মধ্য দিল্লির ওল্ড রাজেন্দর নগর এলাকায় আইএএস কোচিং সেন্টারের বেসমেন্ট থেকে উদ্ধার হল একের পর এক পড়ুয়ার দেহ। এদিকে ভারী বৃষ্টিতে জলমগ্ন গোটা এলাকা। তার জেরে জল ঢুকেছিল কোচিং সেন্টারেও। সেখান থেকেই বিপত্তি। এনডিআরএফের উদ্ধার অভিযানের সময় ঘটনাস্থল থেকে এখনও পর্যন্ত দুই ছাত্রী এবং একজন ছাত্রের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
ঘটনায় দিল্লি পুলিশ ফৌজদারি মামলা দায়ের করেছে এবং এই ঘটনায় দুজনকে আটকও করা হয়েছে বলে দিল্লি পুলিশ সূত্রে খবর। একইসঙ্গে পুলিশের তরফ থেকে এও জানানো হয়েছে, ইউপিএসসি পরীক্ষার্থীদের মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধান করা হচ্ছে।
দিল্লি পুলিশ সেন্ট্রালের ডেপুটি কমিশনার এম হর্ষবর্ধন এও বলেন, ‘আমরা একটি ফৌজদারি মামলা নথিভুক্ত করেছি। আমাদের ফরেনসিক দল এখানে আছে। ফরেনসিক সংগ্রহের প্রক্রিয়া চলছে। আমরা এই বিষয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ যে আমাদের সঠিক তদন্ত করা উচিত। সত্য খুঁজে বের করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ আমরা। এ পর্যন্ত দুজনকে আটক করা হয়েছে।’ পুলিশ সূত্রে খবর, মৃত পড়ুয়ারা উত্তরপ্রদেশ, কেরালা এবং তেলেঙ্গানার বাসিন্দা। মরদেহ আরএমএল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
প্রাথমিক তদন্ত থেকে জানা যাচ্ছে, বেসমেন্টে একটি লাইব্রেরি ছিল। সেখানেই পড়াশোনা করছিলেন ছাত্রছাত্রীরা। আচমকাই বেসমেন্টে জল ঢুকতে শুরু করে। আটকে পড়া ছাত্রদের সরিয়ে নিতে দড়ি ব্যবহার করা হয়েছিল, কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। কোচিং সেন্টারের আসবাবপত্র জল ঢুকে ভাসতে শুরু করে। জলের কারণেই উদ্ধার অভিযান বাধাপ্রাপ্ত হয় বলে জানায় পুলিশ। বিজেপি নেতা মনজিন্দর সিরসা দাবি করেছেন যে, ১৮ জন পড়ুয়া এখনও বেসমেন্টেই আটকে আছেন।
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, একটি সংস্থার আইএএস স্টাডি সার্কেলের বেসমেন্ট এখনও জলমগ্ন। ফায়ার ব্রিগেডের আধিকারিকরা শনিবার সন্ধ্যা ৭:১৯ মিনিটে ফোন পান। ছাত্ররা বেসমেন্টে আটকে আছে শুনে তাঁরা এসে পড়েন। তৎপরতার সঙ্গে ফায়ার সার্ভিসের পাঁচটি ইঞ্জিন পাঠানো হয়। ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্সের (এনডিআরএফ) দলও ঘটনাস্থলে রয়েছে। দিল্লি ফায়ার ডিপার্টমেন্ট এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘পুরনো রাজেন্দর নগরের কোচিং ইনস্টিটিউটের বেসমেন্টে জল ভর্তি হয়ে যাওয়ার পরে অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযান চলছে। বেশ কিছু ছাত্র আটকে পড়েছে বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে।’
এই প্রসঙ্গে ডিসিপি হর্ষবর্ধন জানান, জলের গভীরতা ৭ ফুট। বেসমেন্ট থেকে ক্রমাগত পাম্প করে জল বার করা হচ্ছে বর্তমানে। ছাত্রছাত্রীদের মৃত্যুতে অন্য পড়ুয়ারাও বিক্ষোভে শামিল হয়েছেন। এদিকে সূত্রে খবর, দিল্লি বিজেপির প্রধান বীরেন্দ্র সচদেবা এবং নয়া দিল্লির সাংসদ বাঁশুরি স্বরাজ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং কেজরিওয়ালের প্রশাসনকে এই ঘটনার জন্য দায়ী করেন। তাঁর কথায়, ‘দিল্লি সরকারের অপরাধমূলক অবহেলা এই দুর্ঘটনার জন্য দায়ী। জল বোর্ডের মন্ত্রী অতীশি এবং স্থানীয় বিধায়ক দুর্গেশ পাঠকের দায়িত্ব নেওয়া উচিত এবং পদত্যাগ করা উচিত।’