একের পর এক দুর্নীতির অভিযোগ আর জি করে। সরকারি চিকিৎসকদেরও বদলির জন্য দিতে হয় টাকা। এমন অভিযোগ জানিয়ে দুটি চিঠি লিখেছেন আরজি করের প্রাক্তন নন মেডিক্যাল ডেপুটি সুপার আখতার আলি। যার মধ্যে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে রাজ্য পুলিশের দুর্নীতি দমন শাখায়, অন্যটি রাজ্য ভিজিল্যান্স কমিশনে পাঠানো হয়েছে। বদলি দুর্নীতির মাস্টার মাইন্ড হিসেবে আর জি করের অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের নাম সামনে এনেছেন আখতার আলি। শুধু সন্দীপ ঘোষই নন, আখতার আলির নিশানায় রয়েছেন স্বাস্থ্যশিক্ষা বিভাগের প্রাক্তন অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর পদে কর্মরত এক মহিলাও। এই প্রসঙ্গে আখতার আলি জানান,’সন্দীপ ঘোষের কথা কেউ না শুনলে তাঁকে অবৈধভাবে বদলি করে দেওয়া হত। সেই লিস্ট তৈরি হত আরজি করেই।’ স্বাস্থ্যশিক্ষা বিভাগের প্রাক্তন অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টরের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে তিনি এও জানান, ‘তনুশ্রী মণ্ডলকে গাড়ি পাঠানো হত। তিনি এলে ২-৩ ঘণ্টা ঘর বন্ধ করে আলোচনা চলত প্রিন্সিপ্যালের ঘরে। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে বদলির নির্দেশিকা বের করা হতো।’ পাশাপাশি এও জানিয়েছেন,সন্দীপ ঘোষের সঙ্গে ঠিক মতো ‘ডিল’ হলে চিকিৎসকদের ভাল জায়গা বেছে পোস্টিং দেওয়া হত।
এই ঘটনায় সন্দীপ ঘোষের কোনও বক্তব্য পাওয়া না গেলেও ওই প্রাক্তন মহিলা আধিকারিক অব্শ্য জানিয়েছেন, ‘স্বাস্থ্য ভবনে দীর্ঘ ১০ বছর প্রশাসনিক পদে কাজ করার সুবাদে শুধু সুনাম অর্জন করেছি। টাকার জন্য কোনও দিন কিছু করিনি। স্বাস্থ্য শিক্ষায় চিকিৎসকদের বদলির চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেন স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিকর্তা দেবাশিস ভট্টাচার্য এবং স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগম। এখানে টাকার লেনদেনের প্রশ্ন আসে কী ভাবে! আমার সময়কালে বদলি সংক্রান্ত সব নথি আমার কাছে রয়েছে। আখতার আলি পুরো স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে বদনাম করছেন।’
এর আগে স্বাস্থ্য দপ্তরের এই বদলি নীতিকে কাঠগড়ায় তুলে আত্মঘাতী হয়েছিলেন চিকিৎসক অবন্তিকা ভট্টাচার্য। গত মে মাসে রাজ্যের স্বাস্থ্যক্ষেত্রে টাকার বিনিময়ে বদলির অভিযোগের কথা বলতে শোনা গিয়েছিল তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন এবং তৃণমূল বিধায়ক নির্মল মাজিকেও। এদিকে এই ঘটনায় ইডি ও সিবিআই দিয়ে তদন্তের আর্জি জানাচ্ছেন বিরোধী সংগঠনগুলি।