পিএফ না মেলায় ইডিকে তদন্তের নির্দেশ আদালতের

প্রভিডেন্ট ফান্ডের (পিএফ) টাকা না পেয়ে মামলা করেছিলেন ডেলটা লিমিটেড ও ওলিশা লিমিটেড নামে ওই দুই সংস্থার অবসর নেওয়া কয়েকজন কর্মী। তাঁদের দাবি, প্রায় ২১ কোটি টাকার প্রভিডেন্ট ফান্ড বকেয়া রয়েছে। একইসঙ্গে অভিযোগ, সারদার মতো চিটফান্ডের কায়দায় ‘ভুয়ো’ ডিরেক্টর নিয়োগ করা হয়েছে দু’টি চটকলে। যার সূত্রে অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, চিটফান্ডের ছায়া কি এ বার চটকলে! বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বৃহস্পতিবারই তদন্ত শুরুর নির্দেশ দেন ইডি-কে। এবারএই মামলায় আদালতের নির্দেশ সংস্থার পাঁচ ডিরেক্টরকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তদন্তে নামতে হবে। হাইকোর্টের আগের নির্দেশে শুক্রবার পাঁচ ডিরেক্টরও আদালতে হাজির হন। তাঁদের সঙ্গে কথা বলে শেরিফের অফিসে বসিয়ে রাখার নির্দেশ দেয় কোর্ট। আদালতের আরও নির্দেশ, প্রাথমিক অনুসন্ধান বা জিজ্ঞাসাবাদ করে যে তথ্য পাওয়া যাবে, সেটা এসএফআই-ও কে জানাবে ইডি। সেই অনুযায়ী ইডি পদক্ষেপ করবে। বিচারপতির আশঙ্কা, এই গোলমালের পিছনে পাটশিল্পের বড় কিছু মাথা জড়িত থাকতে পারেন। বিচারপতির বক্তব্য, ‘তাঁরা আমাকে বদলিও করতে পারেন। তবু আমি চাই আসল অপরাধীরা ধরা পড়ুক।’

এদিকে আদালত সূত্রে খবর, শুক্রবার ডেলটা লিমিটেড ও ওলিশা লিমিটেড নামে ওই দুই সংস্থার পাঁচ ডিরেক্টরকে এ দিন আদালতে হাজিরার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি। সেই মতোই এদিন হাজির হন তাঁরা। কথা বলার পর বিচারপতি জানান,‘দুই সংস্থা সম্পর্কে এই পাঁচ ডিরেক্টর প্রায় কিছুই জানেন না। সংস্থা সম্পর্কেও তেমন ধারণা নেই তাঁদের।’ সংস্থার আয়ব্যয় বা কার্যপ্রণালী নিয়েও বিচারপতির কোনও প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেননি এঁরা। আর এই প্রসঙ্গে আদালতের বক্তব্য, এঁরা সবাই জুট মিলের সুপারভাইজ়ার থেকে ডিরেক্টর হয়েছেন। এগুলো প্রাইভেট লিমিটেড, নাকি পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি, সেটুকুও এই পাঁচজন জানেন না। শেষ ত্রৈমাসিকে কত লাভ-লোকসান হয়েছে, সে সম্পর্কেও এঁদের ধারণা নেই বলে মন্তব্য করেন বিচারপতি। তাঁর পর্যবেক্ষণ, এঁদের কে ডিরেক্টর হওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন, সেটাও তাঁরা জানেন না।

এরই প্রেক্ষিতে আদালতের ধারণা, এই পাঁচ জন এখনও কোনও অপরাধ করেননি। তবে জিজ্ঞাসাবাদ প্রয়োজন। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের আশঙ্কা, এঁদের সামনে রেখে কেউ বা কারা পিছন থেকে কলকাঠি নাড়াচাড়া করছে। এঁদের বলির পাঁঠা করা হচ্ছে। সঙ্গে বিচারপতি এও বলেন, ‘এঁরা চাইলে পদত্যাগ করতে পারেন। এখনও এঁদের গ্রেফতার করার প্রয়োজন নেই।’ এঁদের যাতে সম্মানহানি না হয়, এজলাসে উপস্থিত শেরিফের প্রতিনিধিকে সে ব্যাপারেও নির্দেশ দেন বিচারপতি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

four × 1 =