প্রাক্তনীদের চিহ্নিত করে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বার করে দিন’, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়কে নির্দেশ প্রধান বিচারপতির

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে যাঁরা প্রাক্তনী, তাঁরা হস্টেলে যাতে না থাকেন তার জন্য ব্যবস্থা নিতে হবে কর্তৃপক্ষকে। মঙ্গলবার এমনই নির্দেশ দিল প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম ও বিচারপতি হিরন্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ। এদিন প্রধান বিচারপতি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে স্পষ্ট নির্দেশ দেন, ‘প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যেক ঘরে গিয়ে দেখতে হবে, কারা এমন আছেন। হস্টেলের প্রত্যেক রুমে গিয়ে দেখতে হবে, প্রাক্তনীরা রয়েছেন কিনা। যদি থাকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বের করে দিন। ঘর ছেড়ে দিলে মেইনটেন্সের কাজ শুরু করুন।’ পাশাপাশি প্রধান বিচারপতির আরও পর্যবেক্ষণ, বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনও ইউনিয়ন না থাকলে জনসমক্ষে বক্তব্য বা প্রেস রিলিজ দেওয়া বন্ধ করতে হবে।

এদিকে যাদবপুরের ছাত্রের রহস্য মৃত্যুর পর একাধিক মামলা কলকাতা হাইকোর্টে বিচারাধীন। একটি ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি ছাত্র সংসদকেও যুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। আদালতের বক্তব্য ছিল, যাদবপুরের সমস্যা নিয়ে বিচার করতে হলে ছাত্রদের বক্তব্য শোনাও জরুরি। সেখানেই উঠে আসে যাদবপুরে সায়েন্সের ছাত্রদের ইউনিয়ন নেই। এদিনের শুনানিতে ছাত্রদের আইনজীবী বলেন, ‘ছাত্রদের ইউনিয়ন নেই। আর্টসের ইউনিয়ন আছে। ২০২০ নির্বাচনের পর আর কোনও নির্বাচন হয়নি। আর্টসের ক্ষেত্রে যাঁরা নির্বাচিত হয়েছিলেন, তাঁদের কয়েকজন এই মামলায় অংশ নিতে চান।’ তবে এক্ষেত্রে তিনি এটাও স্পষ্ট করেন,  ‘ছাত্রদের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ নেই। যাবতীয় কিছু রাজনৈতিক কারণে হচ্ছে।’ তখন প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘যদি ইউনিয়ন না থাকে তাহলে ব্যক্তিগতভাবে কেউ আসতে পারেন। সায়ন্সের কোন ইউনিয়ন নেই। তাহলে বক্তব্য রাখা বন্ধ করতে হবে।’ এই প্রসঙ্গে বিচারপতি এও প্রশ্ন তোলেন, ‘ছাত্ররা যাঁরা পাশ করে গিয়েছেন তাঁরা কীভাবে হস্টেলে থাকছেন?’

এদিকে ইতিমধ্যেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলের কোনও কোনও ঘরে আলো নেই বলেও অভিযোগ করা হয় ছাত্রদের তরফে। তার প্রেক্ষিতে কলেজ, হস্টেলের মেরামতির কথা বলেন প্রধান বিচারপতি। এদিকে রাজ্যের তরফ থেকে আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘বলা হচ্ছে ইউনিয়ন নেই। আবার পাবলিক স্টেটমেন্ট দেওয়া হচ্ছে ইউনিয়নের পক্ষ থেকে। এটা কীভাবে সম্ভব?’

এরপরই বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে সৌম্য মজুমদার বলেন, ‘২০১৬ থেকে ইউজিসি গ্র্যান্ট আপাতত বন্ধ। রাজ্য শুধু অধ্যাপকদের বেতন দেয়। ২৭৩ কোটি টাকা রাজ্য চেয়েছে।’ এরই প্রেক্ষিতে আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘আচার্যকে বলুন কিছু টাকার ব্যবস্থা করতে। উনি বিভিন্ন অধ্যাপকদের চা আর স্যানক্স খাওয়াচ্ছেন। ওঁকে বলুন টাকার ব্যবস্থা করতে।’ এরপরই এদিন কর্তৃপক্ষকে বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যান্ট নিয়ে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেয় আদালত। আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর এই মামলার পরবর্তী শুনানি।

উল্লেখ্য, সোমবারই বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছে ইউজিসির প্রতিনিধি দল। সেক্ষেত্রে এদিন প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘ইউজিসি দেখবে রেগুলেশন প্রয়োগ হচ্ছে কিনা।’

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

twelve − one =