ওবিসি মামলায় হাইকোর্টে বড়সড় ধাক্কা খেয়েছে রাজ্য সরকার। মঙ্গলবার ১৪০ জনজাতিকে নিয়ে রাজ্য সরকারের বিজ্ঞপ্তিতে জুলাই পর্যন্ত অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দেয় হাইকোর্ট। এদিকে মঙ্গলবার কালীগঞ্জে উপভোটের প্রচারে গিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী ও বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদাররা। সেখান থেকেই বিধানসভায় লাড্ডু বিতরণ কর্মসূচির ঘোষণা করেছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা এই প্রসঙ্গে এদিন এও বলেছিলেন, ‘বুধবার বিধানসভায় লাঞ্চের সময় বিজেপি বিধায়করা লাড্ডু বিতরণ করে উৎসব পালন করবে। ওবিসি হিন্দু, কুর্মী, কুম্ভকার, স্বর্ণকার, নাপিত, কামার-কুমোর এদের অধিকার নিয়ে লড়তে প্রদেশ বিজেপি মোর্চা সল্টলেকে অবস্থান করবে। সুকান্ত মজুমদার ও আমিও সেখানে যাব।’
আর তাঁদের এই পরিকল্পনাকে বাস্তবায়িত করতে বুধবার বিধানসভার বাইরে বেরিয়ে এসে কাঁসর, ঘণ্টা, শাঁখ বাজিয়ে লাড্ডু বিতরণ করেন বিজেপি বিধায়করা। নেতৃত্ব দেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
বুধবার দুপুর ১টা নাগাদ ড্রাম, শাঁখ, করতাল ঘণ্টা বাজাতে বাজাতে রাজ্য বিধানসভা থেকে বেরিয়ে আসেন বিজেপি বিধায়করা। এর পর বিধানসভার মেইন গেটে চলে আসেন তাঁরা। শুভেন্দু অধিকারীসহ বেশ কয়েকজন বিধায়কের হাতে ছিল লাড্ডুর প্যাকেট। বাইরে এসে লাড্ডু বিতরণ করেন তাঁরা। সঙ্গে স্লোগান ওঠে, ‘ওবিসি বিল, হরি বোল’। এই মিষ্টি বিতরণ করা হয় সাধারণ মানুষের মধ্যেও। এই প্রসঙ্গে বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ মাইতি বলেন, ‘মমতার সরকার বারবার হিন্দু বিরোধী ওবিসি বিল নিয়ে এসেছিল। হাইকোর্ট থাপ্পড় মেরে সেই বিলে স্থগিতাদেশ দিয়েছে। এই সরকার তোষণের রাজনীতি করছে।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার রাজ্যের জারি করা নতুন বিজ্ঞপ্তির উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশের নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার ডিভিশন বেঞ্চ। ১৪০টি জনজাতিকে নিয়ে গঠিত নতুন বিজ্ঞপ্তির উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দেয় আদালত। তবে যাঁরা ১৯৯৩ সালের আইন অনুযায়ী ২০১০ সালের আগে ওবিসি সার্টিফিকেট পেয়েছেন, তাঁদের চাকরি বা ভর্তির নিয়োগে বাধা থাকছে না। আদালতের এই নির্দেশকে বড় জয় হিসাবে দেখছে বিজেপি। তাদের দাবি, ওবিসি সংরক্ষণের নামে আসলে মুসলিমদের সংরক্ষণ দেওয়ার ফন্দি এঁটেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। যেহেতু সংবিধান মেনে ধর্মের ভিত্তিতে সংরক্ষণ করা যায় না তাই ওবিসি পরিচয় দিয়ে মুসলিমদের সংরক্ষণ দেওয়ার চেষ্টা করছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার।