পুরুলিয়ার ঝালদা পুরসভা নিয়ে জটিলতা কেটেও যেন কাটছে না। এবার ফের ঝালদা পুরসভায় ভোট করানোর নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। সঙ্গে এও নির্দেশ দেওয়া হয়, আগামী ৮ ডিসেম্বরের মধ্যে ঝালদায় আস্থা ভোট করাতে হবে। বৃহস্পতিবার এমনই নির্দেশ দেন হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহা। সঙ্গে এও জানান, জেলাশাসকের উপস্থিতিতে এই ভোট করাতে হবে। তবে এই ভোট প্রক্রিয়ার জন্য পুরসভার কাজের প্রক্রিয়া ব্যাহত যাতে না হয় এদিন সে নির্দেশও দিতে দেখা যায় বিচারপতি অমৃতা সিনহাকে।
প্রসঙ্গত, বর্তমান পুরপ্রধান শীলা চট্টোপাধ্যায়ের অপসারণ চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন কংগ্রেস কাউন্সিলর পূর্ণিমা কান্দু। এই ইস্যুতে গত ২৩ নভেম্বর জোড়া মামলা হয় কলকাতা হাই কোর্টে। তাঁর হয়ে মামলা লড়েছেন কংগ্রেস নেতা তথা আইনজীবী কৌস্তভ বাগচি। একই দাবিতে আরেকটি মামলা দায়ের করেছেন ৫ তৃণমূল কাউন্সিলরও। দুটি পৃথক মামলা দায়ের হয় হাইকোর্টে।
আদালত সূত্রে খবর, এই মামলার শুনানি শুক্রবারহওয়ার কথা ছিল। তবে একদিন আগেই হয় শুনানি। এরপরই বিচারপতি অমৃতা সিনহার নির্দেশ, আগামী ৮ ডিসেম্বরের মধ্যে আস্থা ভোট করাতে হবে জেলাশাসকের উপস্থিতিতে। ১২ ডিসেম্বরের মধ্যে আদালতে সমস্ত রিপোর্ট জমা দিতে হবে। তার মাঝে পুরসভার কাজ যেমন চলছে, তেমনই চলবে। এনিয়ে আবেদনকারীদের আইনজীবী কৌস্তভ বাগচি এদিন জানান, ‘বিপ্লব কয়াল ও পূর্ণিমা কান্দুর হয়ে আমি আবেদন জানিয়েছিলাম ফ্লোর টেস্টের জন্য। কারণ, এই মুহূর্তে পুরপ্রধান শীলা চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই। সবদিক খতিয়ে দেখে মহামান্য বিচারপতি জানান, আগামী ৮ ডিসেম্বরের মধ্যে আস্থা ভোট করাতে হবে। ১২ তারিখের মধ্যে সমস্ত রিপোর্ট দিতে হবে আদালতে।’
এখানে বলে রাখা শ্রেয়, ঝালদা পুরসভা নিয়ে আইনি জটিলতা দীর্ঘদিনের। তার মাঝে মাস তিনেক আগে পুরপ্রধান শীলা চট্টোপাধ্যায়-সহ চার কংগ্রেস কাউন্সিলর তৃণমূলে যোগ দেন। দলবদলকারীদের মধ্যে ছিলেন নিহত তপন কান্দুর ভাইপো মিঠুন, বিজয় কান্দু, পিন্টু চন্দ্র ও সোমনাথ কর্মকার। এই দলবদলের পর ঝালদা পুরসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারায় কংগ্রেস। এর পর সেপ্টেম্বরের ১৪ তারিখ পুরসভার উপ পুরপ্রধান পূর্ণিমা কান্দু পদ থেকে ইস্তফা দেন। পদত্যাগপত্রে তিনি নৈতিক কারণের কথা উল্লেখ করেছিলেন। তার দু মাস পর পুরপ্রধান শীলা চট্টোপাধ্যায়কে অপসারণের দাবিতে হাইকোর্টে জোড়া মামলা দায়ের হয় এবং ফের আস্থা ভোটের নির্দেশ হল।