নির্বাচনী আবহে উত্তর কলকাতায় ফের সামনে এল তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ঘটনা। মানিকতলা বাজার এলাকায় ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মীনাক্ষী গুপ্তের বিরুদ্ধে পড়ল পোস্টার। এই ঘটনায় কাউন্সিলর স্বয়ং মেনে নিয়েছেন তাঁর দলের একাংশই চক্রান্ত করে এই পোস্টার মেরেছে এলাকায়। এদিকে পোস্টারে যা লেখা হয়েছে তাতে প্রোমোটারদের সঙ্গে অসাধু যোগাযোগ রয়েছে কাউন্সিলরের, এমনটাই অভিযোগ। সাধারণত এই ধরনের পোস্টার নজরে এলে শাসকদলের তরফে বিরোধীদের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তোলা হয়। তবে ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সরাসরি অভিযোগ আনলেন দলেরই কর্মীদের একাংশের বিরুদ্ধে।
এই প্রসঙ্গে মীনাক্ষী গুপ্ত এও জানান, ‘যাদের তুষ্ট করতে পারছি না, যাদের অন্যায় কাজ সমর্থন করতে পারছি না, আমার দলের সেই লোকজনই এই ধরনের পোস্টার রাতের অন্ধকারে দিচ্ছে। বিরোধী দল হলে বলতাম, রাজনৈতিক চক্রান্ত। কিন্তু এটা সম্পূর্ণ আমার দলের একাংশের কাজ। রাতের অন্ধকারে আমার এলাকায় বিভিন্ন অংশে এভাবে পোস্টার মেরেছে।’
এদিকে কাউন্সিলর মীনাক্ষী গুপ্ত বলেন, ‘বিরোধী দল করলে আমি ভাবতাম আমার ভুল আছে, শুধরে নিতাম। কিন্তু আমাদের দলের লোকেরাই এটা করেছে। আমি ওদের দাবি পূরণ করতে পারিনি। ওদের পদের দাবি, আমি সেটা দিতে পারিনি। তাই এসব করেছে। করুক, আমার কিছু আসে যায় না। ২-৪ জনের কথা আমি কেন শুনব? এরা গরিবদের অত্যাচার করে, টাকা তোলে। আমি এসবে থাকি না বলেই এটা করেছে।’ কিন্তু বারবার দলের লোক বললেও তাঁরা কারা, তা কিন্তু খোলসা করতে চাননি কাউন্সিলর। শুধু বলেন, যাঁদের চাহিদা বেশি, তাঁরা এসব করছে। এ প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা তাপস রায় বলেন, ‘মীনাক্ষী গুপ্তর সততা রয়েছে যে বলেনি বিজেপি পোস্টার দিয়েছে । এরকম গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব তৃণমূলের সব ওয়ার্ডে রয়েছে।’
কলকাতা উত্তরের বিভিন্ন অংশে এভাবেই দীর্ঘদিন ধরে চলেছে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের নানা ঘটনা। যে কারণে দীর্ঘকাল যাবৎ মানিকলা বিধানসভায় যে নির্বাচন করা যায়নি তার একটি বড় কারণ এই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বলেই মনে করেন অনেকে। এবার এই অন্তর্কলহই সামনে চলে এল লোকসভা নির্বাচনের ঠিক আগে। ফলে উত্তর কলকাতায় শাসকদলের অস্বস্তি যে বাড়ল তাতে সন্দেহ নেই।