শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে এফআইআর করতে গেলে আদালতের অনুমতির প্রয়োজন নেই। বুধবারই এই এফআইআর করা যাবে কি না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল । প্রত্যুত্তরে কেন এফআইআর করা যাবে না তা নিয়ে প্রশ্নও তুলেছিলেন বিচারপতি আইপি মুখোপাধ্যায়। এরপর বৃহস্পতিবার স্পষ্ট জানিয়েই দিল এ হাইকোর্ট স্পষ্ট জানিয়ে দিল, বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে এফআইআর করতে গেলে আদালতের অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন নেই। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ বৃহস্পতিবার এই নির্দেশ দিয়েছে। তবে একইসঙ্গে আদালত এও জানিয়ে দিয়েছে, এফআইআর করার ক্ষেত্রে আগে অভিযোগ খতিয়ে দেখতে হবে। শুধুমাত্র বিরোধী দলনেতাকে হেনস্থা করার উদ্দেশ্যে যেন এফআইআর না করা হয়, সেটিও জানিয়ে দিয়েছেন বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায়। আদালত আরও জানিয়েছে, পুলিশ তার ক্ষমতা যেন যথাযথভাবে প্রয়োগ করে এবং সচেতনভাবে অভিযোগ খতিয়ে দেখে। তারপর যদি মনে হয়, অভিযোগের সত্যতা রয়েছে, সেক্ষেত্রে এফআইআর করার ক্ষেত্রে কোনও সমস্যা নেই।
উল্লেখ্য, এর আগে ২০২২-এ কলকাতা হাইকোর্টের রাজাশেখর মান্থার একক বেঞ্চের থেকে আইনি রক্ষাকবচ পেয়েছিলেন শুভেন্দু। বিরোধী দলনেতার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া ২৬টি এফআইআরের উপর স্থগিতাদেশ দেয় আদালত। ওই এফআইআরগুলি নিয়ে তদন্ত আর না এগোনোর জন্য বলেছিল হাইকোর্ট। একইসঙ্গে নতুন করে কোনও এফআইআর করার আগে আদালতের থেকে আগাম অনুমতি নিতে হবে বলেও নির্দেশ দিয়েছিল বিচারপতি মান্থার একক বেঞ্চ। সেই নির্দেশ চ্যালেঞ্জ করে রাজ্য ডিভিশন বেঞ্চে এমনকী সুপ্রিম কোর্টেও গিয়েছিল। ডিভিশন বেঞ্চ প্রথমে একক বেঞ্চের নির্দেশের উপর হস্তক্ষেপ করতে চায়নি। তাই রাজ্য শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়। কিন্তু সেই মামলা সুপ্রিম কোর্ট আবার হাইকোর্টেই ফিরিয়ে দিয়েছে। সেটি এখনও বিচারাধীন। এরই মধ্যে নতুন করে একটি জনস্বার্থ মামলা করেন সুমন সিং নামে এক আইনজীবী। বুধবার প্রধান বিচারপতি উপস্থিত না থাকায় জনস্বার্থ মামলাটি শোনে বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চে। সেই মামলায় বুধবারই বিচারপতি আইপি মুখোপাধ্যায়কে এ প্রশ্নও করতে দেখা যায় যে, ‘আদালত কোনও একটি নির্দেশের মাধ্যমে এফআইআর-এর উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে, তাহলে কি ১০ বছর পরেও কোনও অভিযোগ উঠলে সেই ব্যক্তির বিরুদ্ধে এফআইআর করা যাবে না?’ এরপর বৃহস্পতিবার এই মামলার শুনানিতে বিচারপতি জানিয়ে দেন, শুভেন্দুর বিরুদ্ধে এফআইআর করার ক্ষেত্রে পুলিশকে আগাম অনুমতি নিতে হবে না আদালত থেকে।
তবে পাশাপাশি এটাও জানানো হয়েছে যে, এফআইআর করা মানেই গ্রেফতারি নয়। গ্রেফতারির প্রয়োজন মনে করলে আদালতে আসতে হবে পুলিশকে, তাও এদিন জানিয়ে দেয় বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ।
এই জনস্বার্থ মামলার ক্ষেত্রে হাইকোর্টের তরফ থেকে এ নির্দেশও দেওয়া হয়েছে যে, অভিযোগ খতিয়ে দেখে পুলিশ একটি রিপোর্ট তৈরি করবে। তারপর সেই রিপোর্ট পাঠাবে পুলিশের ডিজিকে। ডিজি সেই রিপোর্ট আদালতে জমা দেবেন। তারপর আদালত যদি অনুমতি দেয়, কেবল তখনই গ্রেফতার করা যাবে শুভেন্দু অধিকারীকে।