ইডি-র পর সিবিআই অভিযান রাজ্যজুড়ে

ইডি-র পর এবার সিবিআই অভিযান। রবিবার সকাল প্রায় সকাল ৬ টা থেকেই বেরিয়ে পড়ে সিবিআই-এক একাধিক টিম। সোজা পৌঁছে যায় রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায়। কলকাতা ও আশপাশের জেলা মিলিয়ে ১২ টি জায়গায় তল্লাশি চালানো হয় বলে সিবিআই সূত্রে খবর। যাঁদের বাড়িতে তল্লাশি চলে সেই তালিকায় নাম রয়েছে রাজ্যের পুরমন্ত্রী তথা মেয়র ফিরহাদ হাকিম ও কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্রের বাড়িও। সিবিআই-এর তরফে জানানো হয়েছে, ডিপিএসসি অর্থাৎ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ ও পুরসভার নিয়োগ ঘিরে যে দুর্নীতির অভিযোগ সামনে এসেছে, তারই তদন্তে তল্লাশি চালানো হয়।

এদিকে সিবিআইয়ের তরফ থেকে জানানো হয়, মোট ১২ টি জায়গায় তল্লাশি চালানো হয় এদিন। এর মধ্যে রয়েছে কলকাতা, কাঁচড়াপাড়া, ব্যারাকপুর, হালিশহর, দমদম, নর্থ দমদম, কৃষ্ণনগর, টাকি, কামারহাটি, চেতলা ও ভবানীপুর। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী যে তদন্ত হচ্ছে, তার ভিত্তিতেই এই তল্লাশি চালানো হয় বলে দাবি সিবিআই-এর। সঙ্গে এও জানানো হয়, কামারহাটি, বরাহনগর, হালিশহর, দমদম সহ রাজ্যের ৬০টি পুরসভায় গ্রুপ সি এবং ডি সহ একাধিক পোস্টে বেআইনি ভাবে নিয়োগের যে অভিযোগ উঠে এসেছে তার গোটা বিষয়টা সামনে আসে সামান্য একটা ডাস্টবিন থেকে৷ শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে তল্লাশি করতে গিয়ে অন্যতম অভিযুক্ত অয়ন শীলের সল্টলেকের অফিসের ডাস্টবিন থেকে উদ্ধার হয়েছিল পুর নিয়োগ সংক্রান্ত ওএমআর শিট সহ আরও নানা গুরুত্বপূর্ণ নথি। সেই সূত্র ধরেই এদিনের এই অভিযান শাসকদলের দুই হেভিওয়েটের বাড়িতে। এছাড়াও প্রাক্তন পুরপ্রধান অংশুমান রায়ের বাড়ি, উত্তর দমদম পুরসভার প্রাক্তন পুর প্রধান সুবোধ চক্রবর্তীর বাড়ি, টাকির চেয়ারম্যান সোমনাথ মুখোপাধ্যায়ের বাড়ি, দমদম পুরসভার পুরপ্রধান হরেন্দ্র সিংয়ের বাড়িতেও হানা দেয় সিবিআইয়ের দল। এছাড়াও নিউ ব্যারাকপুর পুরসভার প্রাক্তন পুরপ্রধান তৃপ্তি মজুমদারেরও বাড়িতে তল্লাশি অভিযান করে সিবিআই। ২০১৪ থেকে ২০১৭ সালে পুরসভার গ্রুপ ডি ও গ্রুপ সি- নিয়োগে একাধিক বেনিয়ম নজরে এসেছে বলে অভিযোগ। সেই দুর্নীতির তদন্তে জেলার একাধিক পুরসভার প্রাক্তন ও বর্তমান পুরপ্রধানের বাড়িতে হানা কেন্দ্রীয় সংস্থার। নিউ ব্যারাকপুর পুরসভার প্রাক্তন পুরপ্রধান তৃপ্তি মজুমদার ২০১৬ – ২০২০ সাল পর্যন্ত পুরপ্রধান ছিলেন। তাই নিয়োগ দুর্নীতিতে নিশানায় তিনি। কাঁচরাপাড়া পুরসভার পুরপ্রধান সুদমা রায়ের বাড়িতে রীতমতো আলমারির চাবি না পেয়ে তা ভেঙে নথির খোঁজে তল্লাশি চালানো হয় বলে অভিযোগ।

প্রসঙ্গত, পুরসভার এই দুর্নীতিতে মূলত ডিপিএসসি অর্থাৎ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ ও পুরসভাগুলির নিয়োগের ক্ষেত্রে একটি বিশেষ সংস্থাকেই বরাত দেওয়া হত বলে অভিযোগ। নিয়োগের পরীক্ষার সব ব্যবস্থাও করত ও সংস্থা। ওএমআর শিট তৈরি, প্রিন্ট করা, স্ক্যান করা থেকে শুরু করে পরীক্ষার পর মেরিট লিস্ট তৈরি করার মতো কাজও ওই সংস্থাই করত। এই ঘটনায় নাম সামনে আসছে ওই সংস্থার ডিরেক্টর ও বেশ কয়েকজন নেতার। শুধু তাই নয়, এই সংস্থার মাধ্যমেই নিয়োগে বেনিয়ম হয়েছে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই এই তল্লাশি চালানো হয় বলে সিবিআই সূত্রে খবর।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

eighteen + 20 =