বর্ষায় খান তুলসির চা

তুলসি গাছের ঔষধি গুণ প্রায় সকলেরই জানা। রোগ সারাতে অনেকেই সকালে তুলসি পাতা চিবিয়ে খান। আবার অনেকে বাচ্চাদের জ্বর-সর্দি থেকে রক্ষা করতে তুলসি পাতার রস ও মধু একসঙ্গে মিশিয়ে খাইয়ে থাকেন। সত্য়ি বলতে তুলসির আয়ুর্বেদিক গুণের কোনও বিকল্প নেই।

বর্ষার সময় তুলসি পাতার রস দিয়ে তৈরি চা অত্যন্ত কার্যকরী। রোদ-বৃষ্টিতে কাকভেজা হয়ে প্রতিদিনই বাড়িতে ফিরছেন? তারপরই গলা ব্যথা, মাথা যন্ত্রণা, নাক দিয়ে সর্দি পড়া, জ্বর জ্বর ভাব, খুসখুসে কাশির সম্ভাবনা তৈরি হয়। বর্ষার বৃষ্টিতে ভেজার পরই অনেকেই ভাইরাল ফিভারের কোপে পড়ছেন। হাতের কাছে সর্বশ্রেষ্ঠ ঘরোয়া টোটকায় যদি রোগভোগ থেকে মুক্তি পেতে চান , তাহলে তুলসির চা হল মোক্ষম দাওয়াই।

ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে শরীর ফিট রাখা বেশ চ্যালেঞ্জের। অ্যালার্জি, ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায় দ্বিগুণ। বৃষ্টির দিনে হার্বাল চায়ে চুমুক দিলে মন-প্রাণ সবটাই জুড়িয়ে যায়। তবে কোন হার্বাল কোন রোগের জন্য উপযুক্ত তা জানেন না অনেকেই।

এখানে বলে রাখা ভাল, বর্ষার দিন তুলসির চা-ই হল একমাত্র স্বাস্থ্যকর সঙ্গী। এর পুষ্টির গুণ রয়েছে হাজারো। ফিট থাকার পাশাপাশি শরীরকে হাইড্রেটিং রাখতে ও সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করার সেরা দাওয়াই হল এই তুলসীর চা। বর্ষার সময় তুলসির চা খাওয়ার সবথেক বড় কারণ হল, তুলসিতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। এতে প্রদাহ-বিরোধী বৈশিষ্ট্য থাকায় শরীরে রোগ প্রতিরোধ প্রক্রিয়াকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করে। স্যাঁতসেঁতে, আর্দ্র আবহাওয়ায় সাধারণ সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে আরও শক্তিশালী করতে এই হার্বাল চায়ের কোনও তুলনা হয় না।

তুলসিতে থাকা অপরিহার্য তেলে এক্সপেক্টোরেন্ট ও ডিকনজেস্ট্যান্ট প্রভাব রয়েছে। শ্বাসকষ্ট, কাশি ও সাইনাসের সমস্যাগুলি উপশম করতে সাহায্য করে। আবহাওয়ার পরিবর্তনের কারণে শারীরিক সমস্যাগুলি উবে যায় এক নিমেষের মধ্যে।

বর্ষার সময় শুধু শারীরিক অসুস্থতাই নয়, মানসিক চাপের মাত্রাও বেড়ে যায়। এই হার্বাল চায়ে রয়েছে অ্যাডাপ্টোজেন গুণ, যা স্ট্রেসকে হ্রাস করতে সাহায্য করে। সকালে গরম গরম তুলসি চায়ের এক চুমুক দিলেই আরামের অনুভূতি জাগবে সারা শরীরে। সারাদিন মন ও শরীর চাঙ্গা রাখতেও এই চায়ের জুড়ি মেলা ভার।

বর্ষার বৃষ্টির কারণে কখনও কখনও হজমের সমস্যা হতে পারে। হামেশাই এই সময় বদহজম বা পেট ফোলার সমস্যা দেখা যায়। সামগ্রিক অন্ত্রের স্বাস্থ্যকে উন্নত করতে সাহায্য করে এই ভেষজ চা। গ্যাস, ফোলাভাব ও বদহজম কমাতে সাহায্য বৃষ্টির দিনে এই চা খেতে পারেন রোজ।

বর্ষা মৌসুমে অতিরিক্ত ঘাম হলে তুলসির চায়ের কাপে চমুক দিতে পারেন। শরীরকে হাইড্রেট রাখতে ও ইলেক্টোলাইট ভারসাম্য বজায় রাখতেও সাহায্য করে এই ভেষজ চা। সমাগ্রিকভাবে শরীরকে তরতাজা রাখতে ও ফিট রাখতে এই চা আপনি সকালে খালি পেটে খেতে পারেন। ফল মিলবে হাতেনাতে।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

six − three =