আরজি করে মহিলা চিকিৎসক তথা ডাক্তারির ছাত্রীর মৃত্যু কীভাবে ঘটে গেল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। দেহ অর্ধনগ্ন অবস্থায় পাওয়া গিয়েছে বলে অভিযোগ। যেভাবে দেহ উদ্ধার হয়েছে, তাতে মৃত্যুটা কোনওভাবেই আত্মহত্যা বলতে রাজি নন সহপাঠীরা। আত্মহত্যার তত্ত্ব মানতে নারাজ মৃতার পরিবারের সদস্যরাও। শুক্রবার সকালে মহিলা চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার হয় আর জি করের চেস্ট মেডিসিনের সেমিনার রুমে।
মৃতার বাবা জানিয়েছেন, হস্টেল থেকে ফোন করে সকালে প্রথমে জানানো হয়, মেয়ের শরীর খারাপ। তারপর বলা হয় মেয়ে সুইসাইড করেছে। তিনি আরও জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার রাত ১১ টা ১৫ মিনিটে মেয়ের সঙ্গে শেষবার কথা হয়েছিল। খাওয়া হয়েছে কি না, সে বিষয়ে কথা হয়েছিল। তখন সব স্বাভাবিক ছিল বলেই জানিয়েছেন মৃতার বাবা ও মা।
এদিকে এই চিকিৎসককে ছোট থেকে মেধাবী ছাত্রী হিসেবেই চিনতেন প্রতিবেশীরা। উত্তর ২৪ পরগনার বাসিন্দা ওই চিকিৎসকের প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, কয়েকদিন আগেই ওই চিকিৎসক গাড়ি কেনেন। পড়াশোনাই ছিল তাঁর ধ্যান-জ্ঞান। হঠাৎ আত্মহত্যা করতে যাবে কেন? প্রশ্ন তুলছেন প্রতিবেশীরা।
আরজি করের চেষ্ট মেডিসিন বিভাগের প্রাক্তন ছাত্র শুভেন্দু মল্লিক জানিয়েছেন, ওই বিভাগের সঙ্গে যুক্ত থাকার সূত্রে চিনতেন ওই মহিলা চিকিৎসককে। তিনি জানতে পেরেছেন, বৃহস্পতিবার রাতে আরও দুজন পিজিটি (স্নাতকোত্তর পড়ুয়া)-র সঙ্গে ডিউটি করছিলেন মহিলা জুনিয়র চিকিৎসক। রাত ২ টোয় ডিনার সারেন তাঁরা। আর ৩ টে নাগাদ বিশ্রাম নিতে যান। একটানা ৩৬ ঘণ্টা ডিউটি চলে, তাই সেমিনার রুমেই বিশ্রাম নেন চিকিৎসকেরা। ওই মহিলা চিকিৎসক একাই ঢুকেছিলেন সেমিনার রুমে।
রাতে বাকি দুজনের সঙ্গে আর কথা হয়নি তাঁর। সকালে রাউন্ডের জন্য ডাকতে গেলে তাঁকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। অর্ধনগ্ন দেহ উদ্ধার হয় বলে জানিয়েছেন ওই প্রাক্তন ছাত্র। সহপাঠীরা বলছেন, ওই চিকিৎসকের মানসিক অবসাদের কথাও জানা ছিল না কারও। আত্মহত্যার কথা মানতে নারাজ তাঁরা। জুনিয়র চিকিৎসকদের দাবি, জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে তদন্ত করতে হবে। ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে ময়নাতদন্ত করতে হবে ও ভিডিয়োগ্রাফি করতে হবে বলে দাবি জানাচ্ছেন তাঁরা। সূত্রের খবর চারতলার সেমিনার রুমের মধ্যে কোনও সিসিটিভি ছিল না। তবে লনে সিসি ক্যামেরা আছে। তার ফুটেজ দেখে আসল তথ্য জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।