গড়িয়ার এক বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র সোশ্যাল মিডিয়ায় ফাঁস করার অভিযোগে দুই জনকে গ্রেফতার করল নরেন্দ্রপুর থানার পুলিশ। ধৃতরা দুই জনেই বিহারের বাসিন্দা। এরপরই উৎকর্ষ রাজ ও প্রতীক রঞ্জন নামক দুই দুই ছাত্রকে বারুইপুর মহকুমা আদালতে পেশ করা হয়।
জানা গিয়েছে, গড়িয়ার এক বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র সোশ্যাল মিডিয়ায় ফাঁস হয়ে যাওয়ার অভিযোগ ওঠে। এই ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে কলেজ কর্তৃপক্ষ। তদন্তে উঠে আসে দুই পড়ুয়ার নাম। তাঁদের গ্রেফতার করা হয়। ধৃতদের এদিন বারুইপুর মহকুমা আদালতে পেশ করা হয়।
এই প্রসঙ্গে তদন্তকারী আধিকারিকেরা জানিয়েছেন, ওই দুই ছাত্রকে জিজ্ঞাসাবাদ করে বিস্তারিত তথ্য পাওয়ার চেষ্টা করা হবে। এই প্রশ্নফাঁসের নেপথ্যে আরও কেউ রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হবে। উল্লেখ্য, স্নাতকোত্তর স্তরের ডাক্তারির প্রবেশিকা পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। নিট-এ গ্রেস মার্ক থেকে শুরু করে প্রশ্ন ফাঁস নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে। এরই মধ্যে ইউজিসি নেট হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পরীক্ষা বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ইউজিসি-নেট কেলেঙ্কারির তদন্তে নেমেছে সিবিআই। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ৪৮ ঘণ্টা আগেই ফাঁস হয়েছিল।
এদিকে গত মঙ্গলবার পরীক্ষা হয়েছিল। কিন্তু, তার আগে রবিবারই প্রশ্ন ফাঁস হয়েছিল বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। অভিযোগ উঠেছে, নেট পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ডার্ক ওয়েবে ফাঁস হয়ে যায়। এক একটি বিষয়ে প্রশ্নের দাম উঠেছিল ছয় লাখ পর্যন্ত, এমনই অভিযোগ উঠেছে। শুধু তাই নয়, কিছু হোয়াটস অ্যাপ ‘ক্লোজড গ্রুপ’-এ কেউ কেউ পাঁচ হাজারেও প্রশ্ন কিনেছে বলে অভিযোগ পরীক্ষার্থীদের একাংশের।
সেক্ষেত্রে খুব স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন ওঠে, মঙ্গলবার কীসের উপর ভিত্তি করে নেওয়া হল পরীক্ষা তা নিয়েই। কারণ, ইউজিসি চেয়ারম্যান এম জগদীশ কুমার মঙ্গলবার পরীক্ষার পর বলেছিলেন, সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা মিটেছে। অনেকেই আশঙ্কা করছেন সিএসআইআর ইউজিসি-নেটের ক্ষেত্রে অনিয়মের আঁচ করা হচ্ছিল। আর সেই কারণেই স্থগিত করা হয়েছে পরীক্ষা। ২৫ জুন থেকে ২৭ জুন পর্যন্ত এই পরীক্ষা চলার কথা ছিল। স্বাভাবিকভাবেই বহু পরীক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। নেট বাতিল হওয়ার পরেই দফায় দফায় বিক্ষোভ দেখানো হয়েছে দেশের বিভিন্ন জায়গায়।
এদিকে, নিট এবং নেট বিতর্ক নিয়ে তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ বলেন, ‘শিক্ষা কেলেঙ্কারি চলছে বিজেপি জমানাতে। ভিতরে বহু উঁচু আমলা জড়িত। দেশের বৃহত্তম শিক্ষা দুর্নীতির তদন্ত চাই। আমার সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতির তত্ত্বাবধানে তদন্তের দাবি জানাচ্ছি।’