লন্ডনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মিথ্য়াচার করেছেন মুখ্যমন্ত্রীঃ এসএফআই নেতৃবৃন্দ

লন্ডনের কেলগ কলেজে রাজ্যের নারী সুরক্ষা সহ একাধিক বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে দাবি করেছেন তা নস্যাৎ করলেন সৃজন ভট্টাচার্য, দেবাঞ্জন দে’রা। শনিবার এসএফআইয়ের রাজ্য সদর দপ্তর দীনেশ মজুমদার ভবনে সাংবাদিক সম্মেলনে এসএফআই নেতৃত্ব বলে, নারী সুরক্ষা কিংবা স্কুল ড্রপ আউট নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মিথ্যা ভাষণ দিয়েছেন। মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিকে ড্রপ আউট বেড়েছে। বিনা পারিশ্রমিকে মহিলাদের কাজ করানো হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গে নাবালিকা বিয়েতে প্রথম। মিড ডে মিল দুর্নীতি বাড়ছে। মহিলাদের ব্যবহার করা হচ্ছে কম মজুরিতে । বাংলার আর্থিক অবস্থা উন্নতি হয়নি অবনতি হয়েছে। ২০২৩ সালে ৪ লক্ষ্য মাধ্যমিক পরীক্ষাটি কমেছে ৮ হাজার সরকারি  স্কুল বন্ধ হয়েছে । নাবালিকা বিবাহ বেড়েছে । ড্রপ আউট এর সংখ্যা লাফিয়ে বাড়ছে। এই বিষয়ে শুধু বিদেশে গিয়ে মিথ্যা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী।

এসএফআইয়ের পক্ষ থেকে এদিন এও জানানো হয় যে, আগামী দুই সপ্তাহ রাজ্যের শিক্ষা ক্ষেত্রের বেহাল দশা, কলেজে ছাত্র সংসদ নির্বাচন এবং আর জি করের বিচারের দাবিত রাজ্য জুড়ে বিভিন্ন কর্মসূচি নেওয়া হবে। এর পাশাপাশি ২ এপ্রিল ছাত্র নেতা সুদীপ্ত গুপ্ত’র প্রয়াণ দিবস উপলক্ষে রাজ্য জুড়ে মিছিল করবে এসএফআই সহ চারটি বাম ছাত্র সংগঠন। এরই প্রেক্ষিতে এসএফআই রাজ্য সম্পাদক দেবাঞ্জন দে জানান, শুক্রবার ডিওয়াইএফআইয়ের ডাকে উত্তরকন্যা অভিযানে পুলিশি হামলার বিরুদ্ধেও প্রতিবাদ জানাবে এসএফআই। পাশাপাশি তিনি এও বলেন, আরএসএসের প্রতিনিধি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিদেশে গিয়ে একের পর এক মিথ্যে ভাষণ দিয়েছেন কোন তথ্য ছাড়াই। ছাত্র ড্রপ আউট বাড়ছে পশ্চিম বাংলায় শিক্ষাকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে এই রাজ্যে সরকার সময়। মুখ্যমন্ত্রী যেখানে যাবেন সেখানেই ওঁনাকে প্রশ্নের সামনে পড়তে হবে। তাই মিথ্যে কথা বলা যাবেনা।’

এদিন ছাত্রনেতা সৃজন ভট্টাচার্য বলেন, ‘রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে ল্যান্ড মাইন বিস্ফোরণ ঘটিয়ে উড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল। এখন সৌজন্যের কথা বলা হচ্ছে।’ সৃজনের কথায়, ‘লন্ডনে গিয়ে এসএফআইয়ের প্রশ্নের জবাব না দিয়ে নিজের মার খাওয়ার ছবি দেখাচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সৌজন্যের কথা বলছেন। আমাদের ছোটবেলায় জ্যোতি বসুর মৃত্যু কামনা করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে ল্যান্ড মাইনে উড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল। তৃণমূল আমলে ব্যক্তিগত কুৎসা ছাড়াও অনুব্রত মণ্ডল, শান্তনু সেনের মতো নেতারা একাধিকবার, বিমান বসুকে একাধিক আক্রমণ করেছেন। একাধিক মিথ্যে কুৎসা কথা বলা হয়েছে। এখানে ছাত্ররা শুধু মাত্র কয়েকটা প্রশ্ন করেছে। তাতেই এত অসহিষ্ণুতা!’

এরপরই আরজি কর প্রসঙ্গে সৃজন বলেন, ‘আরজি কর কাণ্ডে দোষীদের শাস্তি চেয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। এদিকে তাঁর লোকেরাই প্রমাণ লোপাট করেছে। ঘটনার দায় দায়িত্ব এড়াতে পারে না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই প্রশ্নের জবাব তাঁকে দিতেই হবে। তা না করে ব্যান্ডেজের ছবি দেখাচ্ছেন। উনি মার খেয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী হিসাবে। কিন্তু, লন্ডনে গেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে। আমাদের মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে। সেখানে বাংলার বাঙালির মাথা হেঁট করে এলেন।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

17 + 12 =