২০২৫-এর ৮ মার্চ। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আন্তর্জাতিক নারী দিবসে ‘নারী শক্তি’-কে শ্রদ্ধা জানাতে দেখা গিয়েছিল। শুধু তাই নয়, বিভিন্ন পরিকল্পনা ও কর্মসূচির মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়নের প্রতি তাঁকে নানা প্রতিশ্রুতির কথা বলতেও শোনা গিয়েছিল। এর মাস দুয়েকের মধ্য়ে গণধর্ষণের ঘটনার অভিযোগ উঠল কর্ণাটকের বিজেপি বিধায়ক মুনিরত্ন এবং তাঁর সঙ্গীদের বিরুদ্ধে। গণধর্ষণের অভিযোগ আনেন ৪০ বছর বয়সি এক মহিলা। সঙ্গে এও জানা যাচ্ছে, মঙ্গলবার আরএমসি ইয়ার্ড থানায় দলের বিধায়ক মুনিরত্নের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ দায়ের করেন৷ নির্যাতিতার অভিযোগ, গত বছর ১১ জুন বিধায়কের মাথিকেরের অফিসে এই ঘটনা ঘটে৷ বিধায়কের সঙ্গীরাই একটি গাড়িতে করে তাঁকে সেখানে নিয়ে গিয়েছিলেন বলে অভিযোগপত্রে জানান ওই নির্যাতিতা৷ শুধু গণধর্ষণ নয়, নির্যাতনের পর তাঁর মুখে প্রস্রাব করার পাশাপাশি শরীরে ইঞ্জেকশন দিয়ে মারণ ভাইরাস ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ জানান নির্যাতিতা। বিজেপি বিধায়কের বিরুদ্ধে ওঠা এই অভিযোগের কথা জানিয়েছে কর্ণাটক পুলিশ।
এই প্রসঙ্গে বলে রাখা শ্রেয়, সিনেমার প্রোডিউসার হিসেবে খ্যাত মুনিরত্ন কর্ণাটকের রাজারহেশ্বরী কেন্দ্র থেকে চার বার বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছেন৷ বর্তমানেও তিনি ওই কেন্দ্রের বিধায়ক। সবথেকে আশ্চর্যের ঘটনা হল অভিযোগকারিণী বিজেপি-রই একজন দলীয় কর্মী। নির্যাতিতার অভিযোগ, ওই অফিসে পৌঁছনোর পরই বিজেপি বিধায়ক এবং তাঁর দুই সঙ্গী মিলে তাঁকে নগ্ন হতে বাধ্য করেন৷ এর পর মুনিরত্ন তাঁর দুই সঙ্গীকে তাঁকে ধর্ষণ করার নির্দেশ দেন বলে অভিযোগ নির্যাতিতার৷ বাধা দিলে তাঁর ছেলের প্রাণহানির হুমকিও দেওয়া হয় বলে দাবি করেন নির্যাতিতা। এখানেই শেষ নয়, নির্যাতিতা এও জানান, বিধায়কের দুই সঙ্গী তাঁকে গণধর্ষণ করার পর মুনিরত্ন এগিয়ে এসে তাঁর মুখে প্রস্রাব করে দেন৷ এর পর আরও এক অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি ঘরে ঢুকে বিধায়কের হাতে একটি সাদা বাক্স তুলে দেন৷ এর পরই ওই সাদা বাক্স থেকে একটি সিরিঞ্জ বের করে তাঁর শরীরে ইঞ্জেকশন দিয়ে দেন বিজেপি বিধায়ক মুনিরত্ন। পাশাপাশি নির্যাতিতা জানান,কাউকে কিছু জানালে তাঁর পরিবারের ক্ষতি করার হুমকিও দেন বিজেপি বিধায়ক। বিধায়কের তিন সঙ্গীকে ইতিমধ্যেই চিহ্নিত করেছে পুলিশ৷ চতুর্থ অভিযুক্তের পরিচয় এখনও জানা যায়নি।
তবে ওই নির্যাতিতার সন্দেহ খুব একটা অমূলক বলে উড়িয়েও দেওয়া যাচ্ছে না। কারণ,জানুয়ারি মাসে ওই মহিলাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হলে তাঁর শরীরে একটি দুরারোগ্য ভাইরাসের খোঁজ মেলে৷ ওই মহিলার আশঙ্কা, বিধায়ক তাঁকে যে ইঞ্জেকশন দিয়েছিলেন তার থেকেই এই ভাইরাস তাঁর শরীরে প্রবেশ করেছে৷ গত ১৯ মে নিজের শারীরিক অবস্থার জেরে অবসাদগ্রস্ত হয়ে ওই মহিলা কয়েকটি ঘুমের ওষুধ খেয়ে নেন৷ এর পরই গোটা বিষয়টি পুলিশ জানতে পারে। এ ব্য়াপারে অভিযুক্ত বিজেপি বিধায়ক মুনিরত্নের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।