আর্জেন্টিনা-১ ভারত-১
(লুকাস ২২) (হরমনপ্রীত ৫৮)
নিউজিল্যান্ড ম্যাচের অ্যাকশন রিপ্লে। অলিম্পিকের প্রথম ম্যাচেও পিছিয়ে ছিল ভারত। সেখান থেকে ২ মিনিট বাকি থাকতে পেনাল্টি কর্নার থেকেই জয় তুলে আনেন হরমনপ্রীত সিং। আর্জেন্টিনার বিরুদ্ধেও সেই একই কাজ করলেন ভারতের ক্যাপ্টেন। শুরু থেকে বলা হচ্ছে, হরমনপ্রীত যদি ফর্মে থাকেন, তা হলে পদকের স্বপ্ন দেখা যেতে পারে। কারণ, পেনাল্টি কর্নার যে টিম ভালো মারে, তাদেরই পদক জেতার সম্ভাবনা বেশি থাকে। ভারত কিন্তু হরমনপ্রীতের কারণেই এ বারের অলিম্পিকের পদক জয়ের অন্যতম দাবিদার।
নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধেও ভারত শুরুতে পিছিয়ে পড়েছিল। কিন্তু অলিম্পিকের ওই প্রথম ম্যাচ জিতেছিল ভারতীয় হকি টিম। তার পিছনে একটাই কারণ ছিল মিডফিল্ডের চমৎকার পারফরম্যান্স। আর্জেন্টিনার বিরুদ্ধেও তেমনটাই করে দেখাতে হত। কিন্তু ভারতীয় মিডিও আগের ম্যাচের মতো খেলতে পারল না। মনপ্রীত, হার্দিক, সামশের সিংরাও নজর কাড়তে পারেননি। খেলা তৈরি করতে পারেননি। দুটো প্রান্তে খেলা ছড়াতে পারেননি। যে কারণে চাপ কখনওই আর্জেন্টিনার উপর ছিল না। অবশ্য শেষ কোয়ার্টারে অন্য রকম খেলেছে ভারতীয় টিম। আগ্রাসন, ক্রমাগত চাপ তৈরি করা, বিপক্ষের বক্সে ঢুকে পড়া— হরমনপ্রীতের ভারতের বিশেষত্ব। ভারত এটা ধরেই পদকের কাছে পৌঁছতে চাইছে।
৫৮ মিনিট পর্যন্ত ০-১ পিছিয়ে ভারত। পেনাল্টি আসছে ঠিকই, কিন্তু কাজে লাগাতে পারছেন না। উল্টে ২২ মিনিটে ১-০ করে যান আর্জেন্টিনার লুকাস মার্তিনেজ। ভারতীয় টিম অবশ্য লড়াই থেকে কখনও হারায়নি। শেষ মিনিটের খেলা অবশ্য উত্তেজনার চরমে উঠেছিল। আর্জেন্টিনার দুই রেইসার যেন চিনের প্রাচীর হয়ে উঠেছিলেন। একের পর এক পেনাল্টি কর্নার মেরে চলেছেন হরমনপ্রীত সিং। আর বারবার থামিয়ে দিচ্ছেন দুই রেইসার। শেষ পর্যন্ত পারলেন না। হরমনপ্রীত পেনাল্টি কর্নার থেকেই ১-১ করে গেলেন। অবশ্য তার আগে যে সব সুযোগ এসেছিল, কাজে লাগাতে পারলে কিন্তু এই ম্যাচও জিততে পারত ভারত। ২ ম্যাচে ভারতের পয়েন্ট ৪। শীর্ষে বেলজিয়াম ও অস্ট্রেলিয়া। তাদের পয়েন্ট ৬। পুল বি কার্যত গ্রুপ অফ ডেথ। টোকিও গেমসের তিন পদকজয়ী টিমই এই গ্রুপে। জার্মানির মতো কঠিন টিমকে এড়ানোর জন্য গ্রুপ লিগে শীর্ষে থাকতে হবে ভারতকে। পরের তিনটে ম্যাচ আরও কঠিন ভারতের কাছে।
অলিম্পিকের ইতিহাস যতই উজ্জ্বল হোক না কেন, সাফল্য বলতে একবারই, সেই ২০১৬ সালের রিওতে। সে বারই চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল আর্জেন্টিনা। আরও ভালো করতে বললে, ওই সময় থেকেই মেসির দেশের হকি চমকে দিয়েছিল। কিন্তু ভারতের বিরুদ্ধে বরাবরই অলিম্পিকে পিছিয়েই থেকেছে তারা। ১০বার মুখোমুখি হয়েছে দুই দেশ। ভারত জিতেছে ৮বার। মাত্র একবারই জিতেছে আর্জেন্টিনা। প্যারিস অলিম্পিকে জয়ের ধারা ভারত ধরে রাখতে পারেনি ঠিকই, তবে হারেওনি। অলিম্পিকের ২০০৪ সালে ২-২ ড্র করেছিল ভারত। ২০ বছর পর আবার ড্র দেখা গেল দুই দেশের।