সোমবার সন্ধ্যায় সিবিআই গ্রেফতার করে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে। গত ১৬ অগাস্ট থেকে টানা ১৫ দিন সিবিআই জেরা করে সন্দীপকে। সোমবার ফের তাঁকে তলব করা হয় সিজিও কমপ্লেক্সে। সন্ধ্যায় সেখান থেকে সিবিআই আধিকারিকেরা সন্দীপকে নিয়ে যান নিজাম প্যালেসে। তারপরেই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তরফে জানানো হয়, সন্দীপ ঘোষকে গ্রেফতার করা হয়। সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, আর্থিক দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষকে। সোমবার সন্ধ্যায় শুধু সন্দীপ ঘোষ নন, সিবিআই গ্রেফতার করে আরও ৩ জনকে যাঁরা আরজি কর হাসপাতাল এবং সন্দীপের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। তাঁরা হলেন বিপ্লব সিং, সুমন হাজরা এবং আফসার আলি।
আর্থিক দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্ত আফসার আলি আরজি কর হাসপাতালে কাজে যোগ দিয়েছিলেন অ্যাডিশনাল সিকিউরিটির পদে। কিন্তু অভিযোগ, তাঁকে কখন-ও নির্দিষ্ট পোশাকে দেখা যায়নি। আরজি করের বিভিন্ন মহলের দাবি, তিনি সন্দীপের ‘ব্যক্তিগত দেহরক্ষী’ হিসাবেই কাজ করতেন। এখানেই শেষ নয়, ৪০ লক্ষ টাকার গাড়ি চেপে হাসপাতালে আসতেন ‘অ্যাডিশনাল সিকিউরিটি’ আফসার। অভিযোগ, আফসার আলিকে বেআইনি ভাবে ক্যাফে-ক্যান্টিন ও পার্কিং টেন্ডার পাইয়ে দিয়েছিলেন সন্দীপ ঘোষ, যা থেকে সিন্ডিকেট করে প্রচুর অর্থ আসত। তদন্তে দেখা যায় আফসার আলির আয় ও ব্যয়ের মধ্যে আকাশপাতাল ফারাক এবং তার সমর্থনে কোন-ও নথি দেখাতে পারেননি আফসার। এরপরেই তাঁকে গ্রেফতার করে সিবিআই। জানা যায়, আফসার বেলগাছিয়ার বাসিন্দা। সূত্রের খবর, আরজি করের প্রশাসনিক ভবনের সামনে একটি ‘ক্যাফে’ চালান আফসারের স্ত্রী। একাংশের অভিযোগ, সেটিও বেআইনি ভাবে পাওয়া। আফসারের ভাই আরজি কর হাসপাতালেই ‘বেআইনি’ পার্কিং চালান বলেও অভিযোগ। সোমবার গ্রেফতার হওয়া বাকি দু’জন হলেন বিপ্লব সিং ও সুমন হাজরা। সূত্রের দাবি, হাসপাতালের প্রতিটি জিনিস-ই সরবরাহ হত বিপ্লব এবং সুমনের সংস্থা থেকে। বিপ্লব সিং-এর সংস্থার নাম ‘মা তারা টেডার্স’, এই সংস্থাকে বেআইনি ভাবে টেন্ডার পাইয়ে দিত সন্দীপ। সুমন হাজরার দোকানের নাম ‘ হাজরা মেডিক্যাল’। হাওড়ার এই দোকান থেকেই আরজি কর-এ সমস্ত মেডিক্যাল সামগ্রী আসত। বেআইনি ভাবে বরাত দিয়েছিলেন সন্দীপ।