ওবিসি ইস্যুতে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি আটকাবে না, জানাল কলকাতা হাইকোর্ট

ওবিসি সংরক্ষণ মামলায় আপাতত হস্তক্ষেপ করল না হাইকোর্ট। ওবিসি সংক্রান্ত মামলা সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন থাকায় আপাতত ভর্তির প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করল না হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। এর পাশাপাশি বৃহস্পতিবার বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী ও বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, কলেজবিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে অনলাইন পোর্টালে ভর্তির আবেদন গ্রহণ চলবে। তবে আবেদনপত্রেক্যাটেগরিউল্লেখ করা যাবে না।

পাশাপাশি বিচারপতি তপব্রত চক্রবর্তী ও বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার বেঞ্চ এও জানায়, আপাতত কোনও ক্যাটেগরি ধরে আবেদন গৃহীত হবে না। বিচারপতি মান্থার মন্তব্য, “আবেদন চলুক। যদি সুপ্রিম কোর্ট হস্তক্ষেপ করে, তখন সেই অনুযায়ী দেখা হবে। পুরো ভর্তি প্রক্রিয়া বন্ধ রাখা যুক্তিযুক্ত নয়।বিচারপতিদের এও বক্তব্য, যারা আবেদন করছেন তাদের আবেদন করতে দিন। এখনই তাঁরা কোনও নির্দেশ দেবেন না, কেন সুপ্রিম কোর্ট হস্তক্ষেপ করতে পারে। তাঁদের নির্দেশ খারিজ করে দিতে পারে।

এদিকে এই মামলায হাইকোর্টের হস্তক্ষেপ চেয়ে আবেদনকারী বাঁশরী স্বরাজ ও সুবীর সন্ন্যাল জানান, ১৭ জুন হাইকোর্ট পাঁচটি সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ জারি করেছিল। কিন্তু ৭০ হাজারের বেশি আবেদন ইতিমধ্যেই জমা পড়েছে, এমনকি রাজ্য সরকারি পোর্টালে ওবিসি (এ ও বি) ক্যাটেগরি অনুযায়ী আবেদন নেওয়া হয়েছে। ৬৬টি গোষ্ঠীর ক্ষেত্রে কোনও হস্তক্ষেপ করা হয়নি। নিয়োগের ক্ষেত্রে কোনও হস্তক্ষেপ করা হয়নি। তাঁদের অভিযোগ, এতে আদালতের নির্দেশ লঙ্ঘিত হয়েছে।

উত্তরে রাজ্যের পক্ষ থেকে অ্যাডভোকেট জেনারেল ও আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, রাজ্য ইতিমধ্যেই সুপ্রিম কোর্টে এসএলপি অর্থা স্পেশ্য়াল লিভ পিটিশন দায়ের করেছে। ২৪ জুন উচ্চ শিক্ষা দপ্তরের পোর্টালে তার আপডেট আপলোডও করা হয়েছে। এখনই ভর্তি হয়নি, ফলে কারও অধিকার ক্ষুণ্ণ হয়নি।

এদিকে আবেদনকারীদের যুক্তি, ক্যাটেগরি উল্লেখ থাকলে ভবিষ্যতে আসন সংরক্ষণে জটিলতা তৈরি হবে। একইসঙ্গে তাঁরা এ আশঙ্কাও প্রকাশ করেন, আগামী ৫ জুলাই মেরিট লিস্ট প্রকাশের সময় এতে বিভ্রান্তি তৈরি হতে পারে।

দু পক্ষের বক্তব্য শুনে বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার ডিভিশন বেঞ্চ জানায় স্পষ্ট ভাবে জানান, আপাতত সমস্ত ক্যাটেগরি আবেদন করতে পারবে। তবে সেখানে কোনও ক্যাটেগরি উল্লেখ করা যাবে না। আদালত এই পর্যায়ে বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করছে না। আগামী ৪ জুলাই এই মামলার পরবর্তী শুনানি। 

যদি সুপ্রিম কোর্ট হাইকোর্টের নির্দেশে হস্তক্ষেপ না করে, তখন এই অভিযোগ তোলা যাবে বলে জানিয়েছেন বিচারপতি মান্থা।ওবিসি মামলার শুনানি শুরু কলকাতা হাই কোর্টে। মামলাকারীদের পক্ষ থেকে বলা হয়, ওবিসি শ্রেণিবিন্যাস করে কলেজে ভর্তি নেওয়া হচ্ছে। আদালতের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও ওবিসিএ এবং ওবিসিবি ভাগ করে ভর্তি নেওয়া হচ্ছে। গত ১৭ জুন ওবিসির সাম্প্রতিক তালিকার উপর স্থগিতাদেশ দেয় আদালত। তার পরেও আদালতের নির্দেশ না মেনে ভর্তি নেওয়া হচ্ছে।

বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার ডিভিশন বেঞ্চ মামলা নিয়ে প্রশ্ন তোলে। বিচারপতি মান্থা বলেন, কী ভাবে এই অভিযোগ করছেন? ভর্তি নিয়ে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয় ১২ জুন। আদালতের নির্দেশের পরে শ্রেণিবিন্যাস স্থগিত রাখার হয়েছে। তাঁর বক্তব্য, ‘‘রাজ্য মাঝামাঝি জায়গায় আটকে গিয়েছে। তারা সুপ্রিম কোর্টের দিকে তাকিয়ে আছে। ধরুন, শীর্ষ আদালত আমাদের রায় খারিজ করে দিল। তখন কী হবে? ভর্তি শুরু নিয়ে কী অসুবিধা?’’রাজ্যে এজির দেওয়া নথি ও সওয়ালে আশ্বস্ত হয়েছে আদালত। আদালত অবমাননার অভিযোগে রাজ্যের হলফনামা তলব হাইকোর্টের। ৪ জুলাই মামলার পরবর্তী শুনানি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

20 − fifteen =