নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে স্কুল সার্ভিস কমিশনের ২০১৬ সালের সম্পূর্ণ প্যানেল-ই বাতিল করেছে শীর্ষ আদালত। শীর্ষ আদালতের এই নির্দেশে চাকরি হারিয়ে একেবারে রাস্তায় প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী। তবে এরই মাঝে রয়েছে ব্যতিক্রম। মানবিকতার খাতিরে ক্যান্সারে আক্রান্ত সোমা দাসের চাকরি বহাল রাখার নির্দেশ দেয় আদালত। সোমা দাসের চাকরি বহাল থাকার নির্দেশ পাওয়ার পর এবার পথে দৃষ্টিহীন ও বিশেষভাবে সক্ষম চাকরিহারা শিক্ষকেরাও। তাঁদের প্রশ্ন, সোমার ক্ষেত্রে আদালত মানবিক হলে তাঁদের ক্ষেত্রে নয় কেন?
এদিকে তথ্য বলছে ২০১৬ প্য়ানেল বাতিল হওয়ার জেরে ৭০ জনেরও বেশি চাকরি হারিয়েছেন দৃষ্টিহীন ও বিশেষভাবে সক্ষম শিক্ষক। এই প্রসঙ্গে অল বেঙ্গল ব্লাইন্ড টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের এর সভাপতি তাপস রায় দাবি করেন,’শীর্ষ আদালতের যে নির্দেশে ২০১৬ এর প্যানেল বাতিল হয়েছে তার মধ্যে সোমা দাসকে যেখানে ব্যতিক্রমী হিসেবে দেখানো হয়েছে সেখানে আমাদের দৃষ্টিহীন ৭০জনকে একই ভাবে মানবিক দিক থেকে দেখুক।’ পাশাপাশি তাঁরা এও জানান, এ ব্যাপারে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, রাজ্যপাল, এসএসসির চেয়ারম্যানের পাশাপাশি শিক্ষাসচিবকেও চিঠি দিচ্ছেন তাঁরা। সঙ্গে এও জানান, ফের নিজেদের দাবির কথা রাজ্যের শিক্ষাসচিবকে তাঁরা জানাবেন। সমস্যা সমাধানে রাজ্য পদক্ষেপ না করলে বাধ্য হবেন বৃহত্তর আন্দোলন সংগঠিত করতে।
এই একই সুরের অনুরণন চাকরিহারা দৃষ্টিহীন শিক্ষকদের গলাতেও। পাশাপাশি তাঁরা এও জানান, অন্য পাঁচজন সাধারণ পরীক্ষার্থীর মতো দৃষ্টিহীনরা পরীক্ষা দিতে পারেন না। তাঁদের পরীক্ষা দিতে গেলে একজন রাইটারের প্রয়োজন হয়। ফলে ফের তাদের পরীক্ষায় বসা তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। তাই তাঁদের চাকরিতে বহাল রাখার বিষয়টি মানবিক দিক থেকে দেখা উচিত।
প্রসঙ্গত, গোটা প্যানেল বাতিল করার পাশাপাশি ডিসেম্বরের মধ্যে নিয়োগপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। আদেশ মেনে ইতিমধ্যে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে রাজ্য। সেখানে চাকরিহারা শিক্ষকদের বয়স ও অভিজ্ঞতার নিরিখে বাড়তি সুবিধের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু দৃষ্টিহীন চাকরিহারা শিক্ষকদের জন্য সরকারের তরফে আলাদা করে কোনও কিছুর উল্লেখ করা হয়নি।