চলছে সেপ্টম্বর। আর এই সেপ্টম্বরের শেষেই জিরো ভ্যালিতে রয়েছে জিরো মিউজিক ফেস্টিভ্যাল। সঙ্গে পাহাড় তো রয়েছেই। তবে যাঁরা পাহাড় ভালোবাসেন তাঁদের এই ‘জিরো ভ্য়ালি’ ভালো লাগতে বাধ্য। কারণ, প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের দিক থেকে একটুও পিছিয়ে নেই উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্য অরুণাচল। ঘন পাইনের জঙ্গল, বাঁশ বাগানের ঘেরা পাহাড়ি রাস্তা, ধাপে ধাপে ধানের খেত আর আদিবাসীদের জনজীবনের মধ্যেই লুকিয় আছে এর সৌন্দর্য্য।
ইটানগর শহর থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই ‘জিরো ভ্যালি’। দেশ-বিদেশের পর্যটকদের কাছে এই অঞ্চলটি জনপ্রিয় ‘জিরো মিউজিক ফেস্টিভ্যাল’-এর জন্য। পাহাড়ের উপর সবুজের মাঝে আয়োজিত হয় এই সঙ্গীতের অনুষ্ঠান। স্থানীয় ব্যান্ডই বেশি অংশগ্রহণ করে এই অনুষ্ঠানে। থাকেন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গীতশিল্পীরাও। টানা ৪ দিন ধরে চলে গান, হইহুলোড়। প্রতি বছর সেপ্টেম্বরের শেষে এই জিরো মিউজিক ফেস্টিভ্যাল অনুষ্ঠিত হয়।
জিরো ভ্যালির এই পুরো উপত্যকা জুড়ে রয়েছে অজস্র ছোট বড় পাহাড়। সবুজ গালিচার মতো সাজানো গোটা উপত্যকা। রয়েছে পাইনের জঙ্গলও। রডোডেনড্রন, পাইন, বাঁশ, ফার্ন, ফারের সমাহার। এই উপত্যকায় রয়েছে ট্যালি ভ্যালি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য। প্রায় ৩৩৭ স্কোয়ার কিলোমিটার জায়গা জুড়ে বিস্তৃত। এখানে ৩০০টি প্রজাতির পাখি এবং ১৭০ প্রজাতির প্রজাপতির বাস।এই উপত্যকার বাসিন্দারা হলেন আদিবাসী আপাতানি সম্প্রদায়ের মানুষ। মূল জীবিকা চাষবাস। এঁরা আজও ঐতিহ্য মেনে মুখে উল্কি আঁকেন। এখানে গ্রামের পর গ্রাম পাহাড়ের ধাপে-ধাপে চাষের জমি নজরে আসবে। এছাড়াও এখানে মাছ চাষও করা হয়। জিরো উপত্যকার গ্রামগুলো ঘুরে দেখার পাশাপাশি মেঘনা কেভ মন্দির, কিলে পাখো, জিরো পুতো এই সব জায়গাতেও যেতে পারেন।
জিরো মিউজিক ফেস্টিভ্যাল ঘিরে বহু মানুষের ভিড় জমায় সেপ্টেম্বরেই। তবে, এপ্রিল থেকে জুন মাস হল জিরো ঘুরে দেখার সেরা সময়। বিমানপথে জিরো ভ্যালি পৌঁছাতে গেলে আপনাকে নামতে হবে তেজপুর বিমানবন্দরে। তেজপুর থেকে জিরো প্রায় ২৬৬ কিলোমিটারের রাস্তা। আর জিরোর সবচেয়ে কাছের রেলস্টেশন হল নাহারালাগুন। আবার সড়কপথে গুয়াহাটি থেকেও জিরো পৌঁছাতে পারেন। প্রায় ৪৭০ কিলোমিটারের পথ। জাতীয় সড়ক পথ ২৭ এবং ১৫ ধরে গেলে সময় লাগবে প্রায় ৭ ঘণ্টা।