নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় মুখ্য়সচিবকে ভর্ৎসনা আদালতের

নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় মুখ্যসচিবের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচি। বৃহস্পতিবার রাজ্যের মুখ্যসচিব বিপি গোপালিকাকে কার্যত তুলোধনা করতে দেখা যায় বিচারপতি বাগচিকে।  এদিন রাজ্যের তরফে আদালতে সওয়াল করার সময় জানানো হয়, ‘আমদের সাত সপ্তাহ সময় লাগবে।’ এরই প্রত্যুত্তরে বিচারপতি জয়মাল্য বাগচি জানান, ‘খুব খারাপ। এটা ইচ্ছাকৃত দেরি।’ শুধু তাই নয়, এরপরই বিচারপতিকে ক্ষুব্ধ হয়ে প্রশ্ন করতে দেখা যায়, ‘আদালত অবমাননার কৌশল নেওয়া হচ্ছে কি না তা নিয়ে। সঙ্গে হুঁশিয়ারির সুরে এও জানান,  ‘আমাদের নির্দেশের অবমাননা এটা। এই মামলার দ্রুত হওয়ার গুরুত্ব বুঝুন। আপনি এজি হয়ে যদি না বোঝেন এবং আদালতের কথা না শোনেন, তাহলে বিচারব্যবস্থার অপমান। সিরিয়াস ম্যাটার।’ এখানেই শেষ নয়, এরপর রাজ্যের মুখ্যসচিবের উদ্দেশে বিচারপতি এও বলেন, ‘এটা কোনও সাধারণ ল্যাথার্জি হতে পারে না। গণতান্ত্রিক পরিকাঠামোয় এটা চলে না। গণতান্ত্রিক পরিকাঠামোয় বিশ্বাস থাকে।’

এদিকে এদিন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আইনজীবীও আদালতে সওয়াল করেন। ২০২২ সালে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার করা হয় পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়কে। তারপর একে একে গ্রেফতার করা হয় মধ্যশিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়, এসএসসি-র প্রাক্তন চেয়ারম্যান সুবীরেশ ভট্টাচার্য, প্রাক্তন সচিব অশোককুমার সাহা-সহ একাধিক সরকারি আধিকারিককে। কিন্তু তাঁদের বিরুদ্ধে বিচার শুরু করতে গেলে রাজ্য সরকারের অনুমোদনের প্রয়োজন হয়। ২০২২ সালের নভেম্বর মসে মুখ্যসচিবের কাছ থেকে অনুমোদন চাওয়া হয়। কিন্তু আজও পর্যন্ত সেই অনুমোদন দেয়নি রাজ্য।

এদিন বিচারপতি এই প্রসঙ্গে এদিন এও বলেন, ‘আমরা জানমতাম আপনারা খুব ভালো বন্ধু। আপনার বন্ধুরা আপনাকে রক্ষা করছে। শেষ দিনেও যদি রাজ্য অনুমোদন না দেয় তাহলেও অবাক হব না। এসব স্ট্র‍্যটেজি খুব ভালো বুঝি।’  এরই পাশাপাশি এদিন নিয়োগ দুর্নীতি মামলার শুনানিতে বিচারপতি এক তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্যও করতে শোনা যায়। বলেন, ‘পার্থ মন্ত্রী না থাকলেও তার ক্ষমতা বেশ বুঝতে পারছি আদালতে বসে।’  সঙ্গে এও জানান, ‘আপনি প্রভাবশালী ছিলেন। এতটাই প্রভাবশালি ক্রিমিনাল প্রক্রিয়ার ওপরেও প্রভাব বিস্তার করতে পারেন।’ এরই রেশ ধরে বিচারপতির মন্তব্য, ‘এটা প্রতিষ্ঠানের ষড়যন্ত্র। মুখ্যসচিবের পেন উঠছে না? ভাবা যায় এমন অবস্থা! আমরা বেশ বুঝতে পারছি এর কারণ। আপনার যখন গোপন বন্ধু আছেন তারাই আপনার জামিনের ভাগ্য নির্ধারণ করবেন।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

two × one =