বুদ্ধদেবের মৃত্যুতে মুখ্যমন্ত্রীর শোকজ্ঞাপন, ছুটি ঘোষণা রাজ্যের

রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর প্রয়াণে শোকস্তবদ্ধ তিনি। শোকপ্রকাশ করলেন। ঘোষণা করলেন পূর্ণ দিবস ছুটির।মমতা লিখেছেন, ‘পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী শ্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের আকস্মিক প্রয়াণে আমি মর্মাহত। বিগত কয়েক দশক ধরেই আমি তাঁকে চিনতাম এবং গত কয়েক বছরে তিনি যখন অসুস্থ ছিলেন তখন আমি কয়েকবার তাঁকে বাড়িতে দেখতে গিয়েছি। এই শোকের সময়ে মীরাদি এবং সুচেতনের প্রতি আমার আন্তরিক সমবেদনা জানাই।’ একই সঙ্গে তিনি সিপিআই(এম)-এর সকল কর্মীদের শোকবার্তা দিয়েছেন।

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার নিজের বাসভবন অর্থাৎ পাম অ্যাভিনিউতে সকাল ৮টা ২০ মিনিট নাগাদ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। রেখে গেলে স্ত্রী ও সন্তানকে। দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন তিনি। শয্যাশায়ী ছিলেন। বুধবার থেকে শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে, বৃহস্পতিবার সকালে আসে মৃত্যুসংবাদ।

যখনই বুদ্ধবাবু অসুস্থ হয়েছেন তখনই তাঁকে হাসপাতালে দেখতে ছুটে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য অসুস্থ হওয়ার খবর পেলেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছুটে গিয়েছেন তাঁকে দেখতে। শেষবার (৯ অগস্ট, ২০২৩) হাসপাতাল থেকে যখন ফিরলেন তখনও সেখানে উপস্থিত থাকতে দেখা গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রীকে। তাঁর শারীরিক অবস্থার খোঁজ নিয়েছেন বারেবারে। চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলা থেকে বুদ্ধবাবুর স্ত্রী মীরা ভট্টাচার্যের খোঁজ নেওয়া সবটাই করেছেন মমতা।কিন্তু বৃহস্পতিবার এভাবে দুঃসংবাদ আসবে তা হয়ত ভাবতেও পারেননি তিনি। মানতেই পারছেন না বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য আর নেই। যখন সাংবাদিকদের সামনে বুদ্ধবাবুর স্মৃতিচারণা করছিলেন মুখ্যমন্ত্রী, তখন তাঁর চোখে-মুখে ধরা পড়ল সেই ব্যথা। মমতা বলেন, ‘খবরটা যখন শুনলাম তখনই কেমন টেন্স্ড হয়ে গিয়েছিলাম।’

রাজনৈতিক মতাদর্শ আলাদা দু’জনের। তবে তার প্রভাব যে ব্যক্তিগত সম্পর্কের মধ্যে পড়েনি তা বারেবারে বুঝিয়ে দিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। তিনি প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সম্পর্কে বলতে গিয়ে বলেই ফেললেন, ‘এই খবরটা যখন আমি শুনলাম, এতটাই টেনস্ড হয়ে গিয়েছিলাম, কীরকম একটা লাগছিল, আমার হাতটা ঘষে যায়। পুরো গল গল করে রক্ত বেরিয়েছে।’ একইসঙ্গে মমতা এও বলেন, ‘ব্যক্তিগত প্রচুর কথা রয়েছে। তবে আজ বলার দিন নয়। আমি যখন আসতাম, যখন ভালো ছিলেন, অনেক কথা বলতেন, সেগুলো ব্যক্তিগত লেভেলের, সেগুলো বাইরে আনতে চাই না।’

রাজনৈতিক আকচা-আকচি ছিল বরাবরই। ক্ষমতায় থাকাকালীন বুদ্ধদেবকে বিভিন্ন রাজনৈতিক বিষয়ে আক্রমণ করেছেন তৎকালীন বিরোধী দলে থাকা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে পালা বদলের পর দুজনের সৌজন্যতা ছিল। যতবার বুদ্ধবাবু হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, দেখতে গিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। খোঁজ নিয়েছেন স্ত্রী মীরা ভট্টাচার্য, সন্তান সুচেতন ভট্টাচার্যের। বৃহস্পতিবারও তাঁদের পাশে থাকার বার্তা দেন মমতা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

2 × 3 =