মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে হেনস্থা করা হচ্ছে, পুলিশের বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগ তুলে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হতে দেখা গেল খেজুরির সোমনাথ প্রামাণিক সহ ৬১ জনকে। তাঁদের অভিযোগ,বারবার থানায় ডেকে তাঁদের হেনস্থা করা হচ্ছে। অথচ, এর আগে তাঁদের তলব করা থেকে পুলিশকে বিরত করার নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। শুক্রবার এই রক্ষা কবচের মেয়াদ আরও বাড়ানোর জন্য আবেদন করা হয়।
এই আবেদনের প্রেক্ষিতে আবেদনকারীদের রক্ষাকবচের মেয়াদ ১৫ জুলাই পর্যন্ত বাড়ানো হলেও আবেদনকারীদের নিয়ে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেন বিচারপতি। এই প্রসঙ্গে আদালত এদিন বলে, ‘আদালতকে নিয়ে খেলছেন আপনার মক্কেল। এ যেন বেহেতি গঙ্গা মে হাত ধোনা। যে পারছে সেই পুলিশের ঘাড়ে দায় চাপিয়ে যাচ্ছে। কিছু ঘটনা যে ঘটে না তা নয়। কিন্তু, এখন যে কোনও গণ্ডগোলই ভোটের হিংসা হয়ে যাচ্ছে। পুলিশ অভিযুক্ত হয়ে যাচ্ছে। আদালতকে মিথ্যে বলে ব্যবহার করা হচ্ছে।’ সঙ্গে আদালত এও জানায়, ‘এই মামলাকারীকে বিশ্বাস না করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে আদালতের। কারণ এটা একটা ট্রেন্ড হয়ে গিয়েছে। মিথ্যে তথ্য দিয়ে কিছু লোক মামলা করে বিভ্রান্ত করছে।‘
এই প্রসঙ্গে রাজ্যের তরফ থেকে জানানো হয়, খেজুরির মামলাকারী ১৯ জুন বিডিও অফিসে মনোনয়ন জমা দিতে যান। কিন্তুথানায় হাজির হননি। বরং আদালতকে ঢাল করছেন তিনি। এই প্রসঙ্গে বিচারপতি এও জানান, ‘দিনের পর দিন এমন মামলাকারীদের জন্য আদালতের সময় নষ্ট হচ্ছে। এখন কেন্দ্রীয় বাহিনী আছে কিন্তু পুলিশ তো সারা বছর থাকবে। তাদের সঙ্গে ঘর করতে হবে।‘ আর এখানেই বিচারপতির প্রশ্ন, ‘কোর্টকে কতদিন মিথ্যে বলে ব্যবহার করবেন?’
উল্লেখ্য, পঞ্চায়েত ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা হওয়ার পরেই একাধিক রাজনৈতিক মামলা জমা পড়ে কলকাতা হাইকোর্টে। এই প্রসঙ্গে আগেও অসন্তোষ প্রকাশ করতে দেখা গিয়েছিল, কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমকে। তিনি পঞ্চায়েতে মনোনয়ন সংক্রান্ত এক মামলার প্রেক্ষিতে মামলাকারীর আইনজীবীর উদ্দেশে বলেছিলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে লাফালাফি করছেন। কিন্তু, বহু মানুষ রুটিরুজির জন্য আদালতের দরজায় কড়া নাড়ছেন। অনেকের চাকরি পর্যন্ত নেই। আদালত কী রায় দেয় তার উপর নির্ভর করছে তাঁদের চাকরি পাওয়া না পাওয়া। তাঁদের করা আবেদনগুলিও শুনতে হবে। শুধু নির্বাচন সংক্রান্ত মামলা শুনলে কি হবে! আপনারা ভোটে লড়ছেন, আপনারাই মারপিটও করছেন।‘