ভোট পরবর্তী অশান্তিতে বিরোধীরা আক্রান্ত হচ্ছে, এই অভিযোগ তুলে রবিবার রাজভবনের সামনে ধরনায় বিজেপি। আর সেখান থেকেই নতুন কর্মসূচির ঘোষণা করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাও আবার ২১ জুলাই, তৃণমূলের ‘শহিদ দিবস’কে সামনে রেখে। পর পর কয়েকদিন টানা কর্মসূচি রয়েছে গেরুয়া শিবিরের। এদিন ধরনা মঞ্চে তা ঘোষণা করেন শুভেন্দু। ১৮ থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত চলবে একাধিক বিক্ষোভ কর্মসূচি।
হাইকোর্টের অনুমতি সাপেক্ষে, একাধিক শর্ত মেনে রবিবার রাজভবনের সামনে ধরনা হয়েছে শুভেন্দুর নেতৃত্বে। সঙ্গী দলের ৩০০ নেতা-কর্মী ও তাঁদের পরিবারের সদস্যরা। ধরনামঞ্চে শুভেন্দুর সঙ্গে দেখা গিয়েছে দলবদলকারী নেতা তাপস রায়, অর্জুন সিং, কৌস্তভ বাগচীদের। এই মঞ্চে বক্তব্য রাখতে গিয়েই বিরোধী দলনেতা দলের নতুন কর্মসূচির কথা ঘোষণা করেন। নজরে অবশ্যই ২১ জুলাই, তৃণমূলের ‘শহিদ দিবস’। এই দিনটিকে ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ হিসেবে পালন করতে চায় বিজেপি। রাজ্যের প্রত্যেক থানার সামনে মুখ্যমন্ত্রী ও মেয়রের বিরোধিতায় বিক্ষোভ দেখানো হবে। দুপুর ১২টায় যখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বক্তব্য রাখবেন, তখনই বিজেপির তরফে তাঁদের কুশপুতুল পোড়ানো হবে বলে জানান শুভেন্দু।
বিরোধী দলনেতা আরও জানান, ‘আগামী ২২ তারিখ ৪০০ কোটি টাকা চাঁদা দেওয়া সিইএসসি-র কেন্দ্রীয় অফিস ঘেরাও করতে আমরা নামছি কলকাতায়। বিদ্যুতের বিল এভাবে বাড়ানো কেন হল, তার জবাব দিতে হবে এরাজ্যের সরকারকে।‘ একইসঙ্গে এও জানান, ‘আমি আমার নির্বাচন কেন্দ্রে গণ আন্দোলনের ডাক দিয়েছি। আলু এবং সমস্ত জিনিসের আকাশ ছোঁয়া মূল্য বৃদ্ধি, বিদ্যুতের দাম বাড়ানো, জমি-কেনাবেচার দুই শতাংশ সেস বাড়ানো, পেট্রল-ডিজেলের দাম ১ টাকা করে বাড়ানোর প্রতিবাদে সবাইকে পথে নামার ডাক দিচ্ছি।” এরপরই শুভেন্দু ঘোষণা করেন, “এই উপভোটে যাঁরা ভোট দিতে পারেনি, যাঁরা আক্রান্ত হয়েছেন, তাঁদের বাড়িতে বিরোধী দলনেতা ও বিধায়করা পরিদর্শন করবেন।’ এখানেই শেষ নয়, নবান্ন অভিযান নিয়েও পরিকল্পনা রয়েছে বিজেপির। তার ইঙ্গিত দিলেন শুভেন্দু। তার আগে অবশ্য ১৯ জুলাই রানাঘাট দক্ষিণ ও রায়গঞ্জের উপনির্বাচনে যাঁরা ভোট দিতে পারেননি, তাঁদের কাছে যাবেন বিজেপি নেতারা। তবে নজরে অবশ্যই ২১ জুলাই বিজেপির থানা ঘেরাও কর্মসূচি। ওই দিন শক্তি প্রদর্শনে নামবে দুই যুযুধান দল।
ওয়াকিবহাল মহলের মত, লোকসভা ভোট ও বিধানসভা উপনির্বাচনে বিজেপির ছন্নছাড়া পরিস্থিতি দেখে ফের ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে বঙ্গ বিজেপি। ফের প্রতিবাদ, আন্দোলনের মাধ্যমে সংগঠনকে চাঙ্গা করতে চাইছে। তাই ২১ জুলাইকে কেন্দ্র করে একাধিক কর্মসূচি গ্রহণ। এনিয়ে মেয়র ফিরহাদ হাকিমের প্রতিক্রিয়া, ‘ওদের পায়ের তলার মাটি নেই, প্রেসের দয়ায় বেঁচে আছে। কিছু না থাকলে যা হয়। দু কান কাটা নির্লজ্জ ওরা। গুরুত্ব দিই না।’