চাঁদের একবারে কাছে চলে এসেছে চন্দ্রযান-৩, এমনটাই জানাল ইসরো। ইসরোর তরফ থেকে এও জানানো হয়েছে, আরও একটা কক্ষপথ পাক খাওয়া শেষ করল চন্দ্রযান-৩। তার ফলে কমল আরও একটি কক্ষপথের ধাপ। চাঁদ থেকে আর মাত্র ১৭৭ কিলোমিটারের দূরত্ব। তারপরই চাঁদে প্রবেশ করবে ইসরোর চন্দ্রযান-৩। ইসরোর তরফে টুইটে জানানো হয়েছে, আরও একটি কক্ষপথ পরিবর্তনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে সফল ভাবে। উপর থেকে নীচের দিকে নামছে চন্দ্রযান-৩। চাঁদের কক্ষপথ এক একটা করে পার হচ্ছে। এদিকে এই প্রক্রিয়ায় গতিবেগ কমাচ্ছে ইসরো।
বর্তমানে চন্দ্রযান-৩ চাঁদের কক্ষপথের ১৫০ কিলোমিটার X ১৭৭ কিলোমিটার অবস্থানে রয়েছে।চাঁদের মাধ্যাকর্ষণের টানে ওই কক্ষপথ বরাবর চাঁদের চারপাশে পাক খেয়ে চলেছে। পরবর্তী কক্ষপথ পরিবর্তনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে ১৬ অগাস্ট, সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ। ইসরো এও জানাচ্ছে, আর মাত্র দু’টো কক্ষপথ পার হওয়া বাকি।
সর্বশেষ কক্ষপথে পৌঁছনোর অর্থ চাঁদের থেকে দূরত্ব কমে দাঁড়াবে ১০০ কিলোমিটার। সেখান থেকেই গতি কমিয়ে চাঁদের পৃষ্ঠে অবতরণের প্রক্রিয়া শুরু হবে। ৩০ কিলোমিটার উচ্চতায় মহাকাশযানটি পৌঁছলে সফট ল্যান্ডিংয়ের প্রক্রিয়া শুরু করবেন বিজ্ঞানীরা। তারপর ২০ মিনিট ধরে সময় ও গতিবেগের অঙ্ক সঠিক ভাবে মিলিয়ে দেখে ধীরে ধীরে হালকা পালকের মতো চাঁদের দক্ষিণ মেরুর কাছে ৭০ ডিগ্রি দ্রাঘিমায় নামবে চন্দ্রযানের ল্যান্ডার ‘বিক্রম’।
এখানে বলে রাখা শ্রেয়, চার বছর আগেকার স্মৃতি ভুলছে না ইসরো। এখনও দগদগে। দ্বিতীয় চন্দ্রমিশনের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে চন্দ্রযান-৩-এ আনা হয়েছে একাধিক পরিবর্তন। চন্দ্রযান-২-এ যা যা ভুলভ্রান্তি ছিল তা খতিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানো হয়েছে। ভুল শুধরে নির্মিত হয়েছে চন্দ্রযান-৩। ২০১৯ সালে চাঁদের বুকে হুমড়ি খেয়ে পড়ে ইসরোর চন্দ্রযান-২। অরবিটার পৃথিবীর কক্ষপথে পৌঁছলেও সফট ল্যান্ডিংয়ে ব্যর্থ হয় ল্যান্ডার ‘বিক্রম’। এবার দুর্ঘটনা এড়াতে এবার ল্যান্ডিংয়ের জায়গার পরিধি আরও বৃদ্ধি করা হয়েছে। অবতরণের সময় যদি ‘বিক্রম’-এর কল কব্জায় কোনও গোলমালও হয়, যদি ইঞ্জিন বা সেন্সর বিকল হয়ে যায়, সেক্ষেত্রেও চাঁদের বুকে নামানো যাবে সেটিকে। বিকল্প উপায় ভেবে রেখেছে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা। নতুন ব্লু-প্রিন্টে যা যা পরিবর্তন আনা হয়ে তা সঠিক ভাবে কাজ করলে ২৩ অগাস্ট চাঁদের বুকে অবতরণ করবে চন্দ্রযান-৩। চাঁদের অন্ধকার পিঠের রহস্য উৎঘাটনের লক্ষ্যে আরও এক ধাপ উঠে যাবে ভারত। রোভার ‘প্রজ্ঞান’ তার কাজ শুরু করে দেবে। এবার আগের বারের সব ভুল শুধরে সফল হওয়ার অপেক্ষায় চন্দ্রযান -৩ কে ল্যান্ডিং করানোর অপেক্ষায় ইসরো।