এবার বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ইডির দফতরে অভিযোগ দায়ের হল তৃণমূলের তরফ থেকে। বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ইডি দফতরে অভিযোগ দায়ের করলেন বিধাননগরের তৃণমূল মেয়র পারিষদ তুলসী সিনহা রায়। লকেটের বিরুদ্ধে তৃণমূল নেত্রীর অভিযোগ, রোজ ভ্যালি সংস্থা থেকে আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছেন লকেট। সেই সংক্রান্ত তথ্যও ইডির হাতে তুলে দিয়েছেন বলে জানান তুলসী সিনহা রায়। ইডির কাছে অভিযোগ করার কারণ সম্পর্কে তিনি জানান, ইডি এই রোজ ভ্যালি-দুর্নীতির তদন্ত করছে, তাই ইডির কাছে নিরপেক্ষ তদন্তে আবেদন জানান তিনি। বলেন, প্রয়োজনে আরও তথ্য দিয়ে তদন্তকারীদের সহযোগিতা করতে রাজি তিনি। এদিকে এই অভিযোগপত্রে তিনি নিজেকে সমাজকর্মী ও আইনজীবী হিসাবেই উল্লেখ করেছেন। অর্থাৎ তৃণমূল সাংসদ নুসরত জাহানকে নিয়ে বিতর্কের মাঝে জোড়াফুল শিবিরের থেকে বঙ্গ স্যাফ্রন ব্রিগেডকে যে একটা বড় ধাক্কা দেওয়ার চেষ্টা চলছে তা স্পষ্ট।
প্রসঙ্গত, গত সোমবার নুসরত জাহানের বিরুদ্ধে প্রতারণা ও টাকা তছরুপের অভিযোগ আনেন বেশ কয়েকজন। তাঁদের নিয়ে ইডি দফতরে হাজির হন বিজেপি নেতা শঙ্কুদেব পণ্ডা। এরই পাঁচদিনের মাথায় এবার বিজেপি সাংসদের বিরুদ্ধে অর্থ নয়ছয়ের অভিযোগ উঠল।
যদিও এ নিয়ে লকেট চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘চিটফান্ডে সবথেকে বেশি সুবিধা নিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর পরিবার। সেটা তাঁদেরই একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন। চিটফান্ডে সুবিধা নিয়ে তাঁদের দলের মন্ত্রী, বিধায়ক জেলে গিয়েছেন। তৃণমূল দলটা চোর ডাকাতে ভরে গিয়েছে। আসল তদন্ত আড়াল করতে এসব করা হচ্ছে। আসল উপভোক্তা কে তা তো ওঁদের দলেরই মুখপাত্র বলেছেন। এসব করে কিছু লাভ হবে না। তাঁদের দলের একজন সাংসদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে বলে, আর আমি ছবির জগতে ছিলাম বলে এখন এসব করছে।’
তবে শঙ্কুদেবের পদক্ষেপের ঘটনাকে সামনে রেখে ‘পাল্টা দেওয়ার’ রাজনীতির অভিযোগ তুলছেন বিরোধীরা। সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর বক্তব্য, ‘অপরাধীরা ধরা পড়বেই। অপরাধীরা নিজেদের সামলাক। সামলাতে যাতে না পারে সেটাই আমরা দেখব।’ তবে এ নিয়ে বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারীকে জিজ্ঞাসা করা হলে তাঁর বক্তব্য, ‘যা বলার তা লকেট চট্টোপাধ্যায় বলেছেন।’
তবে তৃণমূল কিন্তু লকেটকে খোঁচা দিতে ছাড়ছেন না। তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন বলেন, ‘লকেট দিদিমণির বিরুদ্ধে এর আগেও অনেক অভিযোগ আমরা শুনেছি। ইডি যে নিরপেক্ষ নয় তার প্রমাণ আমরা পেয়েছি। হিমন্ত বিশ্বশর্মারা বিজেপিতে যেতেই সব তদন্ত বন্ধ। ইডি বিজেপির নেতৃত্বের বিরুদ্ধে তদন্ত করবে এটা বিশ্বাস করাটা বোকামি। ইডি, সিবিআই বিজেপির শাখা সংগঠন হয়ে গিয়েছে। লকেট দিদিমণি যেহেতু বিজেপির সাংসদ তাঁর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেবে বলে মনে হয় না।’