লাগাতার গণআন্দোলন করেই ভাঙতে হবে তৃণমূল এবং বিজেপির বাইনারিঃ ইয়েচুরি

‘গণ আন্দোলন চালিয়ে যেতেই হবে। আর এই লাগাতার গণআন্দোলন করেই ভাঙতে হবে তৃণমূল এবং বিজেপির বাইনারি। একবার নয়, বারবার আঘাতেই চূর্ণ হবে বহু অর্থে নির্মিত এই দ্বৈরথ। এটাকেই পাখির চোখ করে জনতার কথা এবং তাঁদের দাবি তুলে ধরে আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে যাবে সিপিআই(এম) এবং বামপন্থীরা।’ দু’দিনের রাজ্য কমিটির বৈঠক শেষে লোকসভা নির্বাচন প্রসঙ্গে বৃহস্পতিবার এমনটাই জানানো হল সিপিআই(এম)-এর তরফ থেকে। পার্টির সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি এবং রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বৃহস্পতিবার মুজফ্‌ফর আহমদ ভবনে যে সাংবাদিক বৈঠক করেন তাতেই উঠে আসে ভবিষ্যতের এই কর্মপন্থার কথা।

এদিনের সাংবাদিক বৈঠকে ইয়েচুরি বলেন, পশ্চিমবঙ্গে নির্বাচনী প্রচার অত্যন্ত ভালো হয়েছে। যেভাবে কমবয়সীরা প্রচারে অংশ নিয়েছে তা রাজ্য এবং দেশের পক্ষে আশাপ্রদ। সঙ্গে এও জানান, ‘দিল্লির কুর্সিতে মোদির সরকার বসেছে। কিন্তু এবার লোকসভায় সংখ্যা গরিষ্ঠতার প্রয়োজনের চেয়ে মাত্র কুড়িটি সিট তাঁদের হাতে বেশি। আগের দশ বছর বিরোধীদের কথা বলতেই দেওয়া হয়নি। এবার তা হবে না। ফলে এবার ‘নিট’ দুর্নীতি থেকে ফসলের নামমাত্র সহায়ক মূল্য বৃদ্ধি নিয়ে জবাবদিহি করতে হবে সরকারকে।’

এখানেই শেষ নয়, ইয়েচুরি এদিন এও বলেন, ‘দেশের সর্বত্র সংসদের ভেতরে এবং বাইরে জনতার প্রতিদিনের জীবনের সঙ্কট এবং গণতন্ত্র-সংবিধান রক্ষার প্রশ্ন নিয়ে আন্দোলন জারি রাখবে সিপিআই(এম)।’ আর রাজ্য়ের প্রসঙ্গে এদিনের এই সাংবাদিক সম্মেলন থেকে ইয়েচুরি এও বলেন, ‘লাগাতার গণআন্দোলন করেই ভাঙতে হবে তৃণমূল এবং বিজেপি’র এই বাইনারি।’ আর সেলিম বলেছেন, ‘‘অসম লড়াইয়ে নেমেছিল এরাজ্যে বাম এবং কংগ্রেস। আমাদের কাছে তা অস্পষ্ট ছিল না। তার মধ্যেই চলেছে লড়াই। বাম-কংগ্রেস কেবল তৃণমূল এবং বিজেপি’র বিরুদ্ধে লড়েনি। মাসল-মিডিয়া-মানি পাওয়ারের বিরুদ্ধেও লড়েছে। নির্বাচন কমিশন গেটকিপারের বদলে গোলকিপারের কাজ করেছে। তৃতীয় দফার ভোট থেকে মেরুকরণে সক্রিয়াভবে করা হয়েছে। রামকৃষ্ণ মিশন বা সাধুসন্তদের টেনে আনা হয়েছে প্রচারে। আরেকদিকে সংখ্যালঘু বিরোধী প্রচার চলেছে খোলাখুলি। মুসলিম এবং হিন্দু, দু:পক্ষকেই ভয় দেখানো হয়েছে। জীবন জীবিকার প্রশ্ন পিছনে সরে গিয়ে ধর্মীয় পরিচিত সামনে এসেছে।’ এরই পাশাপাশি ইয়েচুরি এক বিস্ফোরক অভিযোগ আনেন কেন্দ্রীয় সরকার ততা বিজেপির বিরুদ্ধে। এদিন ইয়েচুরি জানান, ‘এখন ভোট সামলাচ্ছে পেশাদার সংস্থা। বিপুল অর্থ কাজ করছে। ভাড়াটে কোম্পানি কেবল প্রচার ম্যানেজ করছে না। বুথ থেকে গণনাকেন্দ্র ম্যানেজ করছে। গণনাকেন্দ্রে কাউন্টিং টেবল কেনা হয়েছে।’

নির্বাচনী লড়াই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘অসম প্রতিযোগিতা জেনেই তো লড়াইয়ে নেমেছি। মিথ একদিনে ভাঙে না। বারবার আঘাতে ভাঙতে হবে। বাইনারির এই মিথ বহু অর্থে নির্মিত। বারবার আঘাতেই তা ভাঙবে। উত্তরপ্রদেশে যেমন দশ বছর সময় নিয়েছে মিথ ভাঙতে। বাংলাতেও ভাঙবে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

five × 1 =