কলকাতা-বাংলাদেশের মধ্য়ে মোবাইল ফোন পাচার চক্রের হদিশ পেল কলকাতা পুলিশ

পার্থ রায়

 

কলকাতা থেকে বাংলাদেশে মোবাইল ফোন পাচার চক্রের হদিশ পেল কলকাতা পুলিশ। আর এই পাচার চক্রে য়ুক্ত থাকার ঘটনায় গ্রেফতারও করা হল দুজনকে।  কলকাতা পুলিশ সূত্রে খবর, ব‌্যবসার ভিসা নিয়ে এসে প্রায় পাঁচ বছর ধরে কলকাতায় বসে এই কারবার চালাচ্ছিল এক বাংলাদেশি। ভোট আবহে শহরজুড়ে উদ্ধার অভিযানে এই পাচারচক্রের হদিশ পায় পুলিশ। উদ্ধার হয় ১৭৪টি ফোন। লালবাজার সূত্রে খবর, ভোটের আগে বেআইনি টাকা ও অস্ত্রের সন্ধান করতে গিয়ে নাকা চেকিংয়ে ১২৪টি চোরাই মোবাইল উদ্ধার করে পুলিশ। গ্রেফতার করা হয় চোরাই মোবাইল সিন্ডিকেটের মাথা খিদিরপুরের জয়নাল আবেদিনও। তাকে জেরা করেই রবীন্দ্র সরণির একটি হোটেলে তল্লাশি চালিয়ে পুলিশ জামিল হুসেন নামে এক বাংলাদেশিকে গ্রেফতার করে। তার কাছ থেকে উদ্ধার হয় আরও ৫০টি মোবাইল। মোট এই ১৭৪টি মোবাইল চোরাই বলেই ধারণা পুলিশের।

পুলিশ জানিয়েছে, মধ‌্য কলকাতার বউবাজার এলাকার সেন্ট্রাল অ‌্যাভিনিউ দিয়ে অ‌্যাপ বাইকের পিছনে চড়ে যাচ্ছিল এক ব‌্যক্তি। তার হাতে ছিল নাইলনের ব‌্যাগ। সন্দেহের বশে নির্বাচন কমিশন ও পুলিশের স্ট‌্যাটিক সার্ভেলান্স টিম বাইকটিকে দাঁড় করিয়ে ব‌্যাগে তল্লাশি চলায়। তাতেই ধরে পড়ে মোবাইলগুলো। কিন্তু কোথায় ও কী কারণে মোবাইলগুলো নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, সেই সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়। কোনও নথি দেখাতে না পারলেও সে জানায় ওই মোবাইলগুলো জোড়াসাঁকো এলাকার কলুটোলায় নিয়ে যাচ্ছে সে। সেখানেই এক ব‌্যক্তি তার জন‌্য অপেক্ষা করছে। এবার তাকে দিয়েই ফাঁদ পাতেন পুলিশ আধিকারিকরা। এরপর জামিল হুসেন নামে এক বাংলাদেশিকে কলুটোলা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাকে সঙ্গে নিয়ে রবীন্দ্র সরণির হোটেলে তল্লাশি চালিয়ে উদ্ধার হয় আরও ৫০টি মোবাইল।

জেরার মুখে বাংলাদেশের ঢাকার হাজারিবাগ রোডের বাসিন্দা ৬৪ বছর বয়সের জামিল হুসেন জানায়, গত পাঁচ বছর ধরে সে কলকাতার ওই হোটেলেই রয়েছে। প্রথমে কলকাতার বাজার থেকে বিভিন্ন জিনিস কিনে বাংলাদেশে পাঠিয়ে বিক্রি করত সে। ক্রমে তার সঙ্গে মধ‌্য কলকাতার এক ব‌্যক্তির মাধ‌্যমে শহরের চোরাই মোবাইল সিন্ডিকেটের পরিচয় হয়। সিন্ডিকেটের সদস‌্য জয়নাল আবেদিন ও আরও কয়েকজন তাকে দামী মোবাইল সরবরাহ করতে থাকে। জামিল সেগুলো কম দামে কিনে চড়া দামে বাংলাদেশে পাচার করত। বাংলাদেশের চোরাই মোবাইলের সিন্ডিকেট সেগুলো কিনত। লাভের অংশ সে হাওলার মাধ‌্যমে ঢাকায় নিজের বাড়িতে পাঠিয়ে দিত। ওই চোরাই মোবাইল বাংলাদেশের জঙ্গি সংগঠন ও দুষ্কৃতীদের হাতেও পৌঁছেছে বলে ধারণা পুলিশের। ধৃতদের জেরা করে চোরাই মোবাইল সিন্ডিকেটের বাকি সদস‌্যদের সন্ধান চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

3 × three =