ফের পুলিশের কর্মদক্ষতা নিয়ে উঠে গেল প্রশ্ন। প্রোমোটার পেটানোর অভিযোগ উঠেছিল বিধাননগর পৌরনিগমের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর সমরেশ চক্রবর্তীর বিরদ্ধে। এদিকে এই ঘটনার ৬০ দিন পরও। ফলে তাকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। এদিকে চুপিচুপি জামিন নিয়ে নেন সেই কাউন্সিলর। অথচ, তাঁর খোঁজে উত্তরবঙ্গের একাধিক জেলাতেও তল্লাশি চালায় পুলিশ। তল্লাশি চালানো হয় মন্দারমনি, এমনকি ভিন রাজ্যেও।
প্রসঙ্গত, গত বছর ১৫ ডিসেম্বর বাগুইআটিতে প্রোমোটার কিশোর হালদারকে মারধরের অভিযোগ ওঠে। অভিযোগ, তাঁর কাছ থেকে ৩০ লক্ষ টাকা তোলা দাবি করা হয়। তোলার টাকা না পেয়ে তাঁকে বন্দুকের বাঁট দিয়ে মেরে রক্তাক্ত করে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে কাউন্সিলরের সমরেশ ও তাঁর অনুগামীদের বিরুদ্ধে। তিনি বিধাননগরের কাউন্সিলর সমরেশ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। এরপর ১৭ তারিখ পুলিশ সমরেশের বাড়িতেও হানা দেয়। কিন্তু বাড়িতে তাঁর খোঁজ পাওয়া যায়নি। তাঁর বাড়িতে নোটিস টাঙানো হয়। বলা হয়, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তদন্তে সহযোগিতা করতে হবে সমরেশকে। কিন্তু তারপর সমরেশের টিকিও খুঁজে পায়নি পুলিশ।
১৫ ডিসেম্বর বাগুইআটির প্রোমোটার কিশোর হালদারকে পেটানোর অভিযোগ ওঠে। দেখা গেল, ১৫ ফেব্রুয়ারি ঘটনায় সমরেশ-সহ চার অভিযুক্তের জামিন হয়। তার আগে ঘটনায় তিন অভিযুক্তের জামিন পেয়ে যায়। আক্রান্ত প্রমোটার এই ঘটনায় পুলিশের ওপর যে বেশ হতাশ তা ধরা পড়ল তাঁর বক্তব্যে। তিনি স্পষ্টই জানান, ‘আমি ২ মাসে পুলিশের কাছে মিনিমাম ৫০ বার গিয়েছি। প্রতিবারই পুলিশ আমাকে আশ্বস্ত করেছে, ধরা পড়বে। হাইকোর্টে মামলা করবে। হাইকোর্টও তাই নির্দেশ দিয়েছে। আসলে পুলিশ ধরেইনি ওকে। আইনশৃঙ্খলা বলে কী রয়েছে, সেটা তো বুঝতেই পারছেন। প্রভাবশালীর হাত মাথায় রয়েছে বলেই ধরেনি পুলিশ। নাহলে তো পুলিশের ট্রান্সফার হয়ে যাবে।’ এই প্রসঙ্গে এও ঠিক যে, ঘটনার পর থেকেই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছিলেন আক্রান্ত প্রোমোটার। বারবার প্রশাসনের দ্বারস্থ হন, পুলিশ যাতে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে। কিন্তু অভিযুক্তরা গ্রেফতার না হওয়ায় খুনেরও আশঙ্কা করেছিলেন তিনি। এবার তাঁর সেই আশঙ্কা আরও বাড়ল বলেই জানান। স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনায় কটাক্ষ করে বিজেপি। বিজেপি নেতা জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘দুর্নীতির ত্রিভুজে তৃণমূল শিবিরে একে অপরের পরিপূরক। পুলিশ তৃণমূলের বোঝাপড়ায় বিচার চাইলে পাবেন না, এই ঘটনা তারই প্রমাণ।’