জুনিয়র চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে তহবিল নয়ছয়ের সেই মামলা খারিজ করে দিল বিধাননগর মহকুমা আদালত। মামলা খারিজ হওয়ার পরই জুনিয়র ডাক্তারদের বক্তব্য, আন্দোলনকে কালিমালিপ্ত করা এবং গণআন্দোলনের কণ্ঠরোধ করাই এই মামলার উদ্দেশ্য ছিল। তাঁরা যে স্বচ্ছভাবে অনুদানের হিসাব দিয়েছেন, সেকথাও জানান জুনিয়র ডাক্তাররা। প্রসঙ্গত, গত বছরের ৯ অগস্ট আরজি করের সেমিনার হল থেকে তিলোত্তমার দেহ উদ্ধারের পর রাস্তায় নামেন জুনিয়র ডাক্তাররা। সাধারণ মানুষের পাশাপাশি আন্দোলন শুরু করেন তাঁরা। সেইসময় ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টরস ফ্রন্ট গঠন হয়। সেই সংগঠনে কয়েক কোটি টাকা জমা পড়ে। এই অনুদান নয়ছয়ের অভিযোগ ওঠে। অনুদান নিয়ে শাসকদলের অনেকই প্রশ্ন তুলতে শুরু করেন। অনুদান নয়ছয়ের অভিযোগ তুলে বিধাননগর মহকুমা আদালতে মামলা করেন রাজু ঘোষ নামে এক ব্যক্তি। তাঁর দাবি, তিনি আরজি কর আন্দোলনকে সমর্থন করে পাঁচ হাজার টাকা দিয়েছিলেন। সেই টাকার রসিদ দেওয়া হয়নি। অনুদানের টাকা অন্য কাজে ব্যবহার করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। তাঁর সেই মামলাই খারিজ করে দিল বিধাননগর মহকুমা আদালত। আদালতের এই রায়ের পর জুনিয়র চিকিৎসকরা এও জানান, ‘যাঁরা ভেবেছিলেন এ ধরনের মামলায় আমরা প্যাঁচে পড়েছি, আসলে তাঁরা পক্ষপাতদুষ্ট। নিজেরা ক্ষুদ্র স্বার্থ দ্বারা চালিত হয়ে কখনও অন্যের হয়ে পথে নামেননি। তাই যাঁর যে পক্ষ থেকে আখের গোছানোর উদ্দেশ্য রয়েছে, তিনি সেই পক্ষের হয়ে গলা ফাটান।’
এই প্রসঙ্গে বলে রাখা শ্রেয়, বুধবার ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টরস ফ্রন্ট তাদের অনুদানের হিসাব সামনে আনে। সেখানে জুনিয়র ডাক্তাররা জানান, মোট ৩ কোটি ৫৮ লক্ষ ২১ হাজার ১৩৫ টাকা অনুদান পেয়েছিলেন। তার মধ্যে ১ কোটি ৩৭ লক্ষ ৫৩ হাজার ৯৯৮ টাকা খরচ হয়েছে। এখনও তাঁদের হাতে আছে ২ কোটি ২৯ লক্ষ ৭৭ হাজার ৬৬ টাকা। আদালত মামলা খারিজের পর জুনিয়র ডাক্তাররা বলেন, ‘যাবতীয় হিসাব-নিকাশ আমরা বুধবারই দিয়েছিলাম। ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টরস ফ্রন্ট-এর চলমান আন্দোলনের বিরুদ্ধে একটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা দায়ের করে রাজু ঘোষ নামে এক ব্যক্তি। যার মূল লক্ষ্য ছিল গণআন্দোলনের কণ্ঠরোধ করা, আন্দোলনকে কালিমালিপ্ত করা। শাসকগোষ্ঠীর প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ মদতে পরিচালিত এই মামলার ভিত্তি ছিল সম্পূর্ণ অসার ও কাল্পনিক। বিধাননগর আদালতের বিচারক সেই মামলা খারিজ করে দিয়ে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন, এই অভিযোগের কোনও বাস্তব ভিত্তি নেই।’