বৃহস্পতিবার সকালে আর সময় দিলেন না বুদ্ধবাবু

বুধবার রাত এগারোটা। ডিনার হয়ে গিয়েছিল বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের। স্ত্রী মীরা ভট্টাচার্যের নজরে আসে একটা অস্থিরতা বুদ্ধবাবুর শরীরে। এ অস্থিরতা তাঁর চেনা। তাই সঙ্গে সঙ্গেই পরিচিত বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যেতে চান তিনি। ফোনও করেছিলেন একাধিক জনকে। কিন্তু বুদ্ধবাবুর ইচ্ছা ছিল না।  সে সময়ে স্থির হয়েছিল বৃহস্পতিবার সকালে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হবে। এরপর বৃহস্পতিবার সকালে নির্দিষ্ট সময়েই ঘুম ভাঙে তাঁর। তিনি ওঠেন। স্ত্রীর হাতে ব্রেক ফাস্ট করেন। তারপর চাও খান।  চা খাওয়ার সময়েই আচমকা বিষম খান। আবারও সেই একই অস্থিরতা। শ্বাস নিতে ভীষণ কষ্ট হচ্ছিল তাঁর। দ্রুত ফোন যায় ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের কাছে। ফোন পেয়েই দ্রুত তাঁরা এসে পৌঁছন বাড়িতে। চিকিৎসকদের বুঝতে দেরি হয়নি যে, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছেন বুদ্ধবাবু। তবে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় পেলেন না কেউই। ঘড়ির কাঁটা তখন সবে আটটা পেরিয়ে ২০ মিনিট আরও এগিয়েছে।

কোভিডের আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে একাধিকবার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন বুদ্ধবাবু। জটিল থেকে জটিল হয় পরিস্থিতি। কিন্তু জয় করে ফিরে এসেছিলেন। হাসপাতালে থাকার ব্যাপারে চরম অনীহা বুদ্ধবাবুর।  বুদ্ধবাবু তাই হয়তো এবার আর হাসপাতাল গেলেন না। বাড়িতেই থাকলেন, পাম অ্যাভিনিউয়ের ছোট্ট এক কামরার ঘরেই শেষ নিঃশ্বাসটা পর্যন্ত থাকলেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

four × two =