অবশেষে গার্ডেনরিচ কাণ্ডে তিন ইঞ্জিনিয়ারকে সাসপেন্ড করল কলকাতা পুরসভা। শনিবার কলকাতা পুরসভায় গার্ডেনরিচ বেআইনি নির্মাণ ভেঙে পড়া কাণ্ডে যে তদন্ত কমিটির রিপোর্ট জমা পড়ে, সেই রিপোর্ট অনুযায়ী শনিবার রাতে কলকাতা পৌরসভার কমিশনার মেয়রের নির্দেশে ১৫ নম্বর বরোর এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার, সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার, অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার, এই তিনজনকে সাসপেন্ড করেন খোদ মেয়র ফিরহাদ হাকিম। শনিবার রাতে এ ব্যাপারে অর্ডারও জারি হয়। কলকাতা পুরসভার সূত্রের খবর, ওই তিনজন আধিকারিকের বিরুদ্ধে একাধিক গাফিলতির অভিযোগ সামনে এসেছে।
গার্ডেনরিচের ঘটনায়যথেষ্টই অস্বস্তিতে ছিল পুর প্রশাসন। এরপরই তদন্ত কমিটির রিপোর্ট হাতে আসার পর শনিবার রাতে এ ব্যাপারে অর্ডার জারি হয়। এদিকে ২২ মার্চ ৭ জনের তদন্ত কমিটি তৈরি করে পুরসভা। এর তিন সপ্তাহ পর সয়েল টেস্ট ও নির্মাণ বিষয়ক একটি রিপোর্ট ছাড়া, বাকি রিপোর্ট তৈরি হয়ে জমা পড়েছে বলে কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর। এদিকে যে রিপোর্ট জমা পড়েছে তাতে জানা গিয়েছে, রেইনফোর্সমেন্ট সিমেন্ট কংক্রিট ঠিক ছিল না। সঙ্গে রাফট ফুটিং অর্থাৎ বিন্দুমাত্র কংক্রিটের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি বাড়িটির ভিতে। এছাড়াও নির্মাণ কাজের ক্ষেত্রে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছিল বলে ওই রিপোর্টে উঠে এসেছে। সঙ্গে এও জানা যাচ্ছে, কোনওরকম স্ট্রাকচারাল ডিজাইন ছাড়াই ওই বহুতলটি নির্মাণ করা হয়েছিল।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞদের মাটি টেস্টেও লোহার রোডের গুণমান জানার জন্য এই কমিটিতে রাখা হয়েছে বলে কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর। তবে এই টেস্ট রিপোর্ট সময় সাপেক্ষ। তবে ২১ দিন পরেও এখনও কেন সয়েল টেস্টের রিপোর্ট এল না, সেটা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
প্রসঙ্গত, গার্ডেনরিচে একটি নির্মীয়মান বাড়ি ভেঙে পড়ে। সেই ঘটনার তদন্তে নেমে উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। দোতলা বাড়ির নির্মাণের ওপর তৈরি হচ্ছিল পাঁচ তলা ভবন। সঙ্গে মাটিরও সমস্যা ছিল। সেই ঘটনায় এলাকার মেয়র ও কাউন্সিলরদের বিরুদ্ধে বেআইনি নির্মাণে মদত দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। কিন্তু প্রথম থেকেই মেয়র কাউন্সিলরের গাফিলতি মানতে নারাজ ছিলেন না। তাঁর বক্তব্য ছিল, বেআইনি নির্মাণ দেখার দায়িত্ব কাউন্সিলরের নয়, বরং সেটা ইঞ্জিনিয়রদের কাজ। মেয়রের সুরে সুর মিলিয়েছিলেন এলাকার কাউন্সিলরও। ২১দিন পর কলকাতা পুরসভার তরফে যে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল, তাদের রিপোর্টে সামনে এল ইঞ্জিনিয়রদেরই গাফিলতির ঘটনাই।