সেন্ট্রাল ভিনাস লাইন ক্যাথিটার নিয়ে সরকারি হাসপাতালে দুর্নীতির অভিযোগ। অভিযোগে জানানো হয়েছে, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ, এসএসকেএম, টালিগঞ্জ এমআর বাঙ্গুর হাসপাতাল, বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ সহ বিভিন্ন হাসপাতালে নিম্নমানের ক্যাথিটার ব্যবহার করা হয়েছে। এই প্রসঙ্গে বলে রাখা শ্রেয়, ওপেন হার্ট সার্জারি, প্রোস্টেট সহ বিভিন্ন বড় এবং জটিল অস্ত্রোপচারে রোগীর গলা বা কুঁচকি দিয়ে চ্যানেল তৈরি করে সেন্ট্রাল ভিনাস লাইন ক্যাথিটার ঢুকিয়ে ওষুধ দেওয়া হয়।
একটি আন্তর্জাতিক চিকিৎসা সামগ্রী নির্মাণ সংস্থা স্বাস্থ্য দফতরে ওই ক্যাথিটার সরবরাহের জন্য দরপত্রের মাধ্যমে মনোনীত হয়েছিল। তাদের ক্যাথিটারের বদলে কলকাতার হাতিবাগান এলাকার এক ডিস্ট্রিবিউটর সংস্থা মাসের পর মাস স্থানীয় সংস্থার নিম্নমানের ক্যাথিটার সরবরাহ করে বলে অভিযোগ।
তথ্য় বলছে, একটি ক্যাথিটারের জন্য রাজ্য দিয়েছে ৪১৭৭ টাকা। অন্যদিকে খোলা বাজারে এই নিম্নমানের ক্যাথিটারের মূল্য দেড় হাজার টাকা।
অভিযোগ, মাস ছয়েক ধরে অস্ত্রোপচারের সময়ে রোগীর ধমনীতে ওই ক্যাথিটার ঢোকাতে গিয়ে সমস্যায় পড়েন চিকিৎসকেরা। অনেক সময় ধমনীর মধ্যে ক্যাথিটার জট পাকিয়ে গিয়েছে, রক্তক্ষরণ শুরু হয় বা রক্ত জমাট বেঁধে গিয়ে রোগীর অবস্থা আরও আশঙ্কাজনক হয়েছে। এই ঘটনায় কার্ডিয়োথোরাসিক সার্জারি বিভাগ, অ্যানেস্থেশিয়া বিভাগ, জেনারেল সার্জারি, ইউরোলজি বিভাগের চিকিৎসকেরা কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ জানান।
এরপর কলকাতা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ গোটা বিষয়টি স্বাস্থ্য ভবনে জানানো হয়। স্বাস্থ্য দফতর একদিকে তদন্ত শুরু করেছে। মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষের নজরে হাসপাতালের স্টোর ডিপার্টমেন্ট। সেখানকার কর্মীরা, জড়িত থাকতে পারে বলে সন্দেহ। সূত্রে খবর, এই ঘটনায় মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ ৯ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। মেডিক্যাল কলেজের ডেপুটি সুপার অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপার নার্সিং সুপার, ফরেনসিক মেডিসিন, কার্ডিও থোরাসিক সার্জারি, জেনারেল সার্জারি ইউরোলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধানদের নিয়ে তদন্ত কমিটি। এই তদন্ত কমিটি ১৪ দিনের মধ্যে রিপোর্ট জমা দেবে বলে জানা যাচ্ছে।
অন্যদিকে অভিযুক্ত সংস্থা অভিযোগ স্বীকার করেছে। প্রকাশ সার্জিক্যাল নামে হাতিবাগানের সংস্থা। সংস্থার কর্ণধার প্রকাশ বসু ঘটনার কথা স্বীকার করেছেন। তার দাবি তিনি অসুস্থ থাকায় সংস্থার কর্মীদের ভুলে এই ঘটনা ঘটেছে। খুব দ্রুত ভুল সংশোধন করা হবে।