‘অপরাজিতা উইমেন অ্যান্ড চাইল্ড’ বিলের খসড়া বণ্টন বিধায়কদের মধ্যে

‘অপরাজিতা উইমেন অ্যান্ড চাইল্ড’ বিলের খসড়া বণ্টন করা হল বিধায়কদের মধ্যে। মঙ্গলবার বিল নিয়ে বিধানসভায় হবে আলোচনা। এদিকে বিধানসভা সূত্রে খবর, অধিবেশন শুরুর আগে কার্য উপদেষ্টা কমিটির বৈঠক হবে।

গত বুধবার তৃণণূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসের মঞ্চ থেকে ধর্ষণ বিরোধী বিল আনার পক্ষে সওয়াল করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রয়োজনে অভিষেক নিজের বিশেষ ক্ষমতা প্রয়োগের কথাও বলতে শোনা যায়। ধর্ষণ বিরোধী আইন প্রনয়ণের ক্ষেত্রে ‘প্রাইভেট মেম্বার বিল’ নিয়ে আসার কথা বলতে গিয়ে অভিষেক বলেন, ‘কেন্দ্রের সরকার যদি এই বিল না আনে, তাহলে প্রাইভেট মেম্বার বিলের মাধ্যমে এই আইন নিয়ে আসতে বাধ্য করব দিল্লির সাংসদদের। প্রত্যেক সাংসদের অধিকার আছে, প্রাইভেট মেম্বার বিল মুভ করিয়ে সেটা বিল হিসাবে আইনসভায় পাশ করিয়ে আইন তৈরি করার। বাংলার মানুষ আমাকে এই অধিকার দিয়েছে।’

সেই বিল আনতেই এবার বিধানসভায় আলোচনা। এই বিলের নাম দেওয়া হয়েছে ‘অপরাজিতা উইম্যান অ্যান্ড চাইল্ড ওয়েস্ট বেঙ্গল ক্রিমিন্যাল লস সংশোধনী বিল ২০২৪’। এই বিল মঙ্গলবার আসতে চলেছে। তার আগে সোমবার বিধায়কদের খসড়া দেওয়া হয়। ধর্ষণ বিরোধী আইনকে আরও কঠোর করতে বিশেষ অধিবেশন ডাকা হয়েছে। আজ বিশেষ কমিটির বৈঠকে স্থির হবে, মঙ্গলবার এই বিল নিয়ে কতক্ষণ আলোচনা চলবে। প্রাথমিকভাবে ঠিক হয়েছে ২ ঘণ্টা ধরে আলোচনা চলবে। তাতে যেমন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বক্তৃতা রাখবেন, নিজের মত ব্যক্ত করবেন বিরোধী দলনেতাও। তবে সোমবারের শোকপ্রস্তাবের মূল বিষয় প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের প্রয়াণ।

এদিকে এই বিলটি কি আদতে রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে অনুমোদন পাবে, সে প্রশ্ন থাকছেই। এর মধ্যেও বেশ কয়েকটি বিষয়ে প্রশ্ন থাকছে। রাজ্যের বিরোধীদের তরফ থেকে বলা হবে, ধর্ষণের অভিযোগের ক্ষেত্রে কঠোর আইন প্রয়োগ করা হয় না। তৃণমূল তরফে গোটা দেশের পরিস্থিতি উত্থাপিত করা হতে পারে। সেক্ষেত্রে ভারতীয় ন্যায় সংহিতায়-এ ফাঁসির সাজা রাখা হয়নি। প্রত্যেকটি বিষয়ই আলোচনায় উত্থাপিত হবে বলে মনে করছেন বিশেষ্ণরা।

সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অশোক গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘ এখন যা আইন আছে, তাতে ধর্ষণের অপরাধের ফাঁসি হয় না। কিন্তু ধর্ষণ করতে গিয়ে যদি মৃত্যু হয়, তাহলে ফাঁসি হতে পারে। রাজ্য সরকার আইন পাল্টাতে পারে। তবে আগের ঘটনায় ধর্ষকদের সাজা সংশোধিত আইন অনুযায়ী করা যাবে না।’ অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি দেবাশিস করগুপ্ত বলেন, ‘ফৌজদারি আইন ভারতীয় সংবিধানের ৭তম সিডিউলের কনকারেন্ট লিস্ট অর্থাৎ সপ্তম তফসিলের যৌথ তালিকাভুক্ত। দুটি আইন ছিল। কেন্দ্রীয় সরকার নতুন করে দুটি আইন প্রণয়ন করেছে। ফলে কোনও অঙ্গরাজ্যের বিধানসভার ক্ষেত্রে কোনও আইন করতে গেলে ক্ষমতা সীমিত। লক্ষ্মণরেখা মানতে হবে। কেন্দ্রীয় আইনের ধারার বিরোধী কোনও আইন প্রনয়ণ করা যাবে না। দ্বিতীয়ত রাষ্ট্রপতির পূর্ব অনুমোদন সাপেক্ষ।’

তবে এই নিয়ে শাসকদলের অবস্থান সম্পর্কে নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রী শশী পাঁজা বলেন, ‘যদি কেউ বিলের বিরোধিতা করে, যারা যারা বিরোধিতা করছে, তারা রাজনীতির উর্ধ্বে উঠতে পারেনি।’ বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘১৩ বছরে ওরা কী করেছে? ওরা কোন মুখে বলছে দু-তিন সপ্তাহ? চার দিনে ওরা কী করেছে? সমস্ত তথ্য প্রমাণ নষ্ট করেছে। যারা ধর্ষকদের সঙ্গে রয়েছে, তারা কোন মুখে বড় কথা বলে? নাটক করছে, ফাঁসির আইন করবে? কে অধিকার দিয়েছে ওদের?’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

two × one =