রাম পুজোর আয়োজন করা হয়েছে বাংলার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়েও। দেখানো হবে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানও। গান্ধি ভবনের সামনে দুপুর ১২টা ৩০ থেকে স্ক্রিনিং হওয়ার কথা রয়েছে। ইতিমধ্যেই এ নিয়ে একটি পোস্টার ঘুরতে দেখা যাচ্ছে সোশ্য়াল পাড়ায়। সেখানে যদিও উদ্য়োক্তা হিসাবে কোনও ব্যক্তি বা সংগঠনের নাম নেই। আয়োজক হিসাবে লেখা রয়েছে ‘জেইউ স্টুডেন্টস’। যা নিয়ে দানা বেঁধেছে বিতর্ক। যদিও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছে তাঁরা এখনও পর্যন্ত এ বিষয়ে কিছু জানেন না। এই প্রসঙ্গে এসএফআই নেত্রী আফরিন জানান, ‘যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্ম নিরপেক্ষ মনোভাবের পড়ুয়ারা বেশি। একজন ছাত্রের উদ্যোগে এই স্ক্রিনিং হওয়ার কথা। ধর্মীয় উস্কানি দেওয়া হচ্ছে। এটা যাদবপুরের সংস্কৃতি নয়। বিভাজনমূলক রাজনীতি যাদবপুরে চলবে না। আমরা যতটুকু জানি, কর্তৃপক্ষও এর অনুমতি দেয়নি। ছাত্রছাত্রীরা বয়কট করবে।’
এদিকে এই প্রসঙ্গে এবিভিপি নেতা দেবাঞ্জন পালের অবস্থান একেবারে ১৮০ ডিগ্রিতে। তিনি বামেদের কাঠগড়ায় তুলে বলেন, ‘যাদবপুরে র্যাগিং করা কিছু ছাত্রছাত্রী রাম মন্দিরের প্রাণ প্রতিষ্ঠার স্ক্রিনিং আটকাতে চাইছে। রাম মন্দির শুধু হিন্দু নয়, গোটা দেশের আবেগ। সবাই রাম মন্দিরের জয়গান করছে। সেখানে র্যাগিং করা যাদবপুরের কয়েকজন কম বয়সী ছেলে স্ক্রিনিং আটকাতে পারবে না।’
তবে এই প্রসঙ্গে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেত্রী রাজন্য হালদারের গলায় মেলে হাজারো প্রশ্ন। প্রশ্ন তোলেন, বামেদের ভূমিকা নিয়েও। স্পষ্ট জানান, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় প্রগতিশিলতার কথা বলে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় একটি ধর্মনিরপেক্ষ ক্যাম্পাস। সেখানে ধর্মীয় উস্কানির কোনও স্থান নেই। এই স্ক্রিনিংটা হওয়া উচিত নয়। আর এখানেই রাজন্যর প্রশ্ন, বাম ছাত্র সংগঠনগুলি এত উদাসীন কেন তা নিয়েও। সব বিষয়ে যারা আন্দোলন করে, তারা এখন রাস্তায় কোথায় সে ব্যাপারেও।
এদিকে এ ব্যাপারে কড়া প্রতিক্রিয়া দিতে দেখা গেছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতিকেও। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক পার্থ প্রতিম রায় ইতিমধ্যে এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। সেখানে কর্তৃপক্ষকে দেওয়া আবেদনে লেখা হয়েছে, ‘দেশপ্রেমের আদর্শ নিয়ে প্রতিষ্ঠিত এই প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকেই ধর্মনিরপেক্ষ শিক্ষার আদর্শকেই বহন করছে। আমরা চাই এমন কোনো ঘটনা যাতে ক্যাম্পাসে সেদিন না ঘটে যা শান্তি-সম্প্রীতি-সৌহার্দ্যের পরিবেশ বিঘ্নিত করে।’