আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে তরুণী চিকিৎসক ধর্ষণ ও খুনের মামলায় শিয়ালদহ আদালতে ষষ্ঠ স্ট্যাটাস রিপোর্ট জমা দিল সিবিআই। এই রিপোর্ট জমা পড়ার পরে ফের ক্ষোভ উগরে দিতে দেখা গেল নির্যাতিতার পরিবারের আইনজীবীকে। এদিকে আদালত সূত্রে খবর, বুধবার শিয়ালদহ আদালতে সিবিআই জানায়, ১০ জুন থেকে ১৬ জুলাইয়ের মধ্যে নতুন করে সাত জনের বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে। ৩২টি সিসিটিভি ফুটেজ পুনরায় খতিয়ে দেখা হয়েছে। তদন্ত এখনও বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের দিকেই এগোচ্ছে।
সিবিআইয়ের এই দাবির প্রেক্ষিতে নির্যাতিতার পরিবারের আইনজীবী ফিরোজ এডুলজি প্রশ্ন তোলেন, কলকাতা পুলিশের তদন্ত যেখানে শেষ হয়েছিল, সিবিআইও কি সেখানে আটকে আছে কি না তা নিয়ে। পাশাপাশি তিনি এও এ প্রশ্নও তোলেন, তদন্তে আর নতুন কোনও তথ্যই উঠে এসেছে কি না তা নিয়েও। পাশাপাশি এ প্রশ্ন করতে দেখা যায়, যাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে এখনও পর্যন্ত চার্জশিট কেন দেওয়া গেল না সে ব্যাপারেও।
তবে এদিন যে প্রশ্ন আদালতে আলোড়ন তোলে তা হল, তৎকালীন পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল এবং সিবিআইয়ের সিনিয়র অফিসার সম্পত মীনার ‘ব্যাচমেট’ হওয়া নিয়ে। আর এখানেই নির্যাতিতার পরিবারের দাবি, ব্যাচমেট সম্পত মীনা কি নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করতে পারবেন কি না সে ব্যাপারেও।
তবে নির্যাতিতার পরিবারের এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে সিবিআইয়ের স্পেশাল পিপি জানান, ‘ব্যাচমেট হওয়া কোনও অপরাধ নয়। তবে বিনীত গোয়েলের বিরুদ্ধে কোনও অপরাধে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়নি।’
সিবিআইয়ের দাবি, অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়ের ডিএনএ নমুনা মিলেছে। বাইকের ট্রাফিক ফুটেজও খতিয়ে দেখা হয়েছে। এদিকে এদিন নির্যাতিতার পরিবারের পক্ষের আইনজীবী পাল্টা প্রশ্ন করে জানতে চান, ‘ওই রাতে হাসপাতালে যে চারজন চিকিৎসক ছিলেন, তাদের কেন সিবিআই হেফাজতে নেয়নি? দুই–তিনটি বিকল্প রাস্তাও ছিল। শুধুমাত্র একটিমাত্র সিসিটিভি ফুটেজের উপর ভরসা করা হচ্ছে কেন?’
এই প্রসঙ্গে আদালত জানতে চায়, তদন্ত কতদূর এগোল, কী অগ্রগতি হয়েছে। সিবিআই জানায়, সব মিলিয়ে ৩২টি ফুটেজ পরীক্ষা করা হয়েছে। সন্দেহভাজনদের লাই ডিটেকশন টেস্টও করা হয়েছে। তদন্ত চলছে।এর পাশাপাশি সিবিআইয়ের তরফ থেকে এদিন এ দাবিও করা হয়, হাথরস কাণ্ডে যেমন মন্ত্রীর বিরুদ্ধেও তদন্ত করা হয়েছে, এখানেও তদন্তে কোনও রকম পক্ষপাত হচ্ছে না। তবে তথ্যপ্রমাণ ছাড়া কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব নয়।