অলোকেশ ভট্টাচার্য
এবারের লোকসভা নির্বাচনে বড় ইস্যু অগ্নিবীর। এই প্রসঙ্গে কংগ্রেস সহ অন্যান্য বিরোধী দলগুলি প্রশ্ন তোলার সঙ্গে এও জানিয়েছে, তারা ক্ষমতায় আসার সঙ্গে সঙ্গে অগ্নিপথ প্রকল্পটি শেষ করে দেবে। প্রসঙ্গত, এই স্কিমটি চালু হওয়ার পর থেকে বিশেষ করে রাজনৈতিক মহলে অনেক বিতর্ক তৈরি হয়েছে। সম্প্রতি হরিয়ানায় একটি সমাবশে ভাষণ দেওয়ার সময়, প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী বলেন যে সেনাবাহিনীতে অগ্নিবীর প্রকল্প চায় না এবং ভারতের জোট সরকার ক্ষমতায় আসার সঙ্গে সঙ্গই এটি আবর্জনার মধ্যে ছুঁড়ে ফেলে দেওয়া হবে। উল্টোদিকে অগ্নিবীর প্রকল্পটি নিয়ে বিরোধীরা আগ্রাসী হলেও কয়েক সপ্তাহ আগে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেছিলেন যে সরকার প্রয়োজনে অগ্নিপথ প্রকল্পে পরিবর্তন করতে প্রস্তুত। এবং এটি অগ্নিবীর হিসেবে যোগদানকারী যুবকদের ভবিষ্যতের উপর কোনও প্রভাব ফেলবে না।
এদিকে সূত্রে খবর, ভারতীয় সেনাবাহিনীতে এই স্কিম নিয়ে কিছু পরবর্তন হতে পারে। সেনাবাহিনী এখনও পর্যন্ত অগ্নিবীর নিয়োগ প্রক্রিয়ার উপর প্রভাব মূল্যায়ন করতে একটি অভ্যন্তরীণ সমীক্ষা চালাচ্ছে। এই সমীক্ষা রিপোর্টের ভিত্তিতে স্কিমের সম্ভাব্য পরিবর্তন সম্পর্কে সুপারিশ করবে আগামী সরকারকে। সঙ্গে এও জানা যাচ্ছে, ২০২২ সালের জুন মাসে চালু হওয়া অগ্নিপথ প্রকল্পের অধীনে অগ্নিবীরদের চার বছরের জন্য সেনাবাহিনীতে নিয়োগ করা হচ্ছে। চার বছর চাকরির পর সৈনিকের যোগ্যতা ও প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী মাত্র ২৫ শতাংশ সৈনিককে নিয়মিত করা হবে। তার জন্য সৈন্যদের আবেদন জানাতে হবে।
সূত্রের খবর, অগ্নিবীরদের নিয়োগ, প্রশিক্ষণ এবং অন্যান্য বিষয়ের কর্মকর্তাদেরও মতামত চাওয়া হয়েছে। কর্মকর্তারা সেক্ষেত্রে জানিয়েছেন, সব প্রশ্নের উত্তর মূল্যায়নের জন্য রাখা হবে। এতে প্রায় দশটি প্রশ্নের একটি তালিকা রয়েছে। সেখানে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে অগ্নিবীররা কেন সেনাবাহিনীতে যোগদান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, অগ্নিবীর হিসেবে যোগদানের আগে তারা কী অন্য চাকরি, প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা বা নিয়োগের চেষ্টা করেছিলেন কি না এমন বেশ কিছু প্রশ্নও। সঙ্গে ও জানতে চাওয়া হবে, তারা কী মনে করে তাদের স্থায়ীভাবে সেনাবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত কি না সে ব্যাপারেও। সমীক্ষায় যে প্রশ্নগুলি করা হবে, সেখানে এর পাশাপাশি অগ্নিবীরের সেনাবাহিনীতে যোগদানের প্রাথমিক কারণ এবং সেনাবাহিনীতে যোগদানের আগ্রহ সম্পর্কে তথ্য দিতে হবে। দেশের শহর ও গ্রামাঞ্চলের আবেদনকারীরা অনলাইনে প্রবেশিকা পরীক্ষায় কীভাবে সাড়া দিয়েছে সে বিষয়ে প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। এরপর বিভিন্ন ইউনিট এবং সাব-ইউনিট কমান্ডারদের কাছ থেকে প্রাপ্ত ইনপুটগুলিকেও বিবেচনা করা হবে। এই ইনপুটগুলির উপর ভিত্তি করে সম্ভবত সেনাবাহিনী অগ্নিবীরদের মোতায়েন, দীর্ঘমেয়াদে অগ্নিবীরদের মোতায়েনের পরিকল্পনায় একটি সম্ভাব্য পরিবর্তনের পরামর্শ দেবে।