চিড়িয়াখানায় বিস্তর গরমিল প্রাণীর সংখ্যা নিয়ে, মামলা দায়ের আদালতে

কলকাতার ঐতিহ্যবাহী আলিপুর চিড়িয়াখানাকে ঘিরে সামনে আসছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর অভিযোগ। আর এই অভিযোগ সামনে এনেছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনস্বজন শুধু অভিযোগই নয়, এই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন  এ ব্যাপারে কলকাতা হাইকোর্টে একটি মামলাও দাযের করেছে। এই মামলায় তাদের তরফের বক্তব্য, ২০২৩২৪ অর্থবর্ষের শেষে চিড়িয়াখানার প্রাণীসংখ্যা ছিল ৬৭২টি। কিন্তু ২০২৪২৫ অর্থবর্ষের শুরুতেই সেই সংখ্যা নেমে আসে ৩৫১এ। অর্থাৎ মাত্র এক রাতেই উধাও হয়ে গেছে ৩২১টি প্রাণী।

এর পাশাপাশি অপর একটি সূত্র মারফত্ এও জানা যাচ্ছে, ১৯৯৫৯৬ সাল থেকে টানা ৩০ বছর ধরে চিড়িয়াখানার প্রাণীসংখ্যার বার্ষিক রিপোর্টে রয়েছে একাধিক অসঙ্গতি।কখনও কয়েকটি, কখনও শতাধিক প্রাণী হঠাৎ কমে বা বেড়ে গেছে। এমনকি ২০২১২২ এবং ২০২২২৩ অর্থবর্ষের ইনভেন্টরি রিপোর্ট জমা পড়েনি, যদিও তা বাধ্যতামূলক। এ বিষয়ে চিড়িয়াখানার অধিকর্তা অরুণ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘ওই বিষয়টিতে আমাদের কাজ চলছে। পরে বিস্তারিত বলা যাবে।

এই প্রসঙ্গেই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনস্বজন’-র দাবি, প্রাণীসংখ্যা কমানোর পেছনে রয়েছে গভীর ষড়যন্ত্র। অভিযোগ, আলিপুর চিড়িয়াখানার ৩৪এ, বেলভেডিয়ার রোডের প্রায় ৩ একর জমি বাণিজ্যিক ব্যবহারের জন্য বিক্রির প্রক্রিয়া চলছে। অথচ এই জমিতেই রয়েছে চিড়িয়াখানার ভেটেরিনারি হাসপাতাল, রেসকিউ সেন্টার এবং পাবলিক অ্যাকোয়ারিয়াম।

এই মামলার পরবর্তী শুনানি বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই কলকাতা হাইকোর্টে। এনজিওর দাবি, গত ১০ বছরের ইনভেন্টরি রিপোর্ট জমা দিতে এবং সমস্ত গরমিলের ব্যাখ্যা দিতে যেন চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষকে আদালত নির্দেশ দেয়। এখন নজর হাইকোর্টের রায়ের দিকে।

এই অভিযোগের প্রসঙ্গ তুলেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও। জানা গেছে, জমির একাংশে রয়েছে একটি অ্যাকোয়ারিয়াম, অডিটোরিয়াম, পশু হাসপাতাল, নার্সারি এবং স্টাফ কোয়ার্টার। অডিটোরিয়াম ও কোয়ার্টারের অবস্থা ভালো না হলেও, সেই জমি বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয়েছে বলে দাবি মামলাকারীর। জুন মাসেই এই অভিযোগে কলকাতা হাইকোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছিল। বিচারপতি সৌমেন সেনের ডিভিশন বেঞ্চ মামলা দায়ের করার অনুমতিও দেয় এবং দ্রুত শুনানির আবেদন করা হয়। মামলাকারীর প্রশ্ন, সুপ্রিম কোর্ট আগে এ বিষয়ে স্পষ্ট নির্দেশিকা দিয়েছিল। তা অমান্য করে কীভাবে জমি বিক্রি করা হচ্ছে ইতিমধ্যেই টেন্ডার ডাকা হয়েছে।
এই প্রসঙ্গে বলে রাখা শ্রেয়, দেশজুড়ে ১৫৭টি স্বীকৃত চিড়িয়াখানার মধ্যে আলিপুর অন্যতম। একসময়লার্জ জুহিসেবে নথিভুক্ত থাকলেও প্রাণীসংখ্যা কমে যাওয়ায় এখন এটিমিডিয়াম সাইজ জু প্রাণী নিখোঁজের এই অভিযোগে প্রশাসনিক অস্বচ্ছতা এবং সম্ভাব্য পাচারের ইঙ্গিত ঘিরে তোলপাড় শহর কলকাতা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

eight + four =