ট্যাব কেলেঙ্কারিতে এবার রাজ্য গোয়েন্দা পুলিশের জালে মাস্টারমাইন্ড। উত্তর দিনাজপুরের মাঝিয়ালি স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মহম্মদ মুবতাজুল ইসলাম ওরফে জুয়েল এই গোটা জালিয়াতির মাস্টারমাইন্ড বলে সিআইডির তরফ থেকে দাবি করা হয়েছে। যখন পর পর ট্যাব কেলেঙ্কারির খবর সামনে আসছিল, তখন থেকেই দীর্ঘদিন ফেরার ছিলেন এই মহম্মদ মুবতাজুল ইসলাম ওরফে জুয়েল। সূত্রে খবর, তিনি গা ঢাকা দিয়েছিলেন নেপাল সীমান্তে। এদিকে স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, ভারপ্রাপ্ত প্রধান জুয়েল অত্যন্ত মিতভাষী, আচরণও অত্যন্ত ভদ্র। তাঁর আচরণে কখনই স্কুলের কারোর কোনও সন্দেহ জাগেনি মনে।
এদিকে ট্যাব কেলেঙ্কারিতে একাধিক যুবককে গ্রেফতার করেন তদন্তকারীরা। ধৃতদের জেরা করে তখন মূল মাথাদের খোঁজে বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালাচ্ছিলেন আধিকারিকরা। এই সময়েই গা ঢাকা দেন মুবতাজুল। এরপর রাজ্য গোয়ন্দা দফতর অর্থাৎ সিআইডি গোপন সূত্রে খবর পায়, দীর্ঘদিন ফেরার থাকার পর মুফতাজুল ফেরত এসেছেন। উত্তর দিনাজপুরের কোটগাছি এলাকায় গা ঢাকা দিয়ে রয়েছেন তিনি। এরপরই তাঁকে ধরতে চালানো হয় অভিযান।
এই প্রসঙ্গে রাজ্য গোয়েন্দা দফতরের তরফ থেকে এও জানানো হয়েছে, ট্যাব কেলেঙ্কারির তদন্তে নেমে প্রথম থেকেই তদন্তকারীরা মনে করছিলেন, এর মধ্যে কোথাও সরষের মধ্যেই ভূত রয়েছে। কারণ স্কুলের ক্রেডেনশিয়াল বাইরে যাওয়ার কথাই নয়। আর সেই অনুমানই সত্যি প্রমাণিত হল। নিজের স্কুলের সাইটের পাসওয়ার্ড ও ক্রেডেনশিয়াল ব্যবহার করে প্রথমে এই জালিয়াতি শুরু করেন। পরে তিনি একটি নিজের টিমও তৈরি করেন। তাতে একাধিক শিক্ষক শিক্ষিকা, শিক্ষাকর্মী, এমনকি চুক্তিভিত্তিকভাবে নিযুক্ত এমন কয়েকজন, যাঁদের এই ক্রেডেনশিয়াল ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে, তাঁদেরকেও এই ঘটনায় নিযুক্ত করেন জুয়েল। এই ভাবেই চলছিল গোটা ট্যাব জালিয়াতির চক্র।
এ প্রসঙ্গে প্রধান শিক্ষক সংগঠনের সভাপতি চন্দন মাইতি জানান, অভিযুক্তকে আদালতে পেশ করে শাস্তি দেওয়া হোক। কিন্তু যে সকল প্রধান শিক্ষক এর সঙ্গে জড়িত নন, তাঁরা যেন শাস্তি না পান। কারণ সারা রাজ্যে ট্যাব জালিয়াতি হয়েছে। উনি ওনার স্কুলে জালিয়াতিতে যুক্ত থাকতে পারেন, সারা রাজ্যে কীভাবে এই ঘটনায় জড়াল তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। আর সেই কারণেই এর পিছনে চোপড়ার গ্যাং, বিহারের জামতাড়া গ্যাংও হতে পারে। কেবল একা ভারপ্রাপ্ত শিক্ষকের পক্ষে সম্ভব নয়।