা তৈরি হতে পারে বলে ইতিমধ্যে আশঙ্কা করা হচ্ছে কোনও কোনও মহল থেকে। বলে রাখা প্রয়োজন, গত কয়েকদিন আগে ওয়েবকুপার বৈঠক ঘিরে একেবারে উত্তাল হয়ে ওঠে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। ছাত্র বিক্ষোভ আন্দোলনে আক্রান্ত হতে হয় শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে। পাল্টা তাঁর গাড়ির আঘাতে আহত হন এক পড়ুয়াও। যা নিয়ে আরও পরিস্থিতি জটিল হয়ে ওঠে। এই অবস্থায় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপাপ্ত উপাচার্য ভাস্কর গুপ্তের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এরসঙ্গে এই ঘটনায় শুরু হয় জোর রাজনৈতিক তরজা। এমনকী এই ঘটনার পর রাজ্যপাল বৈঠক ডাকলেও তাতে উপাচার্য উপস্থিত ছিলেন না বলে অভিযোগ। যদিও সেই সময় অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।