আরজি কর মামলায় রাজ্য সরাসরি পক্ষ না থাকলেও শিয়ালদহ আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে মামলা কোন ভিত্তিতে তা নিয়ে হাইকোর্টে রাজ্যের করা আবেদনকে চ্যালেঞ্জ করল সিবিআই। আদৌ রাজ্যের আবেদন গ্রহণযোগ্য কিনা, তা নিয়েও বুধবার প্রশ্ন তুলতে দেখা গেল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে। আদালত সূত্রে খবর, আগামী সোমবার এ নিয়ে শুনানি হবে হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শব্বর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চে।
এদিন হাইকোর্টে রাজ্যের করা মামলার গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সিবিআইয়ের আইনজীবী বলেন, মামলার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত তিন পক্ষ পরিবার, সিবিআই কিংবা দোষী হাই কোর্টের দ্বারস্থ না হলে, রাজ্য কীভাবে এই আবেদন করতে পারে তা নিয়েও এদিন প্রশ্ন ওঠে। এদিন বিচারপতি দেবাংশু বসাকও প্রশ্ন করেন, আপনাদের মতে উপযুক্ত সাজা দেওয়া হয়নি এই অভিযোগে কারা কারা মামলা করতে পারেন তা নিয়েও। এদিকে এদিন রাজ্যের আইনজীবী জানান, এক্ষেত্রে পরিবার, রাজ্য, সিবিআই এবং অভিযুক্ত, চার পক্ষই মামলা করতে পারে। সিআরপিসি ৩৭৭ এবং ৩৭৮ ধারা অনুসারে রাজ্য সরকার আবেদন করতে পারে। রাজ্যের মামলা করার পক্ষে অ্যাডভোকেট জেনারেলের বক্তব্য, তদন্ত এবং আইনশৃঙ্খলা রাজ্যের বিষয়। আরজি কর কাণ্ডের মামলাটি প্রথমে রাজ্যের পুলিশ তদন্ত করেছিল। পরে সেটি সিবিআইয়ের হাতে যায়। তাই রাজ্য মামলা করতেই পারে।
এরই প্রেক্ষিতে বিচারপতি এদিন প্রশ্ন করেন, ‘পরিবার আদালতের বাইরে কী মতামত প্রকাশ করছেন সেটা নিয়ে আমাদের কিছু বলার নেই, কিন্তু তাঁদের ছাড়া কি এই বিচারপ্রক্রিয়া চালানো সম্ভব? আমরা যদি পরিবার কী ভাবছে সেটা জানতে চাই, তাহলে কি আপনাদের কোনও অসুবিধা আছে? আমরা তাঁদের বক্তব্যও শুনতে চাই।’ এদিকে আদালত সূত্রে খবর, রাজ্যের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, এই ইস্যুতে কোনও আপত্তি নেই। এরপর বিচারপতি প্রশ্ন করেন, পরিবার এই মামলার কথা জানে কি না তা নিয়ে। তাতে রাজ্য জানায়, পরিবারকে মামলার বিষয়ে জানানো হয়নি। বুধবারের মধ্যে পরিবারকে জানানো সম্ভব কিনা সেটাও জানতে চায় আদালত। তাতে রাজ্য সম্মতি জানিয়ে বলে বুধবারের মধ্যেই পরিবারকে জানানো সম্ভব। এই প্রসঙ্গে রাজ্যের আইনজীবীরা এও জানান, এই রায়ের কপি রাজ্যের হাতে নেই। শিয়ালদহ আদালত থেকে মাত্র তিনজনকে সার্টিফায়েড কপি দেওয়া হয়েছে, সিবিআই, পরিবার এবং অভিযুক্ত। অনলাইনে যে নির্দেশনামা আপলোড করা হয়েছে তার ভিত্তিতে এই মামলা করা হয়েছে। অপরাধীকে রাজ্যের লিগ্যাল এইডের তরফে আইনজীবীও দেওয়া হয়েছে। আদালত জানায়, সোমবার মামলার পরবর্তী শুনানি। সেদিনই এই মামলার গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে।