কসবার গণধর্ষণ কাণ্ডে হাইকোর্টের পর মামলা দায়ের সুপ্রিম কোর্টেও

কসবার গণধর্ষণকাণ্ডে কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের হল একাধিক জনস্বার্থ মামলা।  সেই সঙ্গে দ্রুত শুনানির আবেদনও জানিয়েছেন মামলাকারীরা। হাই কোর্টের বিচারপতি সৌমেন সেন এবং বিচারপতি স্মিতা দাসের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, দৃষ্টি আকর্ষণের প্রয়োজন নেই। ওই বিষয়ে সকল মামলা দায়ের করে বিপরীত পক্ষকে নোটিস দেওয়া হোক। তার পরে শুনানি চেয়ে আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করুন আইনজীবীরা। আগামী বৃহস্পতিবার এই মামলাগুলির শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে। 

প্রসঙ্গত, কসবার আইন কলেজে  আইনের ছাত্রীকে গণধর্ষণের ঘটনায় গত শনিবার কলকাতা হাইকোর্টের  দ্বারস্থ হয়েছিলেন একাধিক আইনজীবী। হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতিকে  চিঠি লিখে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের আর্জি জানানো হয়েছিল।  পুলিশি তদন্তে হাইকোর্টের নজরদারি চেয়ে সোমবারও নতুন করে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে। কলকাতা হাইকোর্টে কসবা কাণ্ডে দায়ের হওয়া সবকটি মামলার শুনানি আগামী বৃহস্পতিবার হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। উল্লেখ্য কসবা লকলেজ গণধর্ষণ কাণ্ডে ইতিমধ্যেই রাজ্যের রাজনীতি উত্তাল। অভিযুক্ত মনোজিত মিশ্র ও তার সঙ্গীদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ, যৌন নির্যাতন, অপরাধমূলকষড়যন্ত্রসহএকাধিকধারায়মামলারুজুহয়েছে।পাশাপাশি মূল অভিযুক্ত আগেও য়ে অপরাধ মূলক কাণ্ড ঘটিয়েছে সে ব্যাপারেও তথ্য হাতে পেয়েছে পুলিশ।

কসবার সাউথ ক্যালকাটা লকলেজের ঘটনা নিয়ে তদন্তের আর্জি জমা পড়ে সুপ্রিম কোর্টেও। শীর্ষ আদালতেও  সত্যম সিংহ নামে এক আইনজীবী আর্জি জানান, তাদেরই  নজরদারিতে সিবিআই তদন্তের। আর্জিতে তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিধায়ক মদন মিত্রর বিতর্কিত মন্তব্যেরও উল্লেখ করা হয়েছে। এই দুই রাজনৈতিক নেতার বক্তব্যের কারণে তদন্ত প্রক্রিয়ার ওপর প্রভাব পড়তে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়। পাশাপাশি কসবা কাণ্ডে নির্যাতিতা ও তাঁর পরিবারের নিরাপত্তা এবং ওই তরুণীর জন্য আর্থিক সাহায্যের দাবিও জানানো হয়েছে। জানা যাচ্ছে  আবেদনকারীকে ইতিমধ্যে মামলা দায়েরের অনুমতিও দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।

এই প্রসঙ্গে আইনজীবী সত্যম সিংহের দাবি, রাজ্য পুলিশের তদন্তে নিরপেক্ষতা নেই। তাই নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে সরাসরি সিবিআইএর হাতে তদন্তের দায়িত্ব তুলে দেওয়া হোক। সত্যম সিংহ তাঁর আর্জিতে লিখেছেন, ‘এই ঘটনা রাজ্যবাসীকে স্তম্ভিত করেছে। এক কলেজ পড়ুয়া ছাত্রীকে কলেজ ক্যাম্পাসের মধ্যেই দিনের আলোয় যেভাবে টেনে নিয়ে গিয়ে শারীরিক নির্যাতন চালানো হয়েছে, তা চূড়ান্তভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন ছাড়া আর কিছুই নয়। এই মামলার সুষ্ঠু তদন্ত অত্যন্ত জরুরি।একইসঙ্গে এই আর্জিতে আরও জানানো হয়,  নির্যাতিতার পরিবার বর্তমানে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। তাই অবিলম্বে তাঁদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হোক। একইসঙ্গে নির্যাতিতার মানসিক স্বাস্থ্য পুনর্বাসনের জন্য বিশেষজ্ঞদের সাহায্য এবং পর্যাপ্ত আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেওয়া হোক।একইসঙ্গে সত্যম সিংহ রাজ্য পুলিশের তদন্ত সম্পর্কেও জানান,  রাজ্য পুলিশ ইতিমধ্যেই প্রভাবিত। অভিযুক্তদের রাজনৈতিক যোগাযোগ রয়েছে। তাই দ্রুত সিবিআই তদন্ত ছাড়া প্রকৃত সত্য প্রকাশ অসম্ভব।  এদিকে শীর্ষ আদালত সূত্রে খবর, এই আর্জির শুনানি খুব শীঘ্রই হতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

one × 4 =