বিজেপি এবং আরএসএসের প্রধান মাথা ব্যথা হয়ে দাঁড়িয়েছে বিজেপির পরবর্তী জাতীয় সভাপতি কে হবেন তা নিয়ে। কারণ, বর্তমান সভাপতি জে পি নাড্ডার মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে। এখন তিনি কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক সামলাচ্ছেন। ফলে বিজেপির পরবর্তী সভাপতি তা নিয়ে বিজেপির অন্দরেই চলছে নানা জল্পনা। পরবর্তী বিজেপি প্রেসিডেন্ট আরএসসের পছন্দের কেউ হবেন না কি মোদির পছন্দের হবেন তা নিয়ে চলছে জোর চর্চা। চর্চা হচ্ছে আরএসএসের শীর্ষ স্তরেও। এদিকে আবার সামনেই মহারাষ্ট্র সহ একাধিক রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে। তার আগে এই বিষয়টি নিয়ে জল্পনা ছড়িয়েছে। এবার লোকসভায় নিরঙ্কুশ সংখ্যা গরিষ্ঠতা নেই বিজেপির। তারা ২৪০টি আসন পেয়েছে। ফলে সর্বভারতীয় সভাপতি বাছাই করতে চাপ বাড়বে আরএসএসের দিক থেকে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
এদিকে সূত্রের খবর, লোকসভা ভোটের ফলে আরএসএস নেতৃত্ব খুশি নয়। দ্বিতীয় মোদি সরকারের জমানায় বিজেপির সঙ্গে সঙ্ঘ পরিবারের সমন্বয়ের অভাবের কথা প্রকাশ্যে এসেছে। ভোটের ফল প্রকাশের পর সঙ্ঘ প্রধান মোহন ভাগবত বলেছেন, প্রকৃত দেশসেবকের কোনও অহঙ্কার থাকা উচিত নয়। বিভিন্ন মহল মনে করছে, ভাগবতের নিশানা হলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এবারের ভোটে মোদি সহ বিজেপির নেতারা বিরোধীদের যে ভাষায় আক্রমণ করেছেন, ভাগবত তাও ভালোভাবে নেননি। তিনি বলেছেন, বিরোধীদের প্রতিপক্ষ ভেবে লড়াই করা উচিত।ভোটে জয় পরাজয় তো থাকবেই। এবার ভোট চলাকালীনই নাড্ডা বলেছিলেন, বিজেপি এখন একাই চলতে সক্ষম। তার কারও সাহায্য দরকার পড়ে না। সঙ্ঘ পরিবারের সদস্য নাড্ডার এই ধরনের মন্তব্যও আরএসএস শীর্ষ নেতৃত্ব ভালো মনে নেননি। এই অবস্থায় সঙ্ঘ পরিবার এবার সরকার চালানোর ক্ষেত্রে রাশ নিজেদের হাতে রাখতে চায়। আর সেই কারণেই পরবর্তী সভাপতি নিয়েও সঙ্ঘ নানা চিন্তা করছে।
গত বুধবার বিজেপি এবং সঙ্ঘের শীর্ষ নেতৃত্ব যে দীর্ঘ বৈঠক করেন সেখানে আলোচ্য বিষয় ছিল পরবর্তী সভাপতি। এ বছরের শেষে এবং সামনের বছরের গোড়ায় মহারাষ্ট্র, হরিয়ানা, ঝাড়খণ্ডের ভোট রয়েছে। আর কালবিলম্ব না করে তার আগেই সভাপতি নির্বাচন সেরে ফেলতে বিজেপির উপর চাপ সৃষ্টি করছে সঙ্ঘ। মহারাষ্ট্র এবং ঝাড়খণ্ডে লোকসভা ভোটের ফল বিজেপির অনুকূলে যায়নি। মোদি, শাহ জুটি যেভাবে এবার চারশো পারের স্লোগান দিয়েছিল, সেটাও সঙ্ঘ পরিবারের চোখে ভালো লাগেনি। সেই কারণেই আরএসএস এবার আরও কড়া কাউকে সভাপতি করতে চাইছে। বিনোদ তাউড়ে, বি এল সন্তোষ থেকে অনেকের নাম এই আলোচনায় উঠে আসছে। দ্য হিন্দুর অ্যাসোসিয়েট এডিটর ও পলিটিক্যাল এডিটর নিসতুলা হেব্বারও একটি সাক্ষাতকারে জানান, আরএসএস বুঝিয়েছে আমাদেরকে জিজ্ঞেস করে পার্টির সভাপতি বাছাই করা হোক।
উল্লেখ্য, যেবার প্রথম প্রধানমন্ত্রী হন নরেন্দ্র মোদি, তখনও কে সভাপতি হবেন তা নিয়ে বিতর্ক দানা বেঁধেছিল। ভোটের আগে রাজনাথ সিংকে সভাপতি করা হয়। কিন্তু ভোটের পরে সভাপতি করা হয় মোদির পছন্দের অমিত শাহকে। এখন সময় বদলেছে। বিরোধীরা এখন খুব সক্রিয়। বিরোধীরা শাসক বিরোধী নানা ইস্য়ু তুলে ধরছে। যার মধ্যে রয়েছে নিট বা অগ্নিবীরের মতো ইস্য়ু। সেখানে একজন দাপুটে বিজেপি সভাপতিকে প্রয়োজন শাসকদল বিজেপির।