মেট্রোর সঙ্গে তরজা কলকাতা পুরসভার

রেমালের প্রভাব পড়ল কলকাতা মেট্রোতেও। পার্ক স্ট্রিট এবং এসপ্ল্যানেড স্টেশনের মাঝে মেট্রো ট্র্যাকে জল জমে যাওয়ায় সোমবার সপ্তাহের প্রথম কাজের দিনে সকাল থেকে প্রায় কয়েক ঘণ্টা কার্যত থমকে থাকে মেট্রো পরিষেবা। তবে এই সময় মহানায়ক উত্তমকুমার থেকে কবি সুভাষ এবং দক্ষিণেশ্বর থেকে গিরিশ পার্ক পর্যন্ত ট্রেন চলাচল করে। মেট্রো বন্ধ ছিল মহানায়ক উত্তমকুমার থেকে গিরিশ পার্ক পর্যন্ত। মেট্রোর তরফ থেকে জানানো হয়, দুপুর ১২টা ৫ মিনিটে ট্রেন চলাচল শুরু হয়। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে বেলা গড়িয়ে যায় বলেই জানান মেট্রোর নিত্যযাত্রীরা।

এদিকে মেট্রোর পরিষেবা বিঘ্নিত হওয়ার ঘটনায় মেট্রোর তরফে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানান হয়, সকালে প্রবল বৃষ্টির মধ্যে পার্ক স্ট্রিট এবং এসপ্ল্যানেড মেট্রো স্টেশনের মধ্যবর্তী ট্র্যাকে জল জমে যাওয়ার কারণে কারণে সোমবার মেট্রো পরিষেবা ব্যাহত হয়। পার্ক স্ট্রিট মেট্রো স্টেশনের সাবওয়েও প্লাবিত হয়। তবে যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য, প্রথমে কাবি সুভাষ থেকে মহানায়ক উত্তম কুমার স্টেশন এবং দক্ষিণেশ্বর থেকে গিরিশ পার্ক মেট্রো স্টেশনগুলির মধ্যে  পরিষেবা চালানো হয়। পাশাপাশি পাম্পের সাহায্যে ট্র্যাকে জমে থাকা জল সরাতে ঘটনাস্থলে যান মেট্রোর আধিকারিক ও কর্মীরা। কিন্তু সেই সময়ে যেহেতু প্রবল বর্ষণ হচ্ছিল এবং পার্ক স্ট্রিট, ময়দান এবং এসপ্ল্যানেডের আশেপাশের এলাকাগুলি জলের তলায় ছিল, তাই সেই সময়ে ট্র্যাকবেড থেকে জল পাম্প করতে তাঁদের অসুবিধার সামনে পড়তে হয়৷। তা সত্ত্বেও, মেট্রো কর্মীরা ট্র্যাকবেড থেকে জল বের করতে সক্ষম হন এবং পরিস্থিতির ধীরে ধীরে উন্নতি হতে থাকে। পরিস্থিতি ধীরে ধীরে উন্নতি হওয়ায় কবি সুভাষ থেকে ময়দানের মধ্যে সংক্ষিপ্ত পরিষেবাগুলি সকাল ১০টা ২১ থেকে শুরু হয়। অবশেষে ব্লু লাইনের পুরো অংশে স্বাভাবিক মেট্রো পরিষেবা শুরু হয় বেলা ১২টা ০৫ থেকে।  এই প্রসঙ্গে মেট্রো কর্তৃপক্ষ আরও জানানো হয় যে, এর পরে, মেট্রো আধিকারিক এবং প্রকৌশলীরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং তাঁদের নজরে আসে সম্প্রসারণ জয়েন্টের আশেপাশে পার্ক স্ট্রিট স্টেশনে সাবওয়ের শীর্ষের কাছে কেএমসি পয়ঃনিষ্কাশন লাইনে ফুটো রয়েছে। তারই জেরে, পার্ক স্ট্রিট মেট্রো স্টেশনে ডি-ওয়াল নির্মাণ বা সম্প্রসারণ জয়েন্টের মাধ্যমে প্রচুর পরিমাণে জল ঢোকে। এক্ষেত্রে কলকাতা পুরসভার নিকাশি ব্যবস্থায় লিকেজের কারণেই এমন ঘটনা ঘটে বলে দাবি মেট্রো কর্তৃপক্ষের। ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘটনা এড়াতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে বলে জানানো হয়  মেট্রো কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে।

পাল্টা মেট্রোর এই দাবি পুরোপুরি খারিজ করে দেন কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ (নিকাশি) তারক সিং। কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ (নিকাশি) তারক সিং। তিনি বলেন, ‘এটা সম্পূর্ণ বাজে কথা। ইতিহাসে প্রথম এত বৃষ্টি হল কলকাতায়। ঘণ্টায় ১৫০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। সাড়ে ৩ হাজার মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে কলকাতায়। গড়ে দেড়শ মিলিমিটার। কলকাতা শহরটা তো আমাদেরও। আমরা কি চাইব মেট্রোতে জল ঢুকে যাক? ওরা যদি প্রমাণ করতে পারে আমাদের লিকেজের জন্য হয়েছে, তাহলে যে টাকা ওদের ক্ষতি হয়েছে সব দিয়ে দেব। প্রমাণ করুক, নয়তো ক্ষমা চেয়ে নিক।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

twelve − 7 =