‘পরিযায়ী পরিব্রাজক’ বলে অমর্ত্যকে হুমকি বিশ্বভারতীর

নাম না করে অমর্ত্য সেনকে ‘পরিযায়ী পরিব্রাজক’ সম্বোধন করে ও পড়ুয়া ও অধ্যাপকদের কদর্য ভাষায় হুঁশিয়ারি দিয়ে প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিল বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। নাম না করলেও পরযায়ী পরিব্রাজক যে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনকে উদ্দেশ্য করেই বলা তা বুঝতে কারও অসুবিধা হয়নি।

এদিকে ৫ জুলাই অর্থাৎ বুধবার বিশ্বভারতীর এক অধ্যাপক ও পড়ুয়াদের একাংশ ‘প্রতীচী’ বাড়িতে গিয়ে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের সঙ্গে দেখা করেন৷ বিশ্বভারতীর বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন অধ্যাপক সেন৷ এরপরেই শিক্ষক-সহ পড়ুয়াদের ‘চাটুকার’ বলে উল্লেখ করে একপ্রকার বেনজিরভাবে তির্যক ভাষায় প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিতে দেখা যায় বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত জনসংযোগ আধিকারিক মহুয়া বন্দ্যোপাধ্যায়কে।

নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনকে ১৩ ডেসিমেল জমি খালি করতে বলে নোটিশ দিয়েছিল বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। যার বিরুদ্ধে আদালতে দ্বারস্থ হন অধ্যাপক সেন৷ কলকাতা হাইকোর্ট ইতিমধ্যেই এই বিশ্বভারতীর নোটিশের উপর স্থগিতাদেশও দিয়েছে। জমি বিবাদের মাঝেই ৫ জুন বিশ্বভারতীর বর্তমান অস্থির পরিস্থিতি নিয়ে অধ্যাপক সেনের সঙ্গে দেখা করেন পড়ুয়ারা। পরামর্শ চান বিশ্বভারতীর প্রাক্তনী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের কাছে৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগও প্রকাশ করেন অমর্ত্য সেন৷ এরপরেই এদিন অমর্ত্য সেনের নাম না করেই একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি দেয় বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত জনসংযোগ আধিকারিক মহুয়া বন্দ্যোপাধ্যায়। তাতে উল্লেখ করা হয়, ‘জমি সংক্রান্ত বিষয়টি বিচারাধীন তাই এব্যাপারে বিশ্বভারতী এখন কোনও মন্তব্য রাখবে না।’ পাশাপাশি ওই বিজ্ঞপ্তিতে এও জানানো হয় যে, ‘বিশ্বভারতীতে আজকের পরিস্থিতি নিয়ে কোনও পরিযায়ী পরিব্রাজকের মন্তব্যের ঘোরতর বিরোধী, কারন যিনি এই বক্তব্য সর্বসমক্ষে রাখছেন তিনি এতদিন বিশ্বভারতীতে চলমান অশান্ত পরিবেশের ফায়দা তুলেছেন।’ এছাড়াও, প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে ‘মেকি রাবীন্দ্রিক’, ‘জমি হরফকারি’ বলেও উল্লেখ করা হয় নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদকে৷ এমনকি, পড়ুয়া ও অধ্যাপকদের উদ্দেশ্যে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলা হয়েছে, ‘যাঁরা চাটুকার শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রী এবং তথাকথিত রাবীন্দ্রিক তারাও একদিন নির্মূল হয়ে যাবেন৷ দূর্নীতি বন্ধ করতে ও শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে যত রকম আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া যায় তা নিতে বিশ্বভারতী প্রশাসন শেষ পর্যন্ত যাবে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

fourteen − 1 =