নিত্য নতুন পদ্ধতিতে শুরু হয়েছে প্রতারণা।প্রতি মুহূর্তে অপরাধীরা তাঁদের নিত্য নতুন জাল বিছোচ্ছেন শিকার ধরার জন্য। আর তাতে পা দিয়ে সাইবার প্রতারণার ঘটনা দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে। কখনও কখনও গ্রাহকের অজান্তের ব্যাঙ্ক থেকে উধাও হয়ে যাচ্ছে টাকা। কখনও বা গ্রাহকের ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়ে তা দিয়ে একাধিক অপরাধ সংগঠিত করার ঘটনা সামনে এসেছে। এরমধ্যেই এক অভিনব সাইবার প্রতারণার ঘটনা সামনে এল বিধাননগর পুলি্শের সূত্রে। গ্রাহকের অজান্তেই প্রতারকেরা তথ্য ব্যবহার করে ঋণ। অভিনব এই প্রতারণার পর্দাফাঁস করেছে বিধাননগর কমিশনারেট। আর এই ঘটনার তদন্তে নেমে গ্রেফতার করা হল দুজনকে। ধৃতদের নাম ভাস্কর মণ্ডল ওরফে ম্যাক্স এবং সৌরভ গোস্বামী। ম্যাক্সের বাড়ি বসিরহাট, সে দমদমের একটি ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকত। অন্যদিকে সৌরভ আরামবাগের বাসিন্দা হলেও সে ম্যাক্সের সঙ্গে থাকত।
বিধাননগর পুলিশ সূত্রে খবর, ব্যক্তিগত কারণে বিভিন্ন ব্যাঙ্ক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে লোন বা ঋণ নিয়ে থাকেন অনেকেই। কিন্তু গ্রাহকের অজান্তে তাঁর নামে নেওয়া হচ্ছে মোটা টাকা লোন। সম্প্রতি এক যুবকের কাছে ঋণ প্রদানকারী সংস্থার তরফে ফোন আসে। তিনি কবে লোন শোধ করবেন, তা জানতে চাওয়া হয়। শুনে আকাশ থেকে পড়েন ওই যুবক। কোনও নথি ও অনুমোদন ছাড়া কী ভাবে তাঁর নামে ঋণ নেওয়া হল তা বুঝতে না পেরে পুলিশের দ্বারস্থ হন। এই ঘটনার তদন্তে নেমে চাঞ্চল্যকর তথ্য হাতে এসেছে পুলিশের।জানা গিয়েছে কেওয়াই সি জমা দিয়ে এক ব্যক্তি অনলাইনে ৫ লক্ষ ১৪ হাজার ৯৮৩ টাকা ঋণ নেয়। পরবর্তীকালে অন্য একটি সংস্থা থেকে আরও ১০ লক্ষ টাকা ঋণ নেওয়া হয়। ঠিক এই সময় ঋণ নেওয়ার জন্য ওই সংস্থায় খোঁজ নিতে যান এক যুবক। তখনই তিনি জানতে পারেন, তাঁর নামে ঋণ চলছে। আকাশ থেকে পড়েন ওই যুবক। তখনই বোঝা যায় আগের লোন দুটি ভুয়ো। ওই যুবকের নাম ও নথি ব্যবহার করে প্রতারণা করা হয়েছে।
এরপরই ১৯ জুলাই সংস্থার তরফে বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানায় অভিযোগ জানানো হয়। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে ডিজিটাল তথ্য খতিয়ে দেখে পুলিশ। তার ভিত্তিতে দমদমে এই চক্রের হদিশ পাওয়া যায়। বিধাননগর সাইবার ক্রাইমের অফিসার রফিকুল লস্করের নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়। ধৃতদের থেকে উদ্ধার করা হয় প্রচুর পরিমাণ ডেবিট কার্ড। তদন্তে পুলিশ এও জানতে পারে বিভিন্ন ব্যক্তির নাম ও তথ্য ব্যবহার করে ঋণ নেওয়া হত। নকল আধার ও প্যানকার্ডও বানানো হত। তারপরই লাখ লাখ টাকার ঋণ নেওয়া হত। এই ভাবে ঠিক কত টাকার প্রতারণা করেছে এই চক্র তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলেও জানানো হয়েছে বিধাননগর কমিশনারেটের তরফ থেকে।